এই গ্রামে কোনও মহিলার সিঁথিতে নেই সিঁদুর! গ্রামের নামই 'বিধবা'


Odd বাংলা ডেস্ক: ভারতবর্ষে এমন অনেক গ্রাম রয়েছে, যে গ্রামের রাস্তাঘাট খানা-খন্দে ভরা। রাস্তাঘাট ভাল না হওয়ার কারণে তা বিপজ্জনকও বটে। আর সেই ওত পেতে থাকা বিপদের মধ্যে প্রাণ যায় অসংখ্য মানুষের। তবে এক গ্রামের ভেতর দিয়ে যাওয়া একটি সড়ক কুখ্যাতিতে অন্য সব সড়ককে ছাড়িয়ে গেছে। 

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় তেলেঙ্গানা রাজ্যে রয়েছে এই 'বিধবা গ্রাম'। এখানেই রয়েছে পেদ্দাকুন্তা নামে এক গ্রাম। একের পর এক প্রাণ ঝরে ওই গ্রাম এখন প্রায় পুরুষ-শূন্য। এটি এখন ‘বিধবাদের গ্রাম’ বলে পরিচিত। গ্রামের ভেতর দিয়ে গেছে প্রাণঘাতী এক বাইপাসের রাস্তা।  সড়কটি নির্মিত হয়েছিল ২০০৬ সালে। স্থানীয় লোকজনের কথা থেকে জানা যায় যে, তৈরি হওয়ার পর থেকেই একপ্রকার অভিশপ্ত এই রাস্তা। কারণ তৈরি হওয়ার পর থেকেই পেদ্দাকুন্তা গ্রামের প্রায় ৩৫ টি পরিবারের সব পুরুষ মানুষরা প্রাণ হারিয়েছেন। 

গ্রামের ৩৫টি পরিবারের মধ্যে এখন মাত্র একজন জোয়ান পুরুষ বেঁচে আছে। বাকদের মধ্যে রয়েছেন নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষরা। গ্রামের ২৩ বছর বয়সী কুরা আসলির কথায়, পথদুর্ঘটনায় তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন। একইভাবে মারা গেছেন তাঁর ভাই ও বাবাও। তাঁদের দেখভালের জন্য পরিবারে কোনও পুরুষ নেই। অন্য এক বিধবা নারীর কথায়, তাঁরও স্বামী পথ দুর্ঘটনাতেই মারা গিয়েছেন। 

এই পরিস্থিতিতে নিরাপদে সড়ক পারাপারের জন্য স্থানীয় লোকজন ফুটব্রিজ বা সুড়ঙ্গপথ তৈরির দাবি জানিয়ে আসছেন। তাঁদের দাবি পূরণ হচ্ছে না বলেই অভিযোগ তাঁদের। গ্রামের বিধবা মহিলাদের আরও দাবি সকলে আসে তাঁদের ছবি তোলে, ভিডিও করে এবং চলে যায়। কিন্তু কাজের কাজ কেউ করে দিয়ে যায় না।

প্রসঙ্গত, ভারত বিশ্বের অন্যতম পথ দুর্ঘটনাপ্রবণ দেশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, ভারতে প্রতি বছরে ২ লক্ষ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। পরিবহন বিশেষজ্ঞদের মতে, সড়কের দুরবস্থা, চালকের দক্ষতার অভাব ও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর কারণে দেশে এত দুর্ঘটনা হয়। 
Blogger দ্বারা পরিচালিত.