আজও শাড়ি পরেই মায়ের বরণ করে পুরুষরা


Odd বাংলা ডেস্ক: রীতি মেনে সাতবার প্রতিমাকে প্রদক্ষিণ করা হয়। বিজোড় সংখ্যায় থাকেন পুরুষরা। তাঁদের আচার-আচরণ হয় নারীসুলভ। কোমর দুলতে থাকে, চপল চরণে ললিত ছন্দ। ভিড় যখন ভেঙে পড়ে, তখন সিঁড়ি বেয়ে উঠে দেবীর আরও কাছে পৌঁছে যান তাঁরা। মুখে সন্দেশ গুঁজে দেন। একে একে সকলে বরণ করেন জগদ্ধাত্রীকে। চন্দননগর-ভদ্রেশ্বর অঞ্চলের সবচেয়ে প্রাচীন জগদ্ধাত্রীর ঠিকানা এই তেঁতুলতলায়। কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের দেওয়ান দাতারাম সুর ১৭৬৩ সালে এই পুজোর সূচনা করেন। কৃষ্ণনগরের রাজবাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজোর এক বছর পরেই। ভদ্রেশ্বরগঞ্জের পুজোর বয়স ২১০ বছর। 

এই পুজো কমিটির কর্তা প্রদীপ মণ্ডল বলেন, ‘আমরাই মাকে বরণ করি, মহিলারা নন। একেবারে আলাদা অনুভূতি।’ কিছুক্ষণের জন্য রূপান্তর কামনা কি জাগে মনে? তেঁতুলতলার গোরাচাঁদ দাসের ভাষায়, ‘মায়ের কাছে নিবেদনটাই বড়। সেটাই মনে থাকে। এই দিনটা আমাদের কাছে অন্যরকম।’এই বিস্ময়কর প্রথার উৎস নিশ্চিত ভাবে বলা মুশকিল।

দাতারামের দুই কন্যা ছিলেন জমিদারনি। তাঁরাই পুজোর আয়োজন করতেন। তাঁদের প্রয়াণের পর ভদ্রেশ্বরের মানুষরা পুজোর ভার নেন। সেই দুই কন্যার স্মরণে সম্ভবত মহিলার বেশে পুরুষের বরণের প্রথা চালু হয়।’ প্রবীণদের কারও কারও মতে, দু’শো বছর আগে হয়তো পুজোয় মহিলাদের অংশগ্রহণ তেমন ছিল না। তাই নারীর ভূমিকা নিতেন পুরুষরা। আর সেটাই আজও চলে আসছে।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.