মালদা জেলার চাঁচল, মা আসবে বলে যেখানে লন্ঠন নিয়ে অপেক্ষা করে মুসলিমরা



Odd বাংলা ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে প্রাচীন নিদর্শন যুক্ত জেলা মালদা। প্রতি এলাকা জুড়েই এই জেলাতে পাওয়া যায় কোনো না কোনো প্রাচীন নিদর্শনের ছোঁয়া। কতই না গল্পকথা। ইতিহাস ছাড়া এই জেলার মানুষ একেবারেই অচল। আর এখানেই রয়েছে চাঁচল রাজবাড়ি। এই রাজবাড়ি থেকেই আপনারা একটা সময় পেয়েছেন হাস্যরসে ভরা সাহিত্যিক শিবরাম চক্রবর্তীকে। এই রাজবাড়ির আবার বংশধর হলেন অভিনেতা ভিক্টর ব্যানার্জী। আর এই এলাকাতে এমন একটা নিয়ম দুর্গাপুজোকে  কেন্দ্র করে চলে আসছে যা জানলে আপনারাও অবাক হবেন। আসলে বহু প্রাচীন এই চাঁচল রাজবাড়ির পুজো।  প্রায় ৩০০ বছর ধরে চলে আসছে। আর এই পুজোকে কেন্দ্র করে চালু আছে কিছু নিয়ম।  
সাহিত্যিক শিবরাম চক্রবর্তী ছিলেন এই চাঁচল রাজবাড়ির বংশধর, Image Source; Google
আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে শুরু হয় এই চাঁচল রাজবাড়ির পুজো। তখন তো আর বৈদ্যুতিন আলো ছিল না। তাই পঞ্চমীর রাতে যখন মাকে কুমোরপাড়া থেকে নিয়ে আসা হত তখন সেই এলাকার গ্রামবাসীরা নিজেদের বাড়ির বারন্দাতে একটা করে লন্ঠন জ্বালিয়ে রাখতেন। যাতে মা দুর্গা অন্ধকারে গ্রামের মধ্যে প্রবেশ না করেন। এবং গ্রামের বাসিন্দা মুসলিমরাও একই কাজ করতেন। তারাও বারান্দাতে একটা করে লন্ঠন জ্বালিয়ে রাখতেন। ধর্মীয় বিশ্বাসের চেয়ে লৌকিক ভালোবাসার প্রতি গুরুত্ব দিতেন সেদিনের সেই মানুষগুলো। 

আরও পড়ুন: ১০০টি দেশে ৬৫০টি মন্দির, ISKCON -এর সম্পত্তির পরিমান এত বৃহৎ হল কী করে?


তারপর সময়ের স্রোত বয়ে গেছে অনেকটা। কিন্তু চাঁচলের সেই মুসলিমরা বংশানুক্রমে মা দুর্গার আবাহনে লন্ঠনের আলো নিয়ে আজও অপেক্ষমান। যে কাজটা বাপ-ঠাকুরদা শুরু করে গিয়েছিল সেটাই এখন তাদের নিয়মে পরিনত হয়েছে। আজও দুর্গা পঞ্চমীর রাতে এই মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা একটা করে লন্ঠন জ্বালিয়ে রাখে নিজেদের বাড়ির দাওয়াই। 

চাঁচল রাজবাড়ি আজও দাঁড়িয়ে তার ঐতিহ্য নিয়ে, Image Source: Google
চারিদিকে যখন ধর্ম নিয়ে হানাহানি, মারামারি। তখন এই আশ্চর্য্য নিয়মে সম্প্রীতির শিক্ষা দিচ্ছে  মানুষকে। মালদা জেলার চাঁচল হয়ে থাকুক নিদর্শন বাংলা তথা ভারতের মানুষের কাছে। তারা জানুক উৎসবের নেপথ্যে নেই কোনো ধর্মীয় বিশ্বাস বরং আছে পারস্পরিক ভালোবাসা। 
Pareon-Image
Blogger দ্বারা পরিচালিত.