নিজের কোনও ডাক নেই, অন্য পাখিকে নকল করে 'নীলচটক', লুপ্ত প্রায় এক পাখির খোঁজ
Odd বাংলা ডেস্ক: নীলগলা নীলচটক Muscicapidae গোত্রের ১৪ সেমি দৈর্ঘ্যের পোকাশিকারী পাখি। গলা কালচে নীল ও চোখ কালচে বাদামি। পুরুষ পাখিটির পিঠ ও গলা নীল, দেহের নিচের অংশ সাদা। কপাল ও ভ্রু উজ্জ্বল নীল। বুক লালচে। বগল ও পেট সাদা। লেজের ঢাকনি পীতাভ আমেজ। পুরুষ ও মেয়ে পাখির মধ্যে পার্থক্য আছে। মেয়েপাখির কোমর জলপাই-বাদামি রঙের। গলা হালকা কমলা। বুক কমলা ও পেট সাদা। মেয়ে ও পুরুষ পাখির উভয়ের চোখ কালচে বাদামি। ঠোঁট বাদামি-কালো। পা ও পায়ের পাতা ধুসর-বাদামি। নীলগলা নীলচটক সাধারণত মুক্ত বনভূমি, বাঁশবন ও সবুজবনে বিচরণ করে। এরা সচরাচর একা থাকতে পছন্দ করে। মাঝে মাঝে জোড়ায় থাকে। ছোট গাছ ও গাছের নিচে গুল্মলতায় খাবার খুঁজে বেড়ায়। খাবার খোঁজার জন্য বারবার মাটিতে নামে। উড়ন্ত অবস্থায় শিকার ধরে। এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে প্রধানত উড়ন্ত পোকা ও পোকার ছানা। এদের গলার স্বর তেমন সুমধুর নয়। কর্কশ ডাক। এরা প্রজনন মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের তীব্র সুরে গায়। এরা অন্যান্য পাখিদের ডাক অনুকরণ করতে পারে। এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস এদের প্রজনন সময়। প্রজননকালে শেওলা ঢাকা আলোর মাটির গর্তে, বা বাঁশের কোটরে শৈবাল ও মৃত পাতায় সরু মূল বিছিয়ে বাসা বানায়। নিজেদের বানানো বাসায় ৩-৫টি ডিম পাড়ে। নিজেরাই ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়। ছেলে ও মেয়েপাখি মিলে বাচ্চার যত্ন করে।
কিন্তু বর্তমানে এই পাখি আর তেমন আসে না পশ্চিমবঙ্গে। নীলগলা নীলচটক ভারতের বিরল পরিযায়ী পাখি। এ ছাড়া বাংলাদেশ, পাকিস্তান, চীন, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডসহ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এদের বিচরণ আছে। কিন্তু মোবাইল টাওয়ারের অত্যাচারে আজ হারিয়ে যাচ্ছে এই বিশেষ প্রজাতি।
Post a Comment