১২ বছরেই মা, এখনও টাকা দিয়ে যেখানে স্ত্রী কেনা হয়
Image Source: Google |
বিশেষত দেশটির ক্রস রিভার রাজ্যের অবানলিকু অঞ্চলের বিসিভ গ্রামের আদিবাসীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়। উক্ত সম্প্রদায়ের নাম অনুসারে তাদের গ্রামের নামও বিসিভ দেয়া হয়েছে। প্রাদেশিক রাজধানী ক্যালাবার থেকে সড়কপথে সেখানে যেতে প্রায় আট ঘন্টা সময় লাগে। সম্প্রতি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তাদের ‘মানি ওয়াইফ’ বা 'স্ত্রী ক্রয়' প্রথার কথা প্রকাশিত হলে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে।
Image Source: Google |
অবুধা পর্বতের ছায়াতলে বেড়ে ওঠা এই গ্রামকে বলা হতো ঘুমন্ত গ্রাম। কিন্তু সেখানেই যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে এমন মর্মান্তিক দাসত্ব প্রথা। যেখানে কন্যাদের মাত্র ৫-৬ বছর বয়সে তাদের পিতা-মাতারা বয়জ্যেষ্ঠ কোনো পুরুষের সাথে বিয়ে দিয়ে দেন। মানবাধিকার কর্মীরা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র টাকা-পয়সার লোভে পিতা-মাতারা তাদের সন্তানদেরকে এমন অন্ধকার পথে ঠেলে দিচ্ছেন। যদিও আদিবাসী নেতারা বিষয়টি এখন আর চালু নেই মর্মে দাবি করছেন, কিন্তু সরেজমিনে দেখা গেছে, স্বয়ং গোত্রপতিরাই এখনও একাধিক অপ্রাপ্তবয়স্কা স্ত্রী গ্রহণ করে বসে আছেন।
Image Source: Google |
পাঁচ বছর বয়সী মিরাকেলের ‘মানি ম্যারিজ’ সম্পন্ন হয়েছিল কিছুদিন আগে। বিয়ের পর তার উপর স্বামীর পৈশাচিক যৌন নির্যাতন নেমে এসেছিল। কিন্তু তার সৌভাগ্য; স্থানীয় একটি মিশনারি সংস্থার সহায়তায় তিনি তার স্বামীর হাত থেকে মুক্ত হতে পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি একটি মিশনারি সংস্থার সাথে বসবাস করছেন।
মিরাকেলের বিয়ের ঘটনাটি অনেক বেশি মর্মান্তিক। কেননা তার বড় বোনকেও সেই লোক স্বল্প বয়সে টাকার বিনিময়ে বিয়ে করেছিল। মিরাকেলের বিয়ের পর সেই বোনকে তালাক দিয়ে দেয় তার স্বামী। অর্থাৎ তাকে তার বড় বোনের সাথে ‘পরিবর্তন’ করে মাত্র। এক্ষেত্রে সেই স্বামীর অজুহাত, মিরাকেলের বড় বোন সন্তান উৎপাদনে অক্ষম, তাই মিরাকেলের পিতা-মাতাই তাকে তার বড় বোনের স্বামীর হাতে তুলে দেন।এরকম আরেক দুর্ভাগা যুবতীর নাম রোজ ইনিয়েতি। যদিও তিনি নয় বছর আগে তার কথিত ‘মানি হাজবেন্ডের’ হাত থেকে উদ্ধার হয়েছিলেন।
তবে বাস্তবতা ভিন্ন। উপরে উল্লেখিত ঘটনাগুলোই প্রমাণ করে যে, সেখানে এখনো টাকার বিনিময়ে বিয়ের প্রথা চালু আছে। আকোনাম রিচার্ড জানান, কিছুদিন আগেও তারা একাধিক মেয়েকে উদ্ধার করেছেন। তবে গণমাধ্যমের কল্যাণে ও মিশনারিদের তৎপরতায় বিসিভ আদিবাসীদের মধ্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এই নির্মম প্রথা বন্ধ হবে বলে আশা করাই যায়।
Post a Comment