জাপানের রাজবংশের প্রদীপ এই ১৩ বছরের শিশুটি, কীভাবে সামলাবে সে রাজ্যপাট


Odd বাংলা ডেস্কঃ জাপানের কনিষ্ঠ রাজকুমার হলেন হিসাহিতো, বয়স তাঁর বর্তমানে মাত্র ১৩ বছর। চলতি বছরেই তার কাকা নুরুহিতো জাপানের সম্রাট হিসাবে অভিষিক্ত হয়েছেন। অগাস্ট মাসে ভুটান সফরে গিয়েছিলেন ছোট্ট হিসাহিতো। জাপান রাজবংশের এই ভাবী রাজাকে বিশ্বমঞ্চে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এই সফর বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। 

ছোট্ট হিসাহিতো এখন থেকেই জাপানের ঐতিহ্যবাহী 'হাকামা' কিমোনো পরে এবং তীরন্দাজ হিসাবে লক্ষ্যভেদ করারও প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। জাপানের সম্রাট আকিহিতোর পদদত্যাগের পরে জাপানের রাজবংশের সিংহাসনের ভার নিয়েছেন তাঁর পুত্র সম্রাট নারুহিতো। তাঁর বয়স বর্তমানে ৫৯ বছর। আগামী ২২ অক্টোবর একটি অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মহলে তিনি সিংহাসনের বসার কথা ঘোষণা করবেন। 

Image Source- Google

প্রসঙ্গত, জাপানের রাজবংশের নিয়ম অনুসারে, কেবলমাত্র বংশের পুরুষরাই উত্তরাধিকার সূত্রে জাপানের সম্রাট হতে পারেন। এমনকী এমনকী জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেও এই রক্ষণশীল রীতিতে পরিবর্তন আনতে চান না। সেই অনুসারে সম্রাট নারুহিতোর ছোট ভাই ৫৩ বছর বয়সী ক্রাউন প্রিন্স আকিশিননোর পুত্র ১৩ বছরের হিসাহিতোই হলেন রাজবংশের প্রদীপ। জাপানের জাতীয় স্তরের সংবাদপত্র আশাহি-র সম্পাদকীয়তে প্রকাশ করা হয়েছে, বিধান অনুসারে জাপান সাম্রাজ্য ও পরিবারের যাবতীয় দায়ভার এসে বর্তাবে যুবরাজ হিসাহিতোর ওপর।

হিসাহিতোর জন্ম হয় ২০০৬ সালে। তাঁর জন্ম অনেকটা অলৌকিক ঘটনা হিসাবেও মনে করা হয়েছিল। কারণ ১৯৬৫ সালের পর থেকে জাপানের রাজবংশে কোনও পুত্র সন্তানের জন্ম হয়নি। বিয়ের আট বছর পর সম্রাটের স্ত্রী রাজকুমারী আইকোর জন্ম দেন। এমনকী এও মনে করা হয়েছিল যে, কোনওভাবে হয়তো রাজবংশের নিয়মে পরিবর্তন আনতে হবে, যাতে বংশের মেয়েরা সিংহাসনে বসতে পারে। কিন্তু হিসাহিতোর জন্ম সেই পরিবর্তন আনা থেকে বিরত রেখেছে। 

Image Source- Google
তবে বর্তমানে কিছু বিশেষজ্ঞ এবং মিডিয়ার একটাই চিন্তা যে হিসাহিতো ভবিষ্যতের জন্য সঠিকভাবে তৈরি হচ্ছে তো। প্রসঙ্গত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের সংবিধান অনুসারে, সম্রাটের হাতে কোনও রাজনৈতিক ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। সম্রাটকে সর্বদা রাষ্ট্র্রের প্রতীক এবং জনগণের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতার চিহ্ন হিসাবে দেখা হয়। তবে হিসাহিতো বর্তমানে ওকানোমিঝু বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত একটি জুনিয়ার হাই প্রাইভেট স্কুলে পড়াশোনা করছে। দ্বিতীয় বিশ্বযু্দ্ধের পর এই প্রথম রাজপরিবারের কোনও সদস্য কোনও প্রাইভেট স্কুল থেকে পড়াশোনা করছে।  তবে জাপানের যুদ্ধকালীন আগ্রাসনের শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে শান্তি এবং গণতন্ত্রের প্রতীক হিসাবে তাঁর ঠাকুরদা আকিহিতো যে অবদান রেখে গিয়েছেন, তেমন করে হিসাহিতোকে ভবিষ্যতে তাঁকে রাজ্যভার গ্রহণের জন্য প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে আলাদা কোনও বিশেষ পরামর্শদাতা নেই।     
Blogger দ্বারা পরিচালিত.