সারাক্ষণ বুঁদ হয়ে রয়েছেন অনলাইন শপিং-এ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন মানসিক সমস্যা!


Odd বাংলা ডেস্ক: স্কার্ফ থেকে শুরু করে ঘরে পরার চপ্পল, যার হয়তো এই মুহূর্তে প্রয়োজন নেই, সেইরকম জিনিসও শপিং করে ফেলেন মিসেস চ্যাটার্জী। তারপর হয়তে আলমারির এক কোণে পড়ে থাকে সেই মলিন স্কার্ফ আর সেই চপ্পলও আর সেই অর্থে ব্যবহার করাই হয় না। মিসেস চ্যাটার্জি বলেন, অনলাইনে তিনি যাই দেখেন তাঁর মনে হয় যে, সেটাই তাঁর প্রয়োজন আর সেইমতো অর্ডারও করে ফেলেন। বা অনেকক্ষেত্রে এমনও ঘটে অফিসে কাজের চাপ, বাড়িতে সমস্যার থেকে একটু মুক্তি পাওয়ার মাধ্যম হিসাবে অনেকেই অনলাইনে শপিং করে নেন। এমন ঘটনা নিশ্চয় আপনার সঙ্গেও ঘটে? 

তবে এই ঘটনা কিন্তু খুব স্বাভাবিক বা সাধারণ কোনও ঘটনা নয়, অন্তত বিশেষজ্ঞরা এমনটাই মনে করছেন। বিশেষজ্ঞদের কথায় অনলাইন শপিং-এ বুঁদ হয়ে থাকা আদতে একপ্রকার মানসিক রোগ। হ্যানোভার মেডিকেল স্কুলের গবেষকরা সম্প্রতি দাবি করেছেন যে তথাকথিত ‘বায়িং-শপিং ডিসঅর্ডার’ (বিএসডি)-এর নিজস্ব শ্রেণিবিন্যাস থাকা উচিত। কমপ্রিহেনসিভ সাইকিয়াট্রি-তে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে যে, প্রায় ১২২ জন রোগী তাদের অনলাইন শপিংয়ের আসক্তির থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছেন। জানা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ রোগী পুরোপুরি বিএসডি (ক্রয়-শপিং ডিসঅর্ডার)-তে আক্রান্ত। বিএসডি কোনও নতুন ধারণা নয়। গবেষণা নির্দেশ করে যে উন্নত দেশগুলির প্রায় ৫% প্রাপ্তবয়স্ক বিএসডি-তে ভুগছেন।

এক জনৈক মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কথায়, সাম্প্রতিককালে হাতের নাগালে এত রকমের পণ্যের সমারোহ, তার মধ্য আবার বিভিন্ন অফার, ডিসকাউন্ট, ক্যাশব্যাক, ফ্রি গিফট, এখনি কিনুন নইল পরে পস্তাবেন- ইত্যাদি নানান বিষয়ের ফাঁদে পড়ে অপ্রয়োজনীয় জিনিসও কিনে ফেলেন ক্রেতারা। কিন্তু কিনে ফেলার পর মনে হয় এখন না কিনলেই ভাল হত, সঞ্চয়ের দিকে মন দেওয়া প্রয়োজন ছিল, অন্য সাইটে খুঁজলে এর থেকেও কম দামে পাওয়া যেত- ইত্যাদি নানা প্রশ্নের জেরে মানসিক স্বাস্থ্যের অবণতি হয়।

তবে আপনাকে বুঝতে হবে যে আপনার দৈনন্দিন জীবনের সমস্যার সমাধান কিন্তু একটা ব্যাগ বা এক জোড়া জুতো সমাধান করে দিতে পারে না। তাই ঝোঁকের মাথায় নয়, প্রয়োজনেই শপিং করুন।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.