মাসিকের সময় কি সত্যিই ঠাকুর ঘরে ঢোকা যায় না? কী বলছে ভারতীয় শাস্ত্র
Odd বাংলা ডেস্ক: ভারতের অধিকাংশ মেয়েদের কাছে ম্যানুস্ট্রেয়েশন বা মাসিক আজও লজ্জার ঘটনা। বিজ্ঞানের যুগে দাড়িয়ে আজও আমরা এসব নিয়ে কুসংস্কারের অন্ধকারে। এই স্বাভাবিক ও শারীরিক প্রক্রিয়া নাকি অপবিত্র, অসম্মানজনক, এমনটাই আমাদের দেশের মেয়েদের শিখিয়ে আজও বড় করা হয়। সমীক্ষা বলছে ভারতে ৭০ শতাংশ মেয়েদের ঋতুস্রাব নিয়ে নীরব থাকতে শেখানো হয়। ৪৫ শতাংশ মেয়েদের কাছে ঋতুস্রাব অস্বাভাবিক।
ভারতীয় পরিবারে আজও শেখানো হয় পিরিয়ড লজ্জার। পিরিয়ডের সময় নিরামিষ খাওয়ানো হয়। মেয়েদের এটাও শেখানো হয় যে এই সময় বাড়ির গুরুজনদের ধারে কাছে ঘেষতে না, রান্নাঘরে ঢুকতে না। এমনকি ঠাকুর ঘরে ঢোকাও নাকি পাপ এই সময়।
গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যকর্মীরা মাসিকের রক্তকে বদ রক্ত বলে। এই সময় হিসেব মত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিৎ, কিন্ত মেয়েদের এই সময় বাধ্য হয়ে নিরামিষ খেতে হয়। ২০১৫-১৬ সালের স্বাস্থ্য সমীক্ষা বলছে গ্রামীন ভারতে ৮৯ শতাংশ মেয়ে কাপড় ব্যবহার করে ২ শতাংশ মেয়ে তুলো ব্যবহার করে আর ৭ শতাংশ মেয়েদের দামী স্যানিটারি ন্যপকিন কেনার সামর্থ রয়েছে।
কুসংস্কারের জন্য অনেক সময়ই সংক্রমন ছড়িয়ে যায়। মহিলা কমিশনের চেয়ার পার্সন সুনন্দা মুখার্জীর কথায় “প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়েরা এই সময় নারকেলের খোলের উপরে বসে থাকে, তারপর পুকুরে স্নান করে কাপড় ধুয়ে নেয়।
সেক্ষেত্রে কাপড় জীবানুমুক্ত করার জন্য ডেটল বা সাবান কেনার সামর্থ তাদের নেই, আবার সেই কাপড় রোদে শুকাতে গেলে পুরুষরা দেখে ফেলবে, এই কুসংস্কারও রয়েছে। তাই তারা সেসব কাপড় শুকাতে বাড়ির গোয়ালঘর ব্যবহার করে থাকে। সেক্ষেত্রে সংক্রমনের সম্ভবনা বেশি থাকে।”
সাধারনভাবে সমাজে প্রচলিত মেয়েদের মাসিক হলে চারদিনের দিন স্নান করে শুদ্ধ হতে হয়। সদবা মেয়েদের নাকি সিদুরও পরতে নেই এসময়। তাছাড়া কোনো শুভ কাজে অংশগ্রহন নিষিদ্ধ এই সময়। বিশেষকরে ঠাকুর ঘরে ঢোকা, ঠাকুরের কাজ করা, বাসন ধোয়া এসব থেকে তাদের বিরত থাকতে হয়।
তবে এর সদুত্তর কোনো গ্রন্থ ঘাটাঘাটি করে পাওয়া যায়নি। কোনো সাধু সন্যাসীকে জিজ্ঞেস করে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। এমনকি এখনও এই ব্যাপারটা এতটাই কুসংস্কার যে গ্রামীন ভারতে অনেক মেয়ে ঋতুস্রাবর জন্য স্কুল ছাড়তে পর্যন্ত বাধ্য হয়েছে। কিন্তু এর প্রকৃত সমাধান এখনো মেলেনি এই আধুনিক যুগেও।
Post a Comment