পার্লামেন্টের সদস্য করছে হস্তমৈথুন, দেশ জুড়ে MeToo ঝড়
Odd বাংলা ডেস্ক: হস্তমৈথুনরত যে পুরুষের ছবি নিয়ে এত হৈচৈ, তিনি একজন সদ্য নির্বাচিত এমপি জোওহেইর মাখলুফ। তবে গাড়িতে বসে হস্তমৈথুনের কথা অস্বীকার করে মিস্টার মাখলুফ বলছেন, তিনি একজন ডায়াবেটিক রোগী, সে সময় তিনি আসলে একটি বোতলে প্রস্রাব করছিলেন। কিন্তু এই কথা মানতে মানতে নারাজ বিক্ষুব্ধ নারীরা। তারা 'এনা জেডা' লেখা টি-শার্ট পরে পার্লামেন্টের বাইরে বিক্ষোভ করে এ ঘটনার বিচার চেয়েছেন। একজন এমপি হিসেবে জোওহেইর মাখলুফ কিছু সুরক্ষা পান। কিন্তু তারপরও এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এমপি জোওহেইর মাখলুফের এই হস্তমৈথুনের ছবিটি তোলেন এক ছাত্রী। তিনি অভিযোগ করেন যে, এই এমপি তাকে হয়রানি করছিলেন।
'হ্যাশট্যাগ- এনা জেডা' প্রতিবাদের সূচনা করে আসওয়াত নিসা বা 'নারীদের কন্ঠ' নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। তারা ফেসবুকে এই নামে একটি ক্লোজড গ্রুপ খোলে যাতে যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীরা এখানে তাদের অভিজ্ঞতা নিরাপদে বলতে পারেন। এই গ্রুপটির একজন মডারেটর রানিয়া সাইদ বলেন, "শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ন এবং অজাচারের (ইনসেস্ট) ঘটনা কিন্তু আমরা যতটুকু স্বীকার করতে চাই তার চেয়ে অনেক বেশি ব্যাপক।" "অনেক পরিবারই আসলে এই বিষয়গুলো গোপন করছে। অনেক পরিবার জানেই না কিভাবে এই সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়।" এই ফেসবুক গ্রুপে এখন যোগ দিয়েছে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। গ্রুপে যোগ দেয়ার জন্য আরও অনেকের আবেদন এখনো অনুমোদনের অপেক্ষায়।
ধর্ষণ, স্বামী কর্তৃক ধর্ষণ এবং যৌন হয়রানির আরও গাদা গাদা অভিযোগ এই গ্রুপে তুলে ধরেছেন নারীরা। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের মধ্যে সামরিক বাহিনী, পুলিশ, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, মিডিয়ার লোকজন থেকে শুরু করে পরিবারের আত্মীয়স্বজন - কেউ বাদ নেই। কেবল যে নারীরাই অভিযোগ করছেন তা নয়, অনেক পুরুষও তাদের অভিযোগ তুলে ধরেছেন এখানে। ফেসবুক গ্রুপে নারীদের এই বিপুল অংশগ্রহণ অবাক করেছে আসওয়াত নিসা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতাদের। "শুরুতে বিশেষ করে নারীরা তাদের চাচা, ভাই, প্রতিবেশি থেকে শুরু করে পাড়ার মোড়ের দোকানিদের ব্যাপারে কত রকমের অভিযোগ যে করেছে", বলছেন রানিয়া সাইদ। আসওয়াত নিসা গ্রুপের মাধ্যমে যোগাযোগ হলো ৩৬ বছরের এক নারীর সঙ্গে, যিনি ১৪ বছর বয়সে নিজের খালুর হাতে যৌন নিপীড়নের শিকার হন।
নিজের বাবার হাতে মার খাওয়ার পর তিনি তার খালা-খালুর কাছে চলে গিয়েছিলেন। "ব্যাপারটা শুরু হয়েছিল আমাকে মুখে চুমু খাওয়া কিংবা আমার স্তনে হাত দেয়ার মাধ্যমে।" "প্রথমে আমি বুঝতে পারিনি তিনি কী করছেন। কারণ তখনো আমার যৌন চেতনা সেভাবে তৈরি হয়নি। আমার সঙ্গে এ নিয়ে কেউ কথাও বলেনি।" কয়েক সপ্তাহ ধরে এরকমটাই চলছিল। তারপর একরাতে তিনি মেয়েটির ঘরে ঢুকলেন। "তিনি আমার ওপর চেপে বসলেন। আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করলেন। আমি চিৎকার করা শুরু করলাম। তিনি ভয় পেয়ে গেলেন। কারণ আমার খালা পাশের ঘরেই ঘুমাচ্ছিলেন।"
এই নারী পরে তার কয়েকজন আত্মীয়-স্বজনকে ব্যাপারটা জানিয়েছিলেন, কিন্তু তারা সবাই ব্যাপারটাকে এই বলে উড়িয়ে দিলেন যে এটা তার প্রতি খালুর বেশি আদর স্নেহের লক্ষণ। "আমার নিজের মা আমাকে বললেন, আমার জীবনেও আছে এমন ঘটনা। আমার মনে হয় না খুব খারাপ কিছু তোমার বেলায় ঘটেছে।" ভয়ে তিনি এই ঘটনা নিয়ে কারও কাছে আর অভিযোগ করেন নি। "যদি আমি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতাম, তাহলে হয়তো আমাদের পুরো পারিবারিক সম্পর্ক নষ্ট করে দিতাম, আমি সেটার দায়ভার নিতে চাইনি।"
সূত্র: রয়টার্স
সূত্র: রয়টার্স
Post a Comment