মণীষার মতো অন্য মেয়েদেরও এগিয়ে যাওয়ার বার্তা 'ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি'


Odd বাংলা ডেস্ক: আগামী ৬ই মার্চ মুক্তি পেতে চলেছে উইন্ডোজ প্রোডাকশনের ছবি 'ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি'। এই সিনেমার মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিতাভরি। কিন্তু রিতাভরির যে চরিত্র এই সিনেমাতে সেটাই বাস্তব জীবনে করে দেখিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মণীষা শেতে। হ্যাঁ তিনি সত্যিই মহিলা পুরোহিত। বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুজোও করেন। এবং তার বদলে দক্ষিণাও নিয়ে থাকেন। এই পেশায় আসার জন্য প্রথম জীবনে দুই গুরুজির কাছে তালিম নিয়েছিলেন মণীষা। কীভাবে বিভিন্ন আধ্যাত্মিক ও শাস্ত্রীয় রীতি পালন করতে হয়, পুজো করতে হয়, তা তাঁকে শিখিয়েছিলেন ওই গুরুজিরাই।

মণীষা এখন বিদেশেও পুজো করতে যান

কমার্সে স্নাতক মণীষা স্নাতকোত্তর করেন ইন্ডোলজিতে। যেখানে ভারতের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে বিস্তর পড়াশোনা করতে হয়। এই সময় থেকেই মহিলা পুরোহিত হওয়ার পোকা মাথায় নড়ছিল তাঁর। তাই পুনেতেই ‘জেনানা প্রাবধিনি’ বা নারী শক্তি, শিক্ষার বিষয় নিয়ে চর্চা শুরু করেন তিনি। শাস্ত্রীয় ক্রিয়াকলাপ এবং তা কেন পালন করা জরুরি তা নিয়ে বিস্তর পড়াশোনা শুরু করেন মণীষা। ‌নাস্তিকরা এগুলোকে কুসংস্কার বলে উড়িয়ে দিলেও এর পিছনে একটা বিজ্ঞান কাজ করছে জেনে মণীষার উৎসাহ আরও বেড়ে যায়। প্রবল আগ্রহ তাঁকে বিষয়গুলির গভীরে পৌঁছতে সাহায্য করছিল। দ্রুত রপ্ত হচ্ছিল বিভিন্ন পাঠ। সমস্যাটা হল বাড়িতে। একদিন মণীষা বাড়িতে খোলাখুলি জানিয়ে দিলেন তিনি মহিলা পুরোহিত হতে চান। এ নিয়ে আরও পড়াশোনা করতে চান। বাড়ির মেয়ের এমন এক অদ্ভুত আবদারে চোখ কপালে ওঠে সকলের। মণীষার কথায় তাঁরা বুঝতেই পারছিলেন না সব ছেড়ে কেন মহিলাদের জন্য এমন এক অপ্রিয় পেশা বেছে নিতে চাইছেন তিনি। তবে হাল ছাড়েন নি মণীষাও। বাড়ির সকলকে তিনি একসময়ে বোঝাতে সক্ষম হন কেন তিনি এই পেশাকে বেছে নিচ্ছেন। তাঁর দৃঢ়সংকল্প মনোভাবের সামনে এক সময়ে হাল ছাড়েন সকলে। মেনে নেন মণীষার সিদ্ধান্ত। একজন মহিলা পুরোহিত হিসাবে মণীষার প্রথম কাজ ছিল পুনের একটি পরিবারের সদস্যের মৃত্যুর পর তাঁর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করানো। মণীষার মতে, সেদিন সকাল থেকেই তিনি ভীষণ মানসিক চাপে ভুগছিলেন। সবকিছু ঠিকঠাক হবে কিনা তা নিয়ে চিন্তা তাঁকে চেপে ধরছিল। মণীষা বেশ বুঝতে পারছিলেন একজন মহিলা পুরোহিত হওয়ায় তিনি সব কাজ ঠিকঠাক করছেন কিনা সেদিকে সকলের কড়া নজর থাকবে। ফলে কোথাও কোনও ভুলচুকের এতটুকু সুযোগ যে তাঁর নেই তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু সেদিন চোখে পড়ার মত ভাল কাজ করেন মণীষা। কাজের শেষে সকলেই স্বীকার করে নেন কাজের পর তাঁরা ভীষণ শান্তি পেয়েছেন।




তারপর থেকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি মণীষাকে। এখন বিদেশ থেকেও ডাক আসে মণীষার। সেখানেও যান তিনি। খুব ভাল ইংরাজিতে কথা বলতে পারেন। এবং কাজকর্মের প্রতিটার অর্থ ইংরাজিতে বুঝিয়ে দিতে পারেন প্রবাসি ভারতীয়দের ছেলেমেয়েদের। এখন তিনি ইন্টারন্যাশনাল পুরোহিত। তাই এই বিশ্বায়নের যুগে উইন্ডোজ প্রোডাকশন প্রযোজিত এই ছবি দর্শকাসনে বসে থাকা আরও কিছু নারীর মন কাড়বে। এর ফলে তারা আরও সহজে সমাজের বুকে মেয়েদের নিয়ে ছড়িয়ে থাকা সমস্ত ট্যাবুকে ভেঙে ফেলতে পারবে।   


Blogger দ্বারা পরিচালিত.