২০১৯ সালে প্রকাশিত সেরা ৩টি বই


Odd বাংলা ডেস্ক: ২০১৯ সালের ফিকশন আর নন-ফিকশন মিলিয়ে হাজার হাজার বই থেকে সেরা দশটি নির্বাচন করা সত্যিকার অর্থেই বেশ চ্যালেঞ্জিং একটা ব্যাপার। আর এই চ্যালেঞ্জকেই বেশ সাগ্রহে গ্রহণ করে বিশ্ববিখ্যাত পত্রিকা দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। সেজন্যেই বিশ্বব্যাপী বইপড়ুয়ারা সারাটা বছর পার করে শেষের মাসটায় এসে চোখ রাখে এই পত্রিকার সেরা দশটি বইয়ের তালিকা দেখার জন্য। আর আজকের আয়োজনে থাকছে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এর দৃষ্টিতে ২০১৯ সালের সেরা দশটি বইয়ের বিবৃতি। 

 মিডনাইট ইন চেরনোবিল - অ্যাডাম হিগিনবোথাম 

সত্যিকারের রিপোর্ট এবং নতুন করে করা গবেষণার উপর ভিত্তি করে চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিপর্যয়ের চূড়ান্ত, নাটকীয় এবং অনুচ্চারিত আর অকথিত গল্পগুলো প্রকাশ পেয়েছে মিডনাইট ইন চেরনোবিল বইটিতে অ্যাডাম হিগিনবোথামের রচনায়। 


বিশ্ব ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্ত হচ্ছে ১৯৮৬ সালের এপ্রিল মাসের ২৫ তারিখ। এই বিপর্যয়টি কেবল পারমাণবিক শক্তি এবং একে আবিষ্কার করা বিজ্ঞানের সম্পর্কেই বিশ্বকে উপলব্ধি দেয় না, বরং আমাদের এই গ্রহের নাজুক বাস্তুসংস্থান সম্পর্কেও আমাদেরকে এক উপলব্ধি দিয়েছিল। ঘটনাস্থলে  ৩০ কিলোমিটার জুড়ে কাঁটাতারের বেড়ার ওপাড়ে পরিত্যক্ত বাড়িঘর, খেলার মাঠ, মরচে পড়া দূষিত ট্রাক আর হেলিকপ্টারের জঙ্গল; এসবের মধ্যে থাকা অদৃশ্য হত্যাকারী সেই বিকিরণের ঘটনাটিকে চিরকালের জন্য স্থির করে দেয়া হয়েছে। 

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পেছনের অন্যতম বড় কারণ বলে ধরা হয় এই চেরনোবিল বিপর্যয়কে। মস্কোর জন্য এটা যতটা রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয় ছিল ঠিক ততটাই পরিবেশগত আর বৈজ্ঞানিক পর্যায়েরই ছিল। সর্বমোট ১৮ বিলিয়ন রুবলসের চেরনোবিল বিপর্যয় ইতিমধ্যেই টলায়মান অর্থনীতিকে দেউলিয়া করে দেয় এবং এর জনগণের কাছে প্রকাশ হয়ে যায় যে মিথ্যা আশ্বাস আর আস্থার উপর টিকে আছে তাদের রাষ্ট্র।


 দ্য ইয়োলো হাউজ - সারাহ এম. ব্রুম 

দ্য ইয়োলো হাউজ সারাহ এম. ব্রুমের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। এটাই তার রচিত প্রথম গ্রন্থ যা ২০১৯ সালে প্রকাশ পায়। আর এরই মধ্যে বইটি নন-ফিকশন ক্যাটাগরিতে তাকে ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ পুরষ্কার এনে দিয়েছে। 

১৯৬১ সালে সারাহ এম. ব্রুমের মা আইভরি মেই নিউ অরলিন্সে একটা ছোট্ট ছিমছাম বাড়ি কেনেন এবং নিজের পৃথিবীটাকে গড়ে তোলেন সেই ছোট্ট বাড়ির ভেতরে। বিধবা আইভরি মেই, সারাহর বাবা সাইমন ব্রুমের সাথে আবারো বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের যৌথ পরিবারে সন্তানদের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় বারোতে। কিন্তু সাইমন মারা যাবার পর, সারাহর জন্মের ছয় মাস পরে, ইয়োলো হাউজটাই আইভরির ত্রয়োদশ সন্তানে রূপান্তরিত হয়ে যায়। 



সারাহ এম. ব্রুমের দ্য ইয়োলো হাউজ বইটি আমেরিকার অন্যতম পৌরাণিক কাহিনীর শহরগুলোর একটির অবহেলিত অঞ্চলে তাদের পরিবার এবং বাড়ির সাথে তাদের সম্পর্কের একশো বছরের ইতিহাস বলে। দ্য ইয়োলো হাউজ আদতে জায়গা, শ্রেণী, জাতি, বৈষম্যের পচা ঘা এবং আভ্যন্তরীণ লজ্জার এক উজ্জ্বল স্মৃতি বহন করছে। 

দ্য ক্লাব - লিও ড্যামরোশ 

১৯৭৩ সালের এক বিকেলবেলার কথা। চিত্রশিল্পী জোশুয়া রেনল্ডস তার বন্ধু স্যামুয়েল জ্যাকসনকে প্রস্তাব দেয় যে, লন্ডনের টার্ক হেড ক্লাব নামের রেস্তোরাঁতে প্রতি শুক্রবার কয়েকজন বন্ধুকে মধ্যরাত অবধি খাবার, পানীয় এবং কথা বলার নিমিত্তে তাদের সাথে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানানো হবে। শেষপর্যন্ত এই দলের সদস্যদের মধ্যে এডমুন্ড বার্ক, অ্যাডাম স্মিথ, এডওয়ার্ড গিবন এবং জেমস বসওয়েলের মতো মহারথীরা অন্তর্ভুক্ত হয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে এই ক্যাফে 'দ্য ক্লাব' নামেই ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। 



আঠারো শতকের শেষের দিকে অনিশ্চিত, উত্তেজনাপূর্ণ এবং নির্মম এক বিশ্বের কথা নিজের লেখনশৈলীতে ফুটিয়ে তুলেছনে ড্যামরোশ। এটি এমন একদল লোকের গল্প যাদের চিন্তাধারা কেবল তাদের নিজেদের জন্যই নয়, বরং আমাদের জন্যও বেশ গুরুত্ব বহন করেছিল এবং এখনো করে। 
Blogger দ্বারা পরিচালিত.