ভগবান শিব যে রাক্ষসকে দেখে ভয়ে পালিয়েছিলেন, কিন্তু কেন?


Odd বাংলা ডেস্ক: ভষ্মাসুর/ভস্মাসুর ছিলেন ভগবান শিবের একনিষ্ঠ ভক্ত। এক সময় তিনি কঠোর তপস্যা শুরু করেন। তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাকে বর দিতে উপস্থিত হলেন। আরাধ্য দেবতাকে সামনে পেয়ে ভষ্মাসুর তাকে ভক্তিভরে প্রণাম করলেন। শিব ঠাকুর বললেন, বলো বৎস তুমি কী বর চাও? ভষ্মাসুর অমরত্ব প্রার্থনা করলেন। মহাদেব বললেন, তা সম্ভব নয়, তুমি অন্য কোনো বর প্রার্থনা করো। অনেক ভেবে ভষ্মাসুর বললেন, হে প্রভু, তাহলে আমাকে এমন শক্তি প্রদান করুন যাতে আমি যার মাথায় হাত রাখবো সে তৎক্ষণাৎ পুড়ে ভষ্ম হয়ে যাবে।

শিব ঠাকুর বললেন, তথাস্তু। মহেশ্বরের কাছ থেকে সকলকে ভষ্ম করার বর পেয়েছিলেন বলে তার নাম হয়েছিল ভষ্মাসুর। বর পেয়ে ভষ্মাসুর তার শক্তি পরীক্ষা করতে চাইলেন। সামনে তখনো শিব ঠাকুর দাড়িয়ে আছেন। ভষ্মাসুর ভাবলেন তাহলে শিব ঠাকুরের উপরই পরীক্ষাটা করা যাক। ভাবনা মাত্রই তিনি হাত তুলে শিব ঠাকুরের দিকে এগিয়ে গেলেন। অবস্থা বেগতিক দেখে শিব ঠাকুর প্রাণপণে ছুট লাগালেন। ভষ্মাসুরও ছাড়বার পাত্র নন। তিনিও মহাদেবের পিছু পিছু ছুটলেন। উপায়ান্তর না দেখে শিব ঠাকুর ভগবান বিষ্ণুর স্মরনাপন্ন হলেন। সব শুনে বিষ্ণু মোহিনী রূপ ধারণ করে ভষ্মাসুরের সামনে উপস্থিত হলেন।

মোহিনীর মোহময়ী রূপ দেখে শিব ঠাকুরের কথা ভুলে গিয়ে তিনি তার দিকে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলেন। প্রাথমিক বিহ্বলতা কাটিয়ে উঠে ভষ্মাসুর মোহিনী রূপী বিষ্ণুকে বিবাহের প্রস্তাব দিলেন। মোহিনী বললেন, আমি তাকেই বিবাহ করবো যে মনোরম নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে আমার চিত্ত বিনোদন করতে পারবে। ভষ্মাসুর বললেন, কেমন নৃত্য তোমার মনোরঞ্জনের উপযোগী? আমাকে শিখিয়ে দাও। তখন মোহিনী নাচের বিভিন্ন মুদ্রা তার সামনে উপস্থাপন করতে লাগলেন এবং ভষ্মাসুর তাকে অনুসরণ করতে লাগলেন। এক পর্যায়ে মোহিনী এক বিষেশ ভঙ্গিমায় নিজের মাথায় হাত রাখলেন। ভষ্মাসুরও তাকে অনুকরণ করে নিজের মাথায় হাত রাখলেন। সঙ্গে সঙ্গে নিজের শক্তিতে নিজেই পুড়ে ছাই হয়ে গেলেন ভষ্মাসুর।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.