করোনা ভাইরাসের ভয়, তাই বাড়িকেই হাসপাতাল সাজিয়ে নাটক চীনা রাষ্ট্রপতির


Odd বাংলা ডেস্ক: রোম যখন পুড়ছিল, সম্রাট নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন’। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রবল প্রাদুর্ভাবে চীনা হর্তাকর্তাদের প্রায় একই অবস্থা।
চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম যখন রহস্যজনক ভাইরাসের অস্তিত্ব দেখা গেল, তখন কর্তৃপক্ষ তা আমলেই নিল না। উল্টো শুরুতেই যিনি সতর্ক করলেন, তাঁকে চুপ করানো হলো। অন্ধ হলে প্রলয় বন্ধ থাকে না। উহান শহরে দ্রুত করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। শহর থেকে প্রদেশ। প্রদেশ থেকে পুরো দেশ। তারপর বহির্বিশ্ব।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে প্রথম ব্যক্তির মৃত্যু হয় গত ৯ জানুয়ারি, উহানে। প্রায় এক মাসের মাথায়, ১০ ফেব্রুয়ারি এই ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত মানুষের সংখ্যা এক হাজার ছাড়ায়। আর সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৪২ হাজার। মারা যাওয়া ও আক্রান্ত ব্যক্তিদের সিংহভাগই হুবেই প্রদেশের। চীনের বাইরে অন্তত ২৮টি দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
চীনা কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেছে বটে, তবে দেরি হয়ে গেছে। এ নিয়ে চীনে প্রচণ্ড ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে ১০ ফেব্রুয়ারি এক বিরল দৃশ্য দেখল চীন। প্রেসিডেন্ট সি জিং পিং করোনাভাইরাস পরিস্থিতি পরিদর্শনে বেরিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, সি রাজধানী বেইজিংয়ের একটি আবাসিক এলাকা, একটি হাসপাতাল ও একটি জেলা রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন।
রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি-ভিডিওতে দেখা যায়, পরিদর্শনকালে প্রেসিডেন্ট সি ডিসপোজিবল সার্জিক্যাল মাস্ক পরে আছেন। শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করছেন। চিকিৎসাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন। করোনাভাইরাস জয় করারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।
প্রেক্ষাপট, সময়, স্থান, বেশভূষাসহ নানা দিক ‍বিশ্লেষণ করে সির এই করোনাভাইরাস পরিস্থিতি পরিদর্শনের ঘটনাকে অনেকেই ‘আইওয়াশ’ বলছেন। ব্যর্থতার জেরে চলমান কঠোর সমালোচনা বন্ধের কৌশল বলছেন। শুধু অনেকেই বলছেন তিনি আসলে কোনও হাসপাতালে যাননি। এটা শুধুই নাটক। 
তাছাড়া করোনাভাইরাসের ডামাডোলের মধ্যে নিজের উপস্থিতি জানান দেওয়ার বিষয়টি তো আছেই। কেননা, করোনাভাইরাসের দাপটে ইদানীং সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় ঠাঁই হচ্ছিল না সির। সম্প্রচারমাধ্যমের খবরের শুরুতেও তাঁকে দেখা যাচ্ছিল না। চীনে আজীবন ক্ষমতায় থাকার বন্দোবস্ত করা মানুষটির জন্য এই ‘অবহেলা’ নিশ্চয়ই মেনে নেওয়ার মতো নয়। সমালোচকদের কথায় যথেষ্ট যুক্তি আছে।
চীনে এক মাস ধরে মানুষ মরছে। করোনাভাইরাসের কেন্দ্রস্থল উহান মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। অথচ সেখানে যাওয়ার নাম নেই সির। এত দিন পর তাঁর করোনাভাইরাস পরিস্থিতি পরিদর্শনের কথা মনে হল। তাও তিনি পরিদর্শনের জন্য এমন স্থান (বেইজিং) বেছে নিলেন, যেখানকার পরিস্থিতি মারাত্মক নয়।
বেশ কিছু চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞ তো দাবি করেছেন যে সি আসলে কোনও হাসপাতালে যাননি। তিনি বাড়িকেই সিনেমার সেটের মত সাজিয়ে এটা করেছেন। 
Blogger দ্বারা পরিচালিত.