ভারতের জেলে যখনই ফাঁসি দেওয়া হয়, তার দড়ি আসে কেবল এখান থেকে, কেন জানেন


Odd বাংলা ডেস্ক: ফাঁসি দেওয়া মানেই বাজার থেকে এক গাছা দড়ি কিনে এনে ফাঁসি দেওয়া নয়। আমরা অনেকেই হয়তো মনে করি যে মৃত্যু হয়ে গেলেই জেলের সমস্ত দায়িত্ব শেষ। কিন্তু আদতে তা নয়। পয়লা ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টায় ফাঁসি হবে নির্ভয়া কাণ্ডে ৪ দোষীর৷ ফাঁসির দড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে৷ বক্সার জেলে তৈরি করা হয়েছে সেই দড়ি৷ ভারতে মৃত্যুদণ্ডে বরাবর বক্সার জেলেই তৈরি হয় ফাঁসির দড়ি৷ ১৯৪৯ সালের নভেম্বরে গান্ধির হত্যাকারী নাথুরাম গডসের ফাঁসির দড়িও তৈরি হয়েছিল বক্সারেই৷ সংসদ হামলার দোষী আফজল গুরুর ফাঁসি, ১৯৯৩ সালের মুম্বই হামলার দোষী ইয়াকুব মেমন ও ২৬/১১ মুম্বই সন্ত্রাসের জঙ্গি আজমল কাসভ, সকলের ফাঁসি হয়েছে বক্সার জেলের তৈরি করা দড়িতেই৷

কেন বারবার বক্সার? ১৮৮০ সালে ব্রিটিশরা বক্সার জেল তৈরি করেছিলেন৷ বক্সার যুদ্ধের পরপরই তৈরি করা হয় এই জেল৷ এর ৪ বছর পরে ১৮৮৪ সালে ব্রিটিশরা ফাঁসির দড়ি তৈরির একটি মেশিন বসায় বক্সার জেলে৷ তার আগে ফাঁসির দড়ি ভারতে আমদানি করা হত ফিলিপিন্সের রাজধানী মানিলা থেকে৷ সেই সময় মানিলা দড়ি খুব জনপ্রিয় ছিল৷ পরে ফ্যাক্টরি আইনে বক্সার জেল এক্সক্লুসিভ অধিকার পায় ফাঁসির দড়ি তৈরির৷

কী রকম হয় ফাঁসির দড়ি? অন্যান্য দড়ির চেয়ে এই দড়ি আলাদা৷ নরম অথচ খুব শক্ত৷ আবহাওয়া ও জেলের জলের পর্যাপ্ত জোগান দেখেই ব্রিটিশরা ফাঁসির দড়ি তৈরির জন্য বক্সার জেলকেই বেছে নেয়৷ গঙ্গার ধারে অবস্থিত এই জেলে কুঁয়ো রয়েছে৷ দেশের সব জেলে কুঁয়ো নেই৷ কারণ, ব্রিটিশ ভারতে কুঁয়োয় অনেক আসামী ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করত৷ তাই জেলে কুঁয়ো তুলে দেয় ব্রিটিশরা৷ বক্সার জেলে আজও রয়েছে৷

জে-৩৪ নামে এক বিশেষ ধরনের সুতো দিয়ে তৈরি করা হয় ফাঁসির দড়ি৷ এই সুতোর চাষ হয় পঞ্জাবে৷ কাঁচামাল সাপ্লাই করা হয় বক্সারে৷ দড়ি তৈরির একটি নির্দিষ্ট ফর্মুলা আছে৷ যারা এই দড়ি তৈরি করে, তারা ছাড়া কেউ জানে না সেই ফর্মুলা৷

ফাঁসির নিয়ম হল, দড়ি এমন ভাবে তৈরি হবে, যাতে একবারেই দোষীর মৃত্যু হয়৷ কিন্তু শরীরে যেন কোনও আঘাত না থাকে৷ দেহের ময়নাতদন্তের সময় তা পরীক্ষা করে নেওয়া হয়৷
Blogger দ্বারা পরিচালিত.