বিষের ইতিহাস: কোনওটা জাপানে মেরেছিল ৫০০ জনকে আবার কোনওটা ব্যবহৃত হয়েছিল ব্রুসলিকে মারতে
Odd বাংলা ডেস্ক: বিষ। নাম শুনেই হয়তো খানিকটা শিহরণ খেলে যায় শরীরে। বিশ্বে এখন পর্যন্ত বহু ধরনের বিষের সন্ধান পাওয়া গেছে। কিছু পাওয়া যায় প্রাকৃতিকভাবেই। বিভিন্ন উদ্ভিদ বা প্রাণীর শরীরে রয়েছে মারাত্মক সব বিষ। আবার কিছু বিষ তৈরি করেছে মানুষ। এদের কোনটা এতই ভয়াবহ যে সামান্য একটু বিষ লাখ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠতে পারে। বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত মারাত্মক ৫টি বিষ নিয়ে থাকছে এই প্রতিবেদন।
বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত মারাত্মক ৫টি বিষ
সেরিন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেরিন নামে এই বিষাক্ত রাসায়নিক প্রথম ব্যবহার করা হলেও এখনো এই নার্ভ এজেন্টের ব্যবহার হচ্ছে। ১৯৯০ এর দশকে জাপানোর টোকিও সাবওয়েতে হামলায় এই নার্ভ এজেন্ট ব্যবহার করা হয়েছিলো। মানুষ এই রাসায়নিকটির সংস্পর্শে আসলে তার পরিণতি হয় ভয়াবহ। মূলত এটি মানুষের স্নায়ুতন্ত্রকে বিকল করে দেয়। যার ফলে শরীরের নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হয় না। মানুষ কোমায় চলে যায় এবং এক ঘন্টার মধ্যে আক্রান্তের মৃত্যু হয়ে থাকে। এটি সায়ানাইডের চাইতে ২৬ গুন বেশি বিষাক্ত।
ভি এক্স
বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর ও বিষাক্ত নার্ভ এজেন্ট বলা হয় ভি এক্স নামের এই খুনে রাসায়নিকটিকে। যুক্তরাজ্য এই নার্ভ এজেন্টটি তৈরি করেছিলো। মানুষের শরীরে এই নার্ভ এজেন্টটির প্রভাব অনেকটা সেরিনের মতো, তবে আরো ভয়াবহ। এই বিষের সংস্পর্শে আসার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এটি কাজ করা শুরু করে এবং শ্বাস প্রশাস বন্ধ হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তি আধা ঘন্টার মধ্যে মারা যেতে পারে। ১৯৯৩ সালে এই ভয়ংকর নার্ভ এজেন্টটি বিশ্বব্যাপী নিষিদ্ধ করা হয়।
অ্যারো ব্যাঙ
প্রকৃতির অনেক প্রাণীর শরীরে রয়েছে ভয়ংকর সব বিষ। কিন্তু আমাজনের জঙ্গলে খুঁজে পাওয়া এই ব্যাঙটি ছাড়িয়ে গেছে সবাইকে। এই ব্যাঙ এর শরীরে ব্যাট্রাকোটক্সিন নামে এক ধরনের মারাত্মক প্রাকৃতিক বিষ রয়েছে। আকারে হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলের সমান এই ব্যাঙের শরীরে যে পরিমাণ বিষ রয়েছে তা দিয়ে ১০ জন মানুষকে নিমিষেই মেরে ফেলা সম্ভব। এই বিষ একই সাথে নিউরোটক্সিন এবং কার্ডিওটক্সিন। অর্থাত এটি স্নায়ুতন্ত্রকে বিকল করে দেয়, সেইসাথে হৃতপিন্ডের পেশির কাজ বন্ধ করে দেয়। যার মানে দাঁড়ায়, এই বিষ মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু নিশ্চিত।
পোলোনিয়াম
২১ শতকের সবচেয়ে বিধ্বংসী এবং ভয়ংকর বিষ হিসেবে মনে করা হয় এই পোলোনিয়ামকে। বিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে হত্যায় এই বিষ ব্যবহার করা হয়েছিলো। পোলোনিয়াম ২১০ এতটাই বিষাক্ত যে এটি সায়ানাইডের চাইতে আড়াই লাখ গুন বেশি বিষাক্ত। মাত্র এক গ্রাম পোলোনিয়াম বিষ দিয়ে এক কোটিরও বেশি মানুষকে নিমিষের মধ্যে মেরে ফেলা সম্ভব। এটি শুধু বিষই নয়, তেজস্ত্রিয়ও। এই বিষ থেকে আলফা কণা নির্গত হয় যা শরীরে কোষ ধ্বংস করে দেয়।
বোটোলিনাম টক্সিন
মানুষের জানা যে কোনো বিষের মধ্যে এটিই সবচাইতে বিষাক্ত। বিশ্বাস করা হয়, এক চা চামচ বোটোলিনাম দিয়ে এক বিলিয়ন মানুষকে মুহুর্তেই মেরে ফেলা সম্ভব। এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবে এই বিষটি তৈরি হয়। বিষটি নিউরোটক্সিন হওয়ায় তা সরাসরি আঘাত করে মানুষের স্নায়ুতন্ত্রে। স্বল্প মাত্রায় এই বিষটি অতিরিক্ত ঘামা বা মাইগ্রেইনের ব্যাথার ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়।
Post a Comment