হাড়ের ভেতর নাকি স্বর্ণ আছে! তাই মানুষের হাত-পা কেটে নিচ্ছে মানুষই
Odd বাংলা ডেস্ক: ভাবুন তো আপনার দেহের হাড়ের ভেতরেই আছে সোনা। আর সে কারনেই আপনাকে কেউ অপহরণ করে আপনার হাত পা কেটে নিল। তাহলে? না ! আমার আপনার না হলেও আফ্রিকাতে বসবাসকারী শ্বেতী রোগীদের শরীরে নাকি সোনা (GOLD) আছে। আর তাই তাদের হাত পা কেটে নেওয়া হচ্ছে।
মাত্র ৮ বছর বয়সে ছেলেটির একটি হাত কেটে নিয়েছে দুষ্কৃতিরা, কারন তাদের বিশ্বাস তার হাড়ের ভেতর স্বর্ণ আছে, Image Source: Google |
গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আচমকাই খোঁজ মিলছিল না তানজানিয়ার বাসিন্দা, চার বছরের ছোট্ট মেয়ে পেন্ডো ইম্যানুয়েল নানডির। তার বাবা পুলিশে অভিযোগ জানাতে গেলে, উল্টে বাবাকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। দাবি করে, তিনি তাঁর মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছেন টাকার লোভে! কিন্তু কেন এক জন বাবা তাঁর মেয়েকে বিক্রি করবেন! কারণ তাঁর মেয়ে অ্যালবিনো। এবং এই অ্যালবিনিজ়মের কারণেই সে খুব সহজে শিকার হয়েছিল দুষ্কৃতীদের। তথাকথিত সভ্যতার আলো থেকে পিছিয়ে থাকা আফ্রিকার এই দেশগুলিতে এখনও অন্ধ বিশ্বাস আছে, অ্যালবিনো মানুষের হাড়ে নাকি সোনা আর নানা ঔষধি পদার্থ থাকে। তাই তাঁদের ধরে, অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কেটে, হাড় বার করে, তা দিয়ে তৈরি হয় ওষুধও! আর এই অন্ধ বিশ্বাসের কারণে, কখনও কখনও অপহরণের পরে হাত-পা কেটে তিলে তিলে মেরেও ফেলা হয় অ্যালবিনোদের। আর স্থানীয় ওষুধ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি হয়ে যায় তাঁদের দেহের নানা অংশ। গোপনে।
এ সব কুসংস্কার বন্ধ করতে যে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকার চেষ্টা করেনি, তা নয়। তানজানিয়ায় যেমন কঠিনতম নির্দেশ আছে, অ্যালবিনো-শিকারি ধরা পড়লেই যেন সর্বোচ্চ বিচারে মৃত্যুদণ্ড হয়। কিন্তু তার পরেও হামেশাই ঘটে চলছে, অ্যালবিনো শিকার। পেন্ডোর ঘটনা প্রকাশ্যে না এলে হয়তো ফের আলোচিতও হতো না এই ঘৃণ্য অভ্যাস।
কারও হাত কেটে নিচ্ছে তো কারও পা, Image Source: Google |
পুলিশ এবং কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে শেষমেশ উদ্ধার করা হয় ছোট্ট পেন্ডোকে। তবে জীবিত অবস্থায় নয়, হাত-পা কাটা, মৃত অবস্থায়। আশঙ্কা অবশ্য আগেই ছিল, তাকে জীবিত পাওয়া যাবে কি না। জীবিত পাওয়া গেলেও, তার শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলি আস্ত থাকবে কি না। ঠিক যেমন নৃশংস ভাবে হাত কাটা অবস্থায় ফেরত পাওয়া গেছিল ১০ বছরের আর এক ভাচ্চা মিউয়িগুলু মাটোনাঙ্গেকে। স্কুল থেকে ফেরার পথে আচমকা অপহৃত হয়েছিল সে।
কখনও কখনও খোদ কোনও অ্যালবিনো মানুষই শিকারির দেখানো লোভের ফাঁদে পড়ে যান। মোটা টাকার বিনিময়ে রাজি হয়ে যান পরিবারের কারও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ শিকারিদের হাতে তুলে দিতে। তথ্য বলছে, শুধু ওষুধ তৈরি বা সোনা খোঁজা নয়। অনেকে বিশ্বাস করেন, অ্যালবিনো মানুষের হাড় ঘরে রাখলে সমৃদ্ধি আসে, সৌভাগ্য বাড়ে। তিন থেকে চার হাজার মার্কিন ডলারে বিক্রি হয় এক এক জন অ্যালবিনো মানুষের হাত বা পা। সারা দেহের হাড় কেউ কিনতে চাইলে তার দাম পড়ে ৭৫ হাজার থেকে এক লক্ষ মার্কিন ডলার।
অ্যালবিনিজমে আক্রান্ত শিশুদের থেকে দূরে থাকে আফ্রিকার সাধারণ শিশুরা, Image Source: Google |
Post a Comment