অনুবাদক থেকে সাহিত্যিক, জন্মদিনে সুনীলের সাহিত্য ফিরে দেখা



Odd বাংলা ডেস্ক: সুনীলের পিতা তাকে টেনিসনের একটা কাব্যগ্রন্থ দিয়ে বলেছিলেন, প্রতিদিন এখান থেকে দু’টি করে কবিতা অনুবাদ করবে। এটা করা হয়েছিল তিনি যাতে দুপুরে বাইরে যেতে না পারেন। তিনি তাই করতেন। বন্ধুরা যখন সিনেমা দেখত, বিড়ি ফুঁকত সুনীল তখন পিতৃআজ্ঞা শিরোধার্য করে দুপুরে কবিতা অনুবাদ করতেন। অনুবাদ একঘেঁয়ে উঠলে তিনিই নিজেই লিখতে শুরু করেন। ছেলেবেলার প্রেমিকাকে উদ্দেশ্য করা লেখা কাবিতাটি তিনি দেশ পাঠালে তা ছাপা হয়। সেদিনই হয়তো তাঁর কপালে লেখা হয়ে গিয়েছিল বাংলা সাহিত্যের ভার তাকেই টেনে নিয়ে যেতে হবে। 
Image Source: Google
একটি পরিসংখ্যান বলছে প্রতিবছর বাংলা সাহিত্যের যত বই বিক্রি হয়। তার মধ্যে প্রায় ৪৫ শতাংশ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের রচনা। এর অর্থ এই যে বাংলা সাহিত্যকে তিনি আজ খাইয়ে-পড়িয়ে রেখেছেন। এখানেই শেষ নয় তাঁর বহু রচনা তাঁর বেঁচে থাকতেই সিনেমার রূপ পেয়েছিল।  এর মধ্যে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত অরণ্যের দিনরাত্রি এবং প্রতিদ্বন্দ্বী উল্লেখযোগ্য। এছাড়া কাকাবাবু চরিত্রের দু’টি কাহিনী সবুজ দ্বীপের রাজা এবং কাকাবাবু হেরে গেলেন চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। হঠাৎ নীরার জন্য ওনার লেখা আরেকটি ছবি। এর অর্থ বাংলা সিনেমার ইতিহাসেও তাঁর অবদান বিরাট। 

সুনীলকে অনেক পাঠক চেনেন একজন ঔপন্যাসিক হিসেবে। তার প্রথম উপন্যাসের নাম ‘আত্মপ্রকাশ’। ১৯৬৫ সালে দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া এই উপন্যাস একই সঙ্গে আরেকটি কারণেও উল্লেখযোগ্য। কারণ, দেশ পত্রিকায় এই উপন্যাসের আগে কখনোই কোনো নবীণ লেখকের লেখা প্রকাশিত হয়নি।     


ভারতের জাতীয় সাহিত্য প্রতিষ্ঠান সাহিত্য আকাদেমি ও পশ্চিমবঙ্গ শিশুকিশোর আকাদেমির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় চারটি ঐতিহাসিক গ্রন্থ, দুটি  আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ, ১১৬টি উপন্যাস, চারটি নাটক, ১৭টি কবিতার গ্রন্থ, দুটি গল্পগ্রন্থসহ মোট ১৫৬টি গ্রন্থ রচনা করেন। ২০০২ সালে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা শহরের শেরিফ নির্বাচিত হন। ১৯৭২ ও ১৯৮৯ সালে আনন্দ পুরস্কার এবং ১৯৮৫ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।
 
Blogger দ্বারা পরিচালিত.