শিশুকে অবশ্যই বুকের দুধ খাওয়ান, শেপ নষ্ট হওয়ার ভয়ে সন্তানের জীবন নষ্ট করবেন না!


Odd  বাংলা ডেস্ক: শিশুর জন্য মায়ের দুধের বিকল্প নেই। এ কথার সঙ্গে কেউ দ্বিমত করবেন না জানি। শুধু মানুষ কেন, স্তন্যপায়ী সব প্রাণীর নবজাতকই মায়ের দুধ থেকে সর্বোচ্চ পুষ্টি পায়। দুধের পুষ্টিই দেহের বৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে।

এ জন্য দু’বছর বয়স পর্যন্ত শিশুকে স্তন্যপান করানোটা বাধ্যতামূলক। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিকস, দি ইনস্টিটিউট অব মেডিসিন এবং অন্য অনেক সংস্থা এ বিষয়ে ক্যাম্পেইনও চালাচ্ছে। কিন্তু বড়দের জন্যও কি তাই?

দিন দিন নানা গবেষণায় উঠে আসছে দুধ পান শুধু অপকারীই নয়, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকরও। দশ হাজার বছর আগে মানুষ যখন প্রথম গৃহে বাস করতে শেখে তখন কিন্তু একটু বড় শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক কোনো মানুষই দুধ পান করত না! দুধে ল্যাকটোজ প্রোটিন থাকায় বর্তমানেও অনেকে এটি এড়িয়ে চলে। কই, তাদের তো তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না!

অথচ অহরহ টেলিভিশনে দুগ্ধজাত পণ্যের যে বিজ্ঞাপন আমরা দেখি, তাতে কিন্তু দুধকে শ্রেষ্ঠ খাদ্য বানিয়ে ফেলা হয়। কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ছাড়াই দাবি করা হচ্ছে- এটি হাড় মজবুত করে। দুধে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি আছে। এমন সব চিত্তাকর্ষক গুণাগুণের কথা শুনে শুনে কেউ কি আর তা পান না করে থাকতে পারে বলুন?

ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠন মজবুত করে এবং ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়ক বটে। কিন্তু দুধই যে এ দুয়ের মধ্যে সংযোগ ঘটায়- এমন দাবির সপক্ষে তাদের কাছে কিন্তু কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। উল্টো ২০১১ সালে জার্নাল ফর বোন অ্যান্ড মিনারেল রিসার্চ পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, হাড়ের শক্তি বাড়াতে দুধ মোটেও সহায়ক নয়।

মাঝবয়সী নারীদের কোমরের হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধে দুধের প্রভাব বিষয়ে গবেষণাটি করেন তারা। দু’লাখ নারীর ওপর ছয় ধরনের গবেষণা চালিয়ে তারা হাড়ের ক্ষয় কমাতে দুধের ইতিবাচক ভূমিকা সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাননি।

সম্প্রতি ‘জামা পেডিয়াট্রিকস’ নামক পত্রিকায় প্রকাশিত অন্য এক প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, কৈশোরে যারা নিয়মিত দুধপান করেছে বৃদ্ধ বয়সে তাদের হাড়ের ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি মোটেও কমেনি। দু’দশক ধরে লাখখানেক নারী-পুরুষের ওপর তারা এ গবেষণা চালান। সুইডেন ও যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত অন্য অনেক গবেষণায়ও এ তথ্য উঠে এসেছে।

হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে ভিটামিন ডি সহায়ক। তবে বেশি পরিমাণে ভিটামিন ডি গ্রহণ করলেই যে মেরুদণ্ড, কোমর এবং হাতের হাড় মজবুত হবে তা নয়। দেহে এর প্রয়োজন নির্দিষ্ট। তা ছাড়া দুধে প্রচুর ক্যালরি রয়েছে।

যে কারণে মুটিয়ে যাওয়ার ভয় তো থাকেই। দুধে প্রচুর প্রোটিন আছে, এটাও ঠিক। তবে অধিকাংশ মানুষেরই প্রাণিজ নয়, উদ্ভিজ প্রোটিনের ঘাটতি রয়েছে। কাজেই খেতেই হবে, এমন তালিকায় দুধকে না রাখলেও ক্ষতি নেই।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.