বিয়ের প্রথম রাতে সতীত্বের প্রমাণ দিতে 'নকল রক্ত' বিক্রি করছে আমাজন, নেটদুনিয়ায় সমালোচনার ঝড়


Odd বাংলা ডেস্ক: বিয়ের প্রথম রাতে নববধু কুমারী কিনা তার প্রমাণ দিতে চাদরে রক্তের দাগ লাগা জরুরি। কিন্তু কুমারি নয় এমন মেয়েদের জন্য বিয়ের প্রথম রাতে ব্যবহারের জন্য নকল রক্ত এখন পাওয়া যাচ্ছে দোকানেই। অনলাইট শপিং সাইট আমাজনে বহুল বিক্রিত পণ্য 'আই ভার্জিন' নিযে ইতিমধ্যেই শোরগোল সৃষ্টি হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিয়ের আগে মেয়েদের কুমারি থাকার যে ট্যাবু তাকেই একপ্রকার সমর্থন করে চলেছে এই পণ্যটি- আর সেই জন্যই নেটিজেনদের সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে এই পণ্যকে। 

পণ্যটির নাম ‘I-Virgin, Blood for the First Night’, যা একটি পিল, যা হল- 

  • উচ্চ মানের ব্লাড-পাউডার
  • বিয়ের প্রথম রাতের জন্য নকল রক্ত
  • যার কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, কোনও সিরিঞ্জও ব্যবহার হয় না
  • এটি একেবারেই বিষাক্ত নয়, অ্যানেস্থেশিয়ার প্রয়োজন নেই
  • কোনও সার্জারির প্রয়োজন নেই। সহজ, দ্রুত, নিরাপদ এবং সুবিধাজনক


পণ্যটির এই তথাকথিত গুণমাণের কথা আমরা বলছি না। এইধরণের পণ্যের অনুমোদনকারী সংস্থা আমাজনের তরফ থেকেই এই ধরণের সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে, যা কুমারিত্বের ভ্রান্ত ধারণাকে সমর্থন করে। আর এই ধরণের পণ্যের বিক্রি কি আদৌ এইভাবে সমর্থন করা যায়?-সেই নিয়েও একাধিক মহলে উঠছে প্রশ্ন!




কুমারীত্ব নিয়ে ভারতীয় ধ্যান ধারণা- ভারতে কনজারভাট বর্ণের একটা ঐতিহ্য হল বিয়ের রাতে নববধুকে তার চরিত্র পরীক্ষা করা হয়। স্বামী-স্ত্রী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর একটি সাদা কাপড়ই বিচার করে মেয়েটি কুমারি কিনা! আর এই পরীক্ষাটি তদারকির দায়িত্বে থাকেন কাস্ট কাউন্সিল। এই পরীক্ষায় মেয়েটি উত্তীর্ণ হলে পঞ্চায়েতকে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়ারও রীতি রয়েছে। তবে যদি মেয়েটি এই কুমারীত্ব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়, তাহলে মেয়ের পরিবারের কাছ থেকে বেশ মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা করা হয় এবং তাঁকে সমাজ থেকেও ব্রাত্য করা হয়। 

এই ধারণা অনুসারে একজন মেয়ে কুমারী কি না তা সহবাসের সময়ে রক্তক্ষরণ এবং একটি অখণ্ড হাইমেন বা সতীচ্ছদ-এর ওপর নির্ভর করে। এইভাবে প্রমাণ হয় যে ওই মহিলার আগে কারওর সঙ্গে যৌনসম্পর্ক ছিল না। এমন একটা দেশে যেখানে একটি মেয়ে কুমারী কিনা তা দিয়েই তার মুল্য নির্ধারণ করা হয়, যা কি না একেবারেই বিজ্ঞানসম্মত নয়, সেই সম্পর্কিত পণ্য বাজারে বিক্রি করা কতখানি যুক্তিসঙ্গত তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

চিকিৎসাশাস্ত্র অনুসারে, অনেক কঠিন শারীরিক পরিশ্রম জিমন্যাস্টিক, সাঁতার, নাচের জন্য বা অনেকসময়ে টেম্পন ব্যবহার করার ফলেও হাইমেনকে ছিন্ন করতে পারে, আবার অনেক অনেক মহিলা এমনকি হাইমেন ছাড়াও জন্মগ্রহণ করেন। আর তাই এই ধরণের পণ্য একটা ভ্রান্ত বিশ্বাসের প্রতি ইন্ধন যোগায়, যা একেবারেই যুক্তিসম্মত নয় বলেই মনে করছে সমাজের একটা বিরাট অংশ।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.