দলিতের ঘরের কালো মেয়ে কাঁপিয়ে দিয়েছিল সরকার, জন্মদিনে অজানা মায়াবতী


Odd বাংলা ডেস্ক: ১৯৭৭ সালের এক সন্ধ্যা। দিল্লিতে সদ্য কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতায় এসেছে জনতা সরকার। ইন্দিরা গান্ধী প্রচুর ভোটে হেরে গিয়েছেন। এবং  জনতা দলের নেতা রাজনারায়ন তখন সেলিব্রিটি। কারন তিনিই ইন্দিরা গান্ধীকে রায়বেরিলি থেকে হারিয়েছেন। সেই সন্ধ্যায় দিল্লির বুকে জনতা পার্টি একটি অনুষ্ঠান করছিল। যার বিষয় ছিল দলিত সম্প্রদায়ের উন্নতিতে রাজনৈতিক চেতনা জাগিয়ে তোলা। কিন্তু সেখানেই রাজনারায়ন  ও বাকি নেতারা ভুল করে বসলেন। তাঁরা নিজেদের বক্তব্যে দলিতদের জন্য হরিজন শব্দ ব্যবহার করে ফেললেন। বলে রাখা প্রয়োজন এই হরিজন শব্দটাকে দলিতরা অপমান বলে মনে করত। আর তখন মঞ্চে উঠে এল একটি কম বয়সি, কালো ও রোগা মেয়ে। মঞ্চে এসে সে এই নেতাদের নিজের কথার মাধ্যমে কয়েকটা চড় কষিয়ে দিল। সে স্পষ্ট জানিয়ে দিল যে এই নেতারা আসলে মূর্খ। কারন দলিতদের নিয়ে কথা বলতে এসেছে অথচ তাদেরকে হরিজন বলে অপমান করছেন। 

সেদিন মায়াবতী চিৎকার করে রাজনারায়নকে বলেছিলেন। যখন আম্বেদকর সংবিধানে তপশিলি কথাটা ব্যবহার করেছেন আমাদের জন্য তাহলে আপনি কোন ক্ষমতায় আমাদের হরিজন বলে ডাকছেন। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি মায়াবতীকে। ক্রমেই তিনি হয়ে উঠলেন দেশের দলিতদের নায়িকা । কাশিরাম নামক পাঞ্জাব থেকে আগত এক নেতার সঙ্গে মিলে তিনি তৈরি করলেন বহুজব সমাজবাদী পার্টি। 
  1. ১৯৮৯ এর সাধারণ নির্বাচনে দলটি আত্মপ্রকাশ করে। ৩টি আসন পায়। কিন্তু জনতা দলের ভি পি সিংয়ের নেতৃত্বের সরকারে সামিল হয়নি। সামিল হয়নি চন্দ্রশেখরের সরকারে।
  2. ১৯৯১ এর সাধারণ নির্বাচনে ৩টি আসন পায়। কিন্তু কংগ্রেসের নরসিংহ রাওয়ের নেতৃত্বের সরকারে সামিল হয়নি।
  3. ১৯৯৩ এর উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে মাত্র ৬৭টি আসন পায়। বিজেপির সমর্থনে প্রথমবারের মতো মায়াবতী মুখ্যমন্ত্রী হন । পরবর্তীতে সমর্থনের অভাবে ১৩৭ দিনে সরকারের পতন ঘটে।
  4. ১৯৯৬ এর সাধারণ নির্বাচনে ১১টি আসন পায়। কিন্তু বিজেপির বাজপেয়ির নেতৃত্বের সরকারে সামিল হয়নি। সামিল হয়নি দেবগৌড়ার সরকারে। সামিল হয়নি গুজরালের সরকারে।
  5. ১৯৯৬ এর উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে আবারও মাত্র ৬৭টি আসন পায়। এক্ষেত্রেও বিজেপির সমর্থনে দ্বিতীয়বারের মতো মায়াবতী মুখ্যমন্ত্রী হন । এবারে ১৮৪ দিনে সরকারের পতন ঘটে।
  6. ১৯৯৮ এর সাধারণ নির্বাচনে ৫টি আসন পায়। কিন্তু বিজেপির বাজপেয়ির নেতৃত্বের সরকারে সামিল হয়নি।
  7. ১৯৯৯ এর সাধারণ নির্বাচনে ১৪টি আসন পায়। কিন্তু বিজেপির বাজপেয়ির নেতৃত্বের সরকারে সামিল হয়নি।
  8. ২০০২ এর উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে মাত্র ৯৮টি আসন পায়। এক্ষেত্রেও বিজেপির সমর্থনে তৃতীয়বারের মতো মায়াবতী মুখ্যমন্ত্রী হন । এবারে ১ বছর ১১৮ দিনে সরকারের পতন ঘটে।
  9. ২০০৪ এর সাধারণ নির্বাচনে ১৯টি আসন পায়। কিন্তু কংগ্রেসের মনমোহনের নেতৃত্বের সরকারকে সমর্থন জানিয়েছিল ।
  10. ২০০৭ এর উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে ২০৬টি আসন পায়। প্রথমবারের মতো দল পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। চতুর্থবারের মতো মায়াবতী মুখ্যমন্ত্রী হন ।
  11. ২০০৯ এর সাধারণ নির্বাচনে ২১টি আসন পায়। কিন্তু কংগ্রেসের মনমোহনের নেতৃত্বের সরকারকে সমর্থন জানিয়েছিল ।
  12. ২০১২ এর উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে মাত্র ৮০টি আসন পায়।
  13. ২০১৪ এর সাধারণ নির্বাচনে একটিও আসন পায়নি ।
  14. ২০১৭ এর উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে মাত্র ১৯টি আসন পায়।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.