মেয়েদের শিক্ষিত করতে প্রতিদিন ১২ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে স্কুলের বাইরে ৪ঘণ্টা অপেক্ষা করেন এই আফগান পিতা


Odd বাংলা ডেস্ক: বাবার সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক এক অটুট বন্ধনে বাঁধা। বলা হয় প্রত্যেক মেয়েই নিজের স্বামীর মধ্যে তাঁর বাবাকে খোঁজে। কিন্তু কন্যাসন্তান হওয়ায় নিজেদের মেয়েকে খুন করেছেন, বা অবাবের তাড়নায় কন্যা সন্তানকে বেচে দিয়েছেন এমন বাবার নজিরও রয়েছে। কিন্তু বাবা- মেয়ের সম্পর্ক যে পৃথিবীর যে-কোনও সম্পর্কের তুলনায় শ্রেষ্ঠ। 

জীবনে সন্তান-সন্ততির জন্য কেবলমাত্র যে মায়েরাই ত্যাগ স্বীকার করে তা নয়, বাবারাও কিন্তু সন্তানের জন্য জীবনে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেন, তা প্রমাণিত হল এই আফগান বাবার কাহিনির প্রকাশ্যে আসার পর।  আফগানিস্তানের সাফি আলির গল্প নিয়েই এখন সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া। 

মিয়া খান তাঁর মেয়েদের মনে শিক্ষার আলো জ্বালাতে নিজের বাইকে করে প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে মেয়েকে নুরিয়ানা স্কুলে পৌঁছে দেন। আফগানিস্তানের জন্য সুইডিশ কমিটি দ্বারা পরিচালিত এই স্কুলে নিজের মেয়েকে শুধু পৌঁছে দেওয়াই নয়, স্কুল শেষে মেয়ে যাতে নিরাপদভাবে বাড়ি ফিরে আসতে পারে সেই জন্য নিজে ওই স্কুলের বাইরে চার ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করেন, যতক্ষণ না মেয়ের ক্লাস শেষ হয়। 

ভদ্রলোক নিজে কোওদিনও শিক্ষার আলো লাভ করেননি, কিন্তু তিনি চান যে, তাঁর মেয়ে যেন পড়াশোনা করে একজন বড় ডাক্তার হয়ে উঠতে পারেন, কারণ তাঁর গ্রামে একজনও চিকিৎসক নেই। আর সেই কারণেই তিনি নিজের মেয়েকে সেরা শিক্ষা প্রদান করতে চান, যাতে সে তার নিজের জীবনে একজন স্বনির্ভর মানুষ হয়ে উঠতে পারে। 

মিয়া খানের সাত মেয়ে এবং ২ ছেলে রয়েছে। হার্টের অসুখের জন্য তিনি নিজে আজকাল আর কাজকর্ম কিছু করতে পারেন না। তাঁর দুই ছেলেই এখন কাজ করে সংসারের হাল ধরেছে। আর মেয়েদের তিনি সন্ধে হলেই পাঠিয়ে দেন স্থানীয় এক শিক্ষকের বাড়িয়ে টিউশন পড়তে। তাঁর গল্প শুনে নেটিজেনরা তাঁকে 'সুপার ড্যাড' আখ্যা দিয়েছেন। 
Blogger দ্বারা পরিচালিত.