ভারতের রাজধানী দিল্লি, বাংলাদেশের ঢাকা, জানেন কি কীভাবে বেছে নেওয়া হয় কেনও দেশের রাজধানী



Odd বাংলা ডেস্কঃ ভারতের রাজধানী দিল্লি, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু, শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলোম্বো। ছেলেবেলায় ভূগোল বইয়ের পাতায় কিংবা সাধারণ জ্ঞান বাড়াতে এইভাবেই সব দেশের রাজধানী মুখস্থ করার স্মৃতি কম-বেশি সকলেরই রয়েছে। কিন্তু কথনও কী ভেবে দেখেছেন যে ঠিক কী কারণে ভারতের রাজধানী দিল্লি? কেনই বা কাঠমান্ডুকে করা হয়েছে নেপালের রাজধানী।  

প্রাথমিকভাবে একথা সকলেরই জানা যে, একটি দেশের প্রশাসনিক ও রাজনৈতি কর্মকাণ্ড যে শহর থেকে পরিচালিদত হয়, সেটিই সংশ্লিষ্ট দেশের রাজধানী। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের বেশিরভাগ শীর্ষ দফতর অফিস-কাছারি এই সবই মূলত অবস্থিত হয় এই রাজধানীতেই। পাশাপাশি এই রাজাধানী অঞ্চলগুলি কিন্তু ঐতিহাসিক দিক থেকেও অনেক গুরুত্ব লাভ করে থাকে। রইল এমনই কয়েকটি বিষয় যার ওপর ভিত্তি করে একটি দেশের রাজধানী কী হে তা নির্বাচন করা হয়। 

১) রাজধানীর ইংরেজি শব্দ Capital লাতিন শব্দ Capitalis থেকে এসেছে, যার অর্থ হল 'মুখ্য' বা 'শীর্ষ'। অতএব একটি দেশের রাজধানী নির্বাচনের ক্ষেত্রে তার ভৌগোলিক অবস্থান একটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর সেইকারণে দেশের কেন্দ্রে অবস্থিত কোনও শহরকেই রাজধানী হিসাবে বেছে নেওয়া হয়, কারণ তার সঙ্গে গোটা দেশের একটা সংযোগ রক্ষা করা সম্ভব। পাশাপাশি দেশের সীমান্ত বা উপকূলবর্তী শহরগুলিকে নিরাপত্তারর কারণে রাজধানী হিসাবে বেছে নেওয়া হয় না। 

Image Source- Google

২) অনেক সময়ে রাজনৈতিক আপসের ভিত্তিতেও বেছে নেওয়া হয় কোনও দেশের রাজধানী। যেমন, অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরা নির্বাচিত হয়েছিল রাজনৈতিক আপসের মধ্যে দিয়েই। অস্ট্রেলায়ার দুই শহর মেলবোর্নের সঙ্গে সিডনির মধ্যে বিরোধের কারণেই ক্যানবেরাকে বেছে নেওয়া হয়, যদিও অনেকের দাবি এই রাজধানী নির্বাচনের নেপথ্যে অন্য অনেক কারণও রয়েছে। পাশপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার পরও রাজধানী নির্বাচন নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। আলেক্সান্ডার হ্যামিলটন রাজধানীকে উত্তরের দিকে করতে চাইলে, অপরদিকে টমাস জেফারসন এবং জেমস ম্যাডিসন এই চেয়েছিলেন রাজধানী হোক দক্ষিণে। এরপর জর্জ ওয়াশিংটন নদীর কাছে রাজধানীর স্থান নির্বাচন করেন, বাকিটা ইতিহাস. এরপর তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই রাজধানির নামকরণ হয় ওয়শিংটন ডিসি। 

৩) ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে এমন স্থানও কিন্তু রাজধানী শগর হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার জন্য বিশেষভাবে অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে। এর উদাহরণ হিসাবে দেওয়া যেতে পারে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের কথা। ষোড়শ শতকে মাদ্রিদ কিন্তু শহর হিসাবে আলাদা কোনও গুরুত্ব ছিল না। সেখানকার জনসংখ্যাও খুব কম ছিল। সেইসময়ে রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ একটি খালি প্রাসাদে থাকতে শুরু করেন, যার ফলস্বরূপ স্পেনের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কার্যকলাপও মাদ্রিদ থেকে পরিচজালিত হতে থাকে। এর প্রায় ৪০০ বছর পর মাদ্রিদ রাজধানীর স্বীকৃতি পায়। 

৪) শাসকের পছন্দ- শাসকের পছন্দ-অপছন্দের ভিত্তিতেও বহু রাজধানী নির্বাচন করা হয়েছে। ১৯৯৭ সালে কাজাকস্তানের রাজধানী হিসাবে নির্বাচন করা হয় আস্তানা-কে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি নুরসুলতান নাজারবায়েভের ইচ্ছেতেই একে রাজধানী হিসাবে নির্বাচন করা হয়। কিন্তু মজার কথা হল এই রাদঝানী শহরের আগের নাম ছিল আকমলা, যার আক্ষরিক অর্থ হল সাদা কবর, আর সেই কারণেই এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় আস্তানা। 
Blogger দ্বারা পরিচালিত.