ভয়ঙ্কর আগুনে জ্বলছে গোটা আমাজন, কিন্তু এই বিনাশের নেপথ্যে কী আছে জানেন?



Odd বাংলা ডেস্ক: সর্বগ্রাসী দাবালন এখন আন্তর্জাতিক মহলের চর্চার একটি অন্যতম বিষয়। এর অন্যতম কারণ হল, সাম্প্রতিক আমাজন দহন। আমাজনের বৃষ্টি অরণ্য সারা পৃথিবীর কাছে বিখ্যাত। শুধু বিখ্যাতই নয়, এই পৃথিবীর ফুসফুস হিসাবে পরিচিত এই আমাজন বৃষ্টি অরণ্য। তবে সেই ফুসফুসেই ধরা পড়ে ক্যান্সার!? গত তিন সপ্তাহ ধরে আমাজনের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল যেভাবে পুড়ছে, তাতে করে একথা বলাই যায় আগুনের সর্বগ্রাসী লেলিহান শিখা ঠিক যেন কর্কট রোগের মতোই গ্রাস করছে জীবকূলের ভবিষ্যত।


আমাজনের দাবানলের স্যাটেলাইট থেকে তোলা একটি ছবি, Image Source: Nasa
 পরিসংখ্যানের দিকে যদি তাকানো যায় তাহলে বলা যায় যে এবারের দহন ছাপিয়ে গিয়েছে পূর্বের সমস্ত রেকর্ড-কে। গত বছরের তুলনায় এবারের আমাজনের দহন প্রায় ৮৩ শতাংশ বেশি। আর ২০১৩ সালে হওয়া দাবানলের প্রায় দ্বিগুণ বেশি। জানলে অবাক হতে হয়, চলতি বছরে প্রায় ৭২৮৪৩ বার দাবানলের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, উপগ্রহ থেকেও ধরা পড়েছে আগুনের লেলিহান শিখা, কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়া। যে পৃথিবীর ফুসফুস এই ধরিত্রির জীবকূলকে ২০ শতাংশ অক্সিজেনের যোগান দেয়, সেই আমাজনের এই দহন -এর প্রভাব যে অনেকটা সুদুর প্রসারি হবে তাও কিন্তু ভাবাচ্ছে পরিবেশবিদদের। আর এর ফলে বিশ্ব উষ্ণায়ন বাড়ার সম্ভাবনাই সবথেকে বেশি ভাবাচ্ছে বিজ্ঞানীদের।
কিন্তু কেন হয় এই দাবানল?- তার আগে জেনে রাখা ভাল যে, দাবানল দুই প্রকারের হয়, প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট। শুকনো বাতাসে আগুন লেগে জঙ্গলে দাবানলের ঘটনাই হল প্রাকৃতিক দাবানল। তবে মানুষ যখন নিজের কার্যসিদ্ধির জন্য জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দেয় তখন তাকে মনুষ্য সৃষ্ট দাবানল বলা হয়। প্রাকৃতিক দাবানলের থেকেও মনুষ্যসৃষ্ট দাবানল আরও বেশি ক্ষতিকারক কারণ এতে মানুষ নিজের হাতে করেই নিজের সর্বনাশ ডেকে নিয়ে আসে। আর এই আমাজনের দাবানলের ঘটনাকে একেবারেই প্রাকৃতিক দাবানল বলতে নারাজ পরিবেশবিদরা। 
আমাজনের আগুনে পুড়ে ছাই হচ্ছে গোটা উদ্ভিদ থেকে বন্যপ্রাণ সব, Image Source: Google

প্রসঙ্গত, প্রাকৃতিক পরিবেশের পাশাপাশি খনিজ পদার্থের সুবিশাল ভান্ডার রয়েছে এই আমাজনের অরণ্যে। আর সেই কারণেই খনিজ পদার্থ উত্তোলনের জন্য বিরাট বনাঞ্চলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আর এতে করেই প্রতি এক মিনিটে তিনটি ফুটবল মাঠের সমান বনাঞ্চল পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমাজনেও এমনটাই ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে পরিবেশবিদদের তরফে। তবে সময় এসেছে এই পরিস্থিতির উন্নতি সাধন ঘটানোর। মানুষ যখন ক্ষয়সাধন করেছে তেমনই মানুষেরই দায় বর্তায় এই ক্ষতি পূরণ করা।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.