কেমন আছে কলকাতার কাবুলিওয়ালারা?
Odd বাংলা ডেস্ক: চাঁদনিচকের গলি ধরে এগিয়ে গেলে ইলেকট্রনিক শপগুলির পরে আপনার চোখে পড়বে একটি একটি হোটেল। খাওয়ার হোটেল। থাকার নয়। কলকাতা তে যাঁরা বহুদিন ধরে আছেন তাঁরা জানেন এটার নাম। অনেকে আবার এটাও বলেন যে কলকাতার বুকে এঁরাই নাকি প্রথম চিকেন রেজালা চালু করেছিলো। হ্যাঁ কথাটা সত্যিই। আর যে হোটেলের কথা বলছি তার নাম সাব্বিরের হোটেল। এই হোটেলে আপনি খেতে গেলেই আপনার মনে হবে আপনি একটি ছোটো আফগানিস্তানে চলে এসেছেন। মুখের ভাষা যেন বদলে গেছে এখানকার মানুষদের। সবাই পাস্তোতে (Pushto) কথা বলছে। পাস্তো আফগানদের ভাষা। আর এখানে পাঠানি পরা দীর্ঘদেহী যাঁদের দেখবেন তারা কাবুলিওয়ালা।
সেই বিখ্যাত সাব্বিরস হোটেল, যেটাকে কাবুলিওয়ালাদের আখড়া বলা হয়, Image Source: Google |
রবীন্দ্রনাথের কাবুলিওয়ালাতে অভিনয় করেছিলেন ছবি বিশ্বাস। যা বাঙালির চোখে জল এনে দিয়েছিলো। কিন্তু কাবুলিওয়ালারা আজ কেমন আছেন এই শহরের বুকে? ময়দানের যে দিকটাতে ইসকন প্রতি বছর রথের মেলা করে, সেখানে গেলে আপনি প্রতিদিন বিকেলে দেখতে পাবেন অনেকগুলি যুবক পাঠানি পরে ক্রিকেট খেলছে। তাঁরা এই কাবুলিওয়ালাদের সন্তান। তাদের আগামী প্রজন্ম।
সব্বিরস হোটেলে মজলিশে ব্যস্ত কাবুলিওয়ালারা, Image Source: Moska Najib |
'রেহমাতুল্লাহ' এই কাবুলিওয়ালাদের একজন। কলকাতাতে তার পরিবার আজ প্রায় ৩৬ বছর ধরে আছে। তবে ভারতে তারা এসেছিল সীমান্ত গান্ধী 'খান আবদুল গফফর খানের' সঙ্গে। প্রথমে মুম্বই এবং পরে কলকাতাতে। তবে যে কথাটা সে জানায় সেটা অবাক করা। সে বলে
কলকাতার বুকে এতদিন আছি। কেউ কোনোদিন আমাকে জেরা করেনি। কোনোদিন কেউ আমার আসল দেশের কথা জিজ্ঞাসা করেনি। আমার পরিবার এখানেই থাকে। আমার ছেলে-মেয়েরা এখানেই পড়াশোনা করে।
"রেহমাতুল্লাহ"র পরিবার কলকাতায় আছে ৩৬ বছর ধরে, সীমান্ত গান্ধীর সঙ্গে এসেছিল তারা, Image Source: 101India |
'রেহমাতুল্লাহ' একথাও বলে যে কমিউনিস্ট আমল থেকেই তারা সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছে। উত্তর কলকাতার যে এলাকাতে সে থাকে সেখানে হিন্দুরাও বাস করে। কিন্তু কোনোদিন তাদের মধ্যে বিবাদ হয়নি। তবে বর্তমানে কাবুলিওয়ালাদের উপার্জন আর তেমন নেই। তাদের কাছ থেকে আগে যেমন করে ব্যবসায়ীরা মোটা সুদে টাকা ধার করত, এখন আর তেমন হয় না। এখন তো স্বল্প সুদে অনেক বেসরকারি সংস্থা লোন দেয়। ফলে ওদের দরকার আর পরে না। তাহলে রেহমাতুল্লাহদের এখন চলে কীভাবে?
কলকাতার চাঁদনিচক এলাকায় কাবুলিওয়ালাদের ভীর, Image Source: Google |
Post a Comment