সমস্ত প্রতিবন্ধকতা পিছনে ফেলে মিস ইউনিভার্স ২০১৯-এর মুকুট পরলেন আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ মডেল জোজিবিনি তুনজি


Odd বাংলা ডেস্ক: মিস ইউনিভার্স ২০১৯-এর শিরোপা ছিনিয়ে নিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার মডেল জোজিবিনি তুনজি। এই মুহূর্ত কিন্তু কোনও ঐতিহাসিক মুহূর্তের তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। পুয়েত্রো রিকো থেকে ম্যাডিসন আন্ডারসন এই প্রতিযোগীতায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন এবং মেক্সিকোর সোফিয়া আরাগন এই প্রতিযোগীতায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন। 

তবে তুনজির কাছে এই মুহূর্তটি ছিল বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তিনি হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় মহিলা যিনি মিস ইউনিভার্সের শিরোপা জিতেছেন। এর আগে ১৯৭৮ সালে মিস ইউনিভার্সের শিরোপা জিতে নিয়েছিলেন দক্ষিন আফ্রিকার এক সাংবাদিক মার্গারেট গার্ডিনার, এবং ২০১৭ সালের মিস ইউনিভার্সের শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকারই ডেমি-লেইহ নেল-পিটার্স। 

এবারের মিস ইউনিভার্স তুনজি দক্ষিণ আফ্রিকার সোলো শহরে জন্মগ্রহণ করেন। শহর লাগোয়া একটি গ্রাম সিডওয়াডওয়েনিতে তাঁর বড় হয়ে ওঠা। আরও দুজন বোন রয়েছে তার। স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার পর ২০১৮ সালে কেপ পেনিনসুলা ইউনিভার্সিটি অব টেকনলজি থেকে পাবলিক রিলেশন এবং ইমেজ ম্যানেজমেন্টে স্নাতক হন তুনজি। কলেজে র জন্য কেপ টাউনে বসবাস করতে শুরু করেন তুনজি। এরই মাঝে ওগিলভি কেপটাউনে জনসংযোগ বিভাগে ইন্টার্ন হিসাবে কাজ করেছেন তুনজি। 

মিস ইউনিভার্স ২০১৯-এর খেতাব জিতে নেওয়ার আগে কিন্তু মিস সাউথ আফ্রিকা ২০১৯-এর পালকও যোগ হয় তাঁক মুকুটে। তবে সৌন্দর্য প্রতিযোগীতায় সেরার তকমা জিতে নেওয়ার সফরটি তুনজির জন্য কিন্তু খুব একটা সহজ ছিল না। এর আগে মিস সাউথ আফ্রিকা ২০১৭-তে অংশ নেন তিনি। সেরা ২৬ সেমি ফাইনালিস্টদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেও, সেরা ১২-র তালিকায় নাম লেখাতে পারেননি তুনজি। কিন্তু তা সত্ত্বেও থেমে না থেকে ২০১৯-এর মিস সাউথ আফ্রিকা হিসাবে নিজেকে যেমন তুলে ধরলেন, তেমনই মিস ইউনিভার্স ২০১৯-এর শিরোপাও জিতে নিলেন তিনি। 

শুধু তাই নয় ২০০১ সালে অঙ্গোলার লেইলা লোপস-এর পরে তিনিই আর এক কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা যিনি মিস ইউনিভার্সের খেতাব লাভ করলেন। এরও আগে ১৯৭৭ সালে জানেল্লা কমিসিওং হলেন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা যিনি এই খেতাব অর্জন করেছিলেন। 

মিস ইউনিভার্সের খেতাব অর্জন করার পর তুনজি জানিয়েছেন, 'আমি এমন এক বিশ্বে বেড়ে উঠেছি, যেখানে আমার মতো গায়ের রঙ এবং আমার মতো চুলের মহিলাকে কেউ কখনওই সুন্দর বলে গণ্য করে না। তবে আমি মনে করি আজ থেকেই এই ধ্যানধারণা বন্ধ হওয়া উচিত। আমি মনে করি আজকের শিশুরা যখনই আমর দিকে তাকাবে তখনই তাঁরা নিজেদের চেহারার প্রতিফলন আমার মধ্যে দেখতে পাবে।'

মডেলিং ছাড়াও তুনজি একজন সমাজকর্মীও বটে যিনি লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি বই পড়ার প্রতিও তাঁর বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে। ছোটবেলা থেকেই নিজের ঠাকুমাকে রোল মডেল মনে করেন তুনজি। 
Blogger দ্বারা পরিচালিত.