"আমার ছেলে কীভাবে জঙ্গি হলো" বললেন লাদেনের মা
ওসামা বিন লাদেনের বয়স তখন সবে ২৬, Image Source: Google |
ওসামা বিন লাদেন মার্কিন নেভি সিলের সদস্যদের হাতে নিহত হওয়ার অনেক বছর পর তা মা আলিয়া ঘানেম প্রথমবারের মতো সংবাদমাধ্যমে ছেলেকে নিয়ে কথা বলেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এর সঙ্গে আলাপচারিতায় মা লাদেন সম্পর্কে বেশ কিছু অজানা তথ্য জানিয়েছেন।
তার বর্ণনায় উঠে এসেছে সিরিয়ায় কাটানো শৈশব থেকে শুরু করে আফগানিস্তানে সোভিয়েত রাশিয়ার বিরুদ্ধে তার মুজাহিদ জীবন। আর দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদক তুলে এনেছেন সৌদি আরবের যে আর্থসামাজিক ও ধর্মীয় পরিস্থিতির মধ্যে ওসামা উগ্রবাদে জড়িয়ে পড়েন।
আলিয়া ঘানেম ১৯৫০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে সৌদি আরবে আসেন। ১৯৫৭ সালে রিয়াদে জন্ম হয় ওসামার। তিন বছর পর ওসামার বাবার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় তার।
পরে সবে যাত্রা শুরু করা বিন লাদেন সাম্রাজ্যের এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা আল-আত্তাসকে বিয়ে করেন আলিয়া। ওসামার বাবা ৫৪ সন্তানের জনক হন। তার অন্তত ১১ জন স্ত্রী ছিলেন।
ক্যারাটেতে ব্ল্যাক বেল্ট পেয়েছিল ওসামা, Image Source: Google |
ওসামার মা জানান, সে যাদের সঙ্গে মিশেছিল তাদের একজন ছিল মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্য আবদুল্লাহ আজ্জাম। পরে এই ব্যক্তিকে সৌদি আরব থেকে নির্বাসিত করা হয়। কিন্তু ততদিনে সে ওসামার আধ্যাত্মিক পরামর্শকে পরিণত হয়েছে। ১৯৮০ দশকের শুরুতে ওসামা আফগানিস্তানে পাড়ি জমান রাশিয়ার দখলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। ওসামা জঙ্গি হয়ে উঠতে পারে এমন আশঙ্কা করেছিলেন কখনো এ প্রশ্নের জবাবে আলিয়া বলেন, আমার মাথায় এটা কখনো আসেনি।
যখন বুঝতে পারলেন ওসামা জঙ্গি হয়ে উঠেছিলেন তখন অনুভূতি কেমন ছিল জানতে চাইলে বলেন, আমরা খুব হতাশ হয়ে পড়ছিলাম। লাদেনের মা জানান, ১৯৯৯ সালে পরিবারের লোকজন ওসামার সঙ্গে সর্বশেষ সাক্ষাৎ করেছিল। ওই বছর কান্দাহারের কাছে একটি ঘাঁটিতে পরিবারের সদস্যরা দুবার গিয়েছিলেন।
তবে ওসামার সত্ভাই বলেন, ওসামার জঙ্গি জীবনের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন না মা। ৯/১১ হামলার ১৭ বছর পার হলেও হামলায় ওসামা জড়িত, তা এখনো মেনে নিতে পারেননি মা। আহমেদ বলেন, মা তাকে (ওসামা) খুব ভালোবাসতেন এবং তাকে দায়ী করতে চান না। তিনি পরিস্থিতিকে দায়ী করতে চান। তিনি শুধু ছেলের ভালো দিক সম্পর্কে জানেন। আমরা সবদিক দেখেছি। কিন্তু তিনি তার জিহাদি দিক সম্পর্কে জানেন না কিছুই।
নিউইয়র্ক থেকে প্রথম যখন হামলার খবর শুনেছিলেন ওই সময়ের কথা জানিয়ে আহমেদ বলেন, আমি খুব আঘাত পাই, স্তব্ধ হয়ে যাই। খুব অদ্ভুত ধরনের অনুভূতি ছিল। আমরা শুরু থেকেই, প্রথম ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই জানতাম (হামলায় ওসামা জড়িত)। ছোট থেকে বড় সবাই লজ্জিত ছিলাম। আমরা সবাই জানতাম আমাদের ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হবে। সব দেশ থেকে পরিবারের সদস্যরা সৌদি আরবে চলে এলো।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
Post a Comment