ISKCON -এর সম্পত্তির পরিমান এত বৃহৎ হল কী করে? প্রচারের আলো থেকে দূরে নেপথ্যের কথা



Odd বাংলা ডেস্ক: নদীয়ার ছোট্ট একটা গ্রাম থেকে বেরিয়ে যে ভাবধারা শুরু হয়েছিল অভয়চরণ দের হাত ধরে। আজ তা বিশালাকায় ইন্ডাস্ট্রীতে পরিনত হয়েছে। অভয়চরন স্কটিশ চার্চ কলেজের ছাত্র ছিলেন। তিনি বিবাহিত ছিলেন এবং তার সন্তানাদিও ছিল। ১৯৫৯ সালে তিনি সন্ন্যাস গ্রহণ করার পর বৈষ্ণব শাস্ত্রের ভাষ্য রচনায় মনোনিবেশ করেন। এরপর ১৯৬০-এর দশকে পরিব্রাজক সন্ন্যাসী হিসাবে আমেরিকায় যাত্রা করে তিনি তার আধ্যাত্মিক মতাদর্শ প্রচার করতে থাকেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, ভারত ও অন্যান্য জায়গায় ভ্রমণ করে তিনি অসংখ্য শিষ্যসংগ্রহণে সফল হন। তার প্রতিষ্ঠিত ইসকনের মূল ভিত্তি ছিল হিন্দু কৃষ্ণধর্মের একটি বিশেষ রূপ। ভাগবত পুরাণ এই সম্প্রদায়ের কেন্দ্রীয় ধর্মগ্রন্থ। ১৯৭৭ সালে প্রভুপাদের মৃত্যুর পরও ইসকনের প্রসার অব্যাহত থাকে এবং এই সম্প্রদায় ভারতে সম্মান অর্জন করে। যদিও নেতৃত্বের ব্যাপারে তার শিষ্যদের মধ্যে ছোটোখাটো মতবিরোধ ছিল।
AC Bhaktivedanta Swami Prabhupada(Abhay Charan De), image Source: Google 


কিন্তু বর্তমানে ইসকন পরিনত হয়েছে একটি বহুজাতিক সংস্থায়। ফিজি থেকে গরীব দেশ কেনিয়া। সব জায়গাতেই রয়েছে এদের ব্রাঞ্চ। এবং তারা ধর্মান্তকরনের কাজ করে চলেছে। ধর্মান্তকরণের ধারনা কিন্তু সনাতন ধর্মে ছিল না প্রথম থেকে। কিন্তু শ্রীল প্রভুপাদ সেটাকেও বৈধ করেছেন। ফলে দেশে-বিদেশে অন্য ধর্ম ছেড়ে মানুষ হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করছেন। এর আগে কি এই ধরনের কোনো সংস্থা ছিল না? ভারত সেবাশ্রম সংঘ বা রামকৃষ্ণ মিশন কিন্তু আরও পুরানো। কিন্তু তাদের মধ্যে ধর্মান্তকরনের বিষয়টা তেমন ভাবে প্রকাশ পায়নি। কিন্তু ইসকন বহু আন্তর্জাতিক মানের ব্যবসায়ীকে নিজেদের সদস্য করেছে। যাদের হাত ধরে সংস্থাতে এসেছে মোটা টাাকার অনুদান। এবং সেটা শেষ ৫০ বছর দরে চলে আসছে।   

১৯৭১ সালের ট্রাস্ট এগ্রিমেন্ট
শ্রীল প্রভুপাদ যে ট্রাস্টের সূচনা করেছিলেন তার অর্থ কিন্তু গচ্ছিত ছিল ব্যাঙ্ক অব আমেরিকার অ্যাকাউন্টে। এখন সেই ব্যাঙ্কটি একটি বৈদেশিক ব্যাঙ্ক। ফলে ইসকনের ফান্ড কিন্তু রয়েছে বৈদেশিক ব্যাঙ্কের হাতেই। এমন কি ১৯৭১ সালে মায়াপুর ও বৃন্দাবনের মধ্যে ট্রাস্ট  এগ্রিমেন্ট হয়েছে তাতেও উল্লেখ আছে এই ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার কথা। 


এখানেই শেষ নয়। শ্রীল প্রভুপাদ যে গভর্নিং বডি তৈরি করে দিয়েছিলেন তার বেশির ভাগ সদস্যই কিন্তু অভারতীয়। যেখানে বিদেশ থেকে আগতরা বেশি সুযোগ পেয়ে থাকে। ফলে  এর পেছনেও ইসকনের অবশ্যই বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে। নইলে এটা সম্ভব হত না। বর্তমানে এই গভর্নিং বডির যে চেয়ারম্যান "জয়পতাকা স্বামী" তিনি নিজেও একজন  ইংরেজ। 

বর্তমানের গভর্নিং বডি সদস্যের বেশির ভাগই এখন অবাঙালি, Image Source: gbc.iskcon.org
তবে ইসকন শুধুই যে অনুদানে চলছে তা নয়। বিশাল পরিমান ভক্তরা যে বই কেনে, যে খাবার খায় বা মন্দিরে গিয়ে প্রসাদ গ্রহণ করে তার জন্যও কিন্তু অর্থ নেওয়া হয়ে থাকে। যা এই সংস্থার ফান্ডেই যায়। তবে সারা বিশ্বে এই আয়ের পরিমান বিভিন্ন রকম। যার থেকে সমাজ সংস্কার তো হয়, তবে তার থেকে বেশি সেই টাকা দিয়ে বেতন দেওয়া হয় সন্ন্যাসীদের। 

গভর্নিং বডির মিটিংগুলি দেখলে মনে হবে বহুজাতিক সংস্থার কর্পোরেট মিটিং চলছে, Image Source: iskcon.org

ISKCON -এর সন্ন্যাসীদের বেতন
প্রথম প্রশ্ন উঠে আসতে পারে যে সন্ন্যাসীদের কী বেতন দরকার? কারন সন্ন্যাস কথার অর্থ তো সাকার জগতের সব কিছুর সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ ও মানুষের সেবায় নিয়োজিত হওয়া। কিন্তু অথচ পাবলিক ডোমেইনে রয়েছে এই তথ্যগুলি। যেটা দেখলে আপনারা চমকে যাবেন। ভারতীয় মুদ্রায় এই এক একজন সন্ন্যাসীর বেতনের পরিমান বিশাল। 

Devotee Name
Title / Position
monthly salary/ wages
ISKCON OF CALIFORNIA, INC.
Emil Beca
(Svavasa das)
President
$350 Cash
Free Rent ($750)
Free Food ($100)
Robert Owen
(Mayapur Sasi das)
Secretary/Treasurer
$300 Cash
Free Rent ($625)
Free Food ($100)
Marcos Zafarani
(Virabahu das)
Director
Free Rent ($625)
Free Food ($100)
Theresa Beca
(Tadit dasi)
Director
$300 Cash
Free Food ($100)
ISKCON OF LOS ANGELES, INC.
Wayne Selzler
(Ratnabhusana das)
President
Free Rent ($625)
Free Food ($100)

এই তালিকা সম্পর্কে সন্দেহ থাকলে ISKCON -এর ওয়েবসাইটেই গিয়ে দেখুন, harekrsna.org 

এই সমস্ত তথ্যই কিন্তু ইন্টারনেটে রয়েছে। আপনি সেগুলি মিলিয়েও নিতে পারেন। এবং এই প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য কোনো ভাবেই  অন্য কারও ধর্মীয় বিশ্বাসকে আঘাত পৌঁছানো নয়। বরং আমরা চায় ISKCON- কাজ করুক। তবে আর পাঁচটা কর্পোরেট সংস্থার মতো তারাও আইনের মধ্যে থেকে কাজ করুক। CSR বা কর্পোরেেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি তারাও পালন করুন।  

তথ্যসূত্র: 

Pareon-Image
Blogger দ্বারা পরিচালিত.