১৯৫১-২০১৯- জানুন শবরীমালা সমস্যার সবটা


Odd বাংলা ডেস্ক: ট্রাভানকোর দেবস্বম বোর্ড-এর তরফে ১৯৫১ সাল থেকে মহিলাদের শবরীমালা মন্দিরে ঋতুমতী মহিলাদের (১০ থেকে ৫০ বছর) প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর ১৯৬৫ সালে এই নিয়মটি আইনসিদ্ধ করা হয় এবং ১৯৯১ সালে কেরালা হাইকোর্টের তরফে এই নিয়ম বহাল রাখা হয়। এরপর ২০১৮ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর তারিখে সুপ্রিমকোর্ট সমস্ত বয়সের মহিলাদের জন্য এই মন্দির খুলে দেওয়ার রায় দেয়। 

আর সুপ্রিমকোর্টের তরফে এই নির্দেশ জারি করার পর থেকেই কেরল কার্যত রণভূমিতে পরিণত হয়। সঙ্ঘ পরিবার এবং হিন্দু সংগঠনগুলির তরফে ঋতুমতী মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেছিলেন, নারীদের ওপর এমন নিষেধাজ্ঞা হিন্দু ধর্মের প্রয়োজনীয় অংশ নয়। বরং তা ধর্মীয় পুরুষতন্ত্রের একটি রূপ। সুপ্রিম কোর্টের রায় প্র দানের পর প্রথমবারের জন্য যখন মন্দিরটি খোলা হয়েছিল তখন নীলাক্কাল এবং পাম্বা বেস ক্যাম্পগুলিতে ব্যপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলেছিল। সাংবাদিক এবং মহিলা মন্দিরে প্রবেশের চেষ্টা করলে প্রতিবাদীরা তাঁদের ওপর লাঞ্ছনা করেন বলে খবর। শুধু তাই নয়, প্রতিবাদীরা মহিলা সাংবাদিকদের ক্যামেরা চুরি করে এবং যানবাহনের ক্ষতি করেছিল। সেই বিক্ষোভে পুলিশও হামলা করেছিল।

সবথেকে অবাক করা বিষয় ছিল, প্রতিবাদীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মহিলাও ছিল, যারা মহিলাদেরকেই মন্দিরে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করেছিল। এমনকী মন্দিরে আসা সমস্ত গাড়িও তারা তল্লাশি চালিয়েছিল,এটা দেখার জন্য যে, সেখানে কোনও ঋতুমতী মহিলা রয়েছে কিনা। 

এরপর গত ১৪ নভেম্বর এই মামলার রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি ইন্দু মালহোত্র এবং বিচারপতি এএম খানউইকর জানান যে, শবরীমালা সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত অত্যন্ত সাবধানভাবে নিতে হবে। আর সেজন্য এটি ৭ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চে পাঠানো হয়। তবে মহিলা সমাজ কর্মীদের দাবি, মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে যখন সুপ্রিম কোর্টের তরফে কোনও স্থগিতাদেশ জারি করা হয়নি সেজন্য মহিলাদের প্রবেশাধিকার অব্যাহত থাকবে। যদিও কেরল সরকারের তরফে শবরীমালায় আগত মহিলাদের কোনও অতিরিক্ত পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

নারী অধিকারকর্মী ত্রুপ্তি দেশাই, যিনি শবরীমালায় সব বয়সের মহিলাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ করেছেন, তিনি জানিয়েছেন তিনি কেরল সরকারের কাছে তিনি সুরক্ষার জন্য আর্জি জানাবেন, কিন্তু তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়া না হলেও তিনি শবরীমালা যাবেন। 
Blogger দ্বারা পরিচালিত.