খেজুরের রস বের করা যেন গর্ভবতীর সন্তান প্রসব, তিন মাসের জন্য হয় রসবতী


Odd বাংলা ডেস্ক: খেজুর নয়। ওটা খর্জুর। কিন্তু বাংলা ভাষার অপভ্রংশের ফাঁদে পড়ে হয়েছে খেজুর। সাত-আট বছরের মধ্যে  যৌবন চলে আসে খেজুর গাছে। তখন খুব নরম করে আদর করতে হয় খেজুর গাছকে। তিন মাসের জন্য রসবতী  হয় খেজুর গাছ। কার্তিকের গোড়ায় গাছের ডেগো একদিক থেকে তুলে দিতে হয়। হেঁসো দিয়ে চাঁছতে হয় কিছুটা। একে বলা হয় মুড়ো দেওায়। তারপর ১ সপ্তাহ বিশ্রাম দেওয়া হয়।  এরপর হয় পাটিচাঁছা। তারপর আবার দিতে হয় বিশ্রাম। খুব সন্তর্পণে এই কাজগুলি করা হয়। গাছের যেন না লাগে। তারপর বিশ্রাম শেষ হলে চাঁছা অংশ কেটে সেখানে বাঁশের নলী লাগিয়ে দেওয়া হয়। আর ঝোলানো হয় একটা মাটির হাঁড়ি। সেখান দিয়েই টুপুর টুপুর করে রস বেরিয়ে আসে। এ রস থেকে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে কালু ও ভোলারা। 

শীতের পিঠা ও পায়েসের জন্য খেজুরের রস ও গুড়ের বাড়তি চাহিদা রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি খেজুরের গুড় বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। তবে খেজুর গাছ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। তাই একসময় হয়তো খেজুর রসের ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বেশি বেশি খেজুর গাছ রোপণ করা প্রয়োজন বলেও জানান গাছিরা। কিন্তু শহর কলকাতার মানুষ পকেট থেকে কয়েকটা নোট বের করে যে খেজুরের পাটালি কিনে নেয়, তারা হয়তো জানেও না খেজুরের রস আসলে কীভাবে আসে। 
Blogger দ্বারা পরিচালিত.