মৃতদের মাঝি প্রকাশ, রাতের অন্ধকারে শবদেহ নিয়ে নৌকা চালায়



শুভেন্দু পাঠক: নাম প্রকাশ মাঝি। যদিও বন্দেলখন্ডি ভাষায় উচ্চারণ করতে হয় "পরকাশ"। বয়স, সে নিজেও ঠিক মতো জানে না। তবে যে নৌকাটা সে চালায় সেটার বয়স নাকি ৫০ বছর। তাহলে তার বয়স ধরে নেওয়া যায় আরও ১৫-২০। মানে ওই ৬৫-৭০ এর মধ্যেই বয়স হবে।  সংসার বলতে স্ত্রী তাঁর অনেক আগেই মারা গেছে।  একটা ছেলে আছে সে দেখে না প্রকাশ কে। 
বারাণসীর ঘাটে যেখানে মৃতদেহ পোড়ানো হয়, Image Source: Google


সে বারাণসীর ঘাটে নৌকা চালায়। ঠিক কত বছর ধরে সে এই কাজটি  করছে মনে নেই প্রকাশের। তবে সে এই কাজ করতে ভালোবাসে। কিন্তু প্রকাশের নৌকার  যাত্রীরা কিন্তু মানুষ নয়। তারা সব মৃতদেহ। এই রীতির একটি নাম আছে, "গঙ্গা চালানী"। 
এখান থেকেই প্রকাশ সেই মৃতদেহগুলিকে নৌকা করে নিয়ে যায়, যেগুলি চিতাতে দেওয়া যায় না, Image Source: Google


আসলে অনেক সাধু-সন্ত মৃত্যুর আগে বলে যায় যে তাঁকে যেন পোড়ানো না হয়। তাই তাদের স্থান চিতাতে হয় না। আবার এমন অনেকে আছে যাঁদের শরীরে মৃত্যুর আগে বেড শো ঘা হয়ে যায়। পোড়তে গেলে সেখান দিয়ে জল বেরিয়ে আসে। যা পরিবারের লোক দেখতে পারে না। তাই তারা এই গঙ্গা চালানীর আশ্রয় নেয়। 

প্রকাশের কথা অনুযায়ী এই মুহূর্তে সেই একমাত্র মাঝি যে মৃতদেহ বহন করে।  প্রতি মৃতদেহ বহন করার জন্য সে পায় ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা। তার কাজ হল এই মৃতদেহকে বয়ে নিয়ে যাওয়া মাঝ গঙ্গা পর্যন্ত। তারপর সেই মৃতদেহের সঙ্গে  একটা পাথর বেঁধে সেটাকে জলে ফেলে দেওয়া।  মৃতদেহটি একটু একটু করে তলিয়ে যায় জলের তলে। যদিও এখন আবার অনেক বাধা-নিষেধ হয়েছে সরকারের তরফে মৃতদেহ জলে ফেলা নিয়ে। তাই রাতের অন্ধাকরেই প্রকাশ মাঝি এই কাজ করে।  
Blogger দ্বারা পরিচালিত.