মহাত্মা গান্ধীর ছেলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন, নাম আবদুল্লা গান্ধী



Odd বাংলা ডেস্ক: মানব ইতিহাসের শুরু থেকেই খ্যাতনামা পিতার বিদ্রোহী সন্তানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এই উপমহাদেশের দুই মহানায়ক করমচাঁদ (মহাত্মা) গান্ধী এবং মোহাম্মদ আলী জিন্নাহও এর ব্যতিক্রম নয়।
পিতার বিরুদ্ধে গান্ধীর পুত্রের বিদ্রোহী বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। বিষয়টি গান্ধীকে কিছু সময়ের জন্য হলেও বেশ বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছিল। তবে এখন তা বিস্মৃত অধ্যায়।
গান্ধীর বড় ছেলে হরিলাল ছিলেন সত্যিই একজন বিদ্রোহী সত্তা।একজন পিতা ও একজন সংস্কারক হিসেবে গান্ধীর কাজে মারাত্মক ত্রুটি রয়েছে বলে জানিয়েছেন হরিলাল। তিনি শুধু গান্ধীকে তার সন্তানদের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন ও পিতার কর্তব্য পালনে ব্যর্থতার অভিযোগই আনেননি, সেই সাথে তিনি যে আদর্শ প্রচার করছেন তার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত তিনি আলাদা রাস্তা বেছে নিয়েছিলেন।
এই বিদ্রোহী সম্পর্কের ব্যাপারে গান্ধীর নাতি (অর্থাৎ হরিলালের ভাইয়ের ছেলে) রামচন্দ্র গান্ধী বলেছেন, হরিলাল অন্য ব্যক্তিদের সন্তানদের প্রতি বাপুর অনুভূতির ব্যাপারটি বুঝতে পারেননি, যেমন নাথুরাম গডসে বুঝতে পারেনি দেশ ভাগের পর মুসলমান সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে গান্ধীর উদ্বেগের বিষয়টি।
রামচন্দ্রের এই বক্তব্যে কিছুটা সত্যতা রয়েছে। তবে হরিলালকে গডসের সাথে তুলনা করা শুধু অন্যায়ই নয়, অমানবিকও বটে। গডসের থেকে হরিলাল সব দিক থেকেই ছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন।
পিতার বিরুদ্ধে হরিলালের বিদ্রোহের সূচনাটিকে অযৌক্তিক বলা যায় না। তিনি উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য অত্যন্ত যৌক্তিকভাবেই পিতার কাছ থেকে সাহায্যের আশা করেছিলেন। কিন্তু নিজের তৈরি করা আদর্শের প্রতি অটল গান্ধী সিদ্ধান্ত নিলেন সেই অর্থ তার পরিবারের উন্নতির জন্য নয়, জনগণের কল্যাণে ব্যয় হওয়া উচিত। তাই তিনি হরিলালের অনুরোধ অগ্রাহ্য করলেন ও উচ্চশিক্ষার জন্য জনৈক পারসি যুবককে লন্ডন পাঠালেন। পিতা ও পুত্রের মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টির এটাই মূল কারণ। হরিলাল এটাকে তার প্রতি একটা মারাত্মক অবিচার হিসেবে বিবেচনা করলেন এবং তা থেকেই তিনি গান্ধীর পুরো মিশনারি কর্মসূচির বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে থাকলেন। খুব অল্প সময়ের জন্য হরিলাল গান্ধী ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং নিজের নাম রেখেছিলেন আব্দুল্লা গান্ধী।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.