মৃত্যুর পরেও পৃথিবীর এই নেতাদের লাশ কবর দেওয়া হয়নি


Odd বাংলা ডেস্ক: মানুষ বেঁচে থাকে তার কর্মে। যেসব নেতারা পৃথিবীর নিয়ম কানুন বদলাতে লড়ে গেছেন, তারা মৃত্যুবরণ করলেও অমর হয়ে আছেন নিজের কাজের মাধ্যমে। আবার যারা শোষক শ্রেণির নেতা ছিলেন তাদেরও মানুষ মনে রেখেছে ঘৃণা ভরে। নিজেদের ভাবমূর্তির পাশাপাশি চেহারা নিয়েও বেশ সচেতন কমিউনিস্ট বা সাম্যবাদী নেতারা। মৃত্যুর পর নিজেদের চেহারা বিকৃত হবে এমনটা চাননি তাদের অনেকে। আর তাই এমন ব্যবস্থা করতে বলে গেছেন, যেন মৃত্যুর পরও নিজেদের চেহারা অবিকৃত থাকে।

মাও সে তুং

মাও সে তুং এর জন্ম ১৮৯৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর। তিনি গণচীনের চেয়ারম্যান ছিলেন ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত। তিনি চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ছিলেন ১৯৩৫ সাল থেকে আমৃত্যু। তিনি পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৭৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ৮২ বছর বয়সে মারা যান। মারা যাওয়ার আগে তাঁর ইচ্ছা ছিল তিনি মারা গেলে তাঁকে যেন দাহ করা হয়। কিন্তু তিনি মারা যাওয়ার পরে পার্টির লোকজন ও তাঁর স্ত্রী তাঁর মরদেহ জনগণের প্রদর্শনের জন্য সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এর পরে আরো পড়ালেখা করে যা জানলাম তা হল ১৯৫৩ সালে মারা যাওয়ার পরে স্ট্যালিনের দেহ ও এভাবে রাখা হয়েছিল । আট বছর পরে রাশিয়াকে স্টালিনমুক্ত করার উদ্দেশ্যে তাকে দাফন করা হয়।



ভ্লাদিমির লেনিন

মস্কোর রেড স্কোয়ারে লেনিনের দেহ রক্ষিত আছে একইভাবে । লেলিনকে ২০২৪ সালে তার মৃত্যুর ১০০ বছর পূর্তিতে দাফন করা হবে। তার শরীরে ব্যাক্টেরিয়া পচন ধরাতে চেষ্টা করছে। এই পচন থামানোর জন্য মস্কোতে কিছু বিজ্ঞানী আর একটা গবেষণাগার সদা ব্যস্ত। মৃতদেহ বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক ব্যবহার করে সংরক্ষণ করা হয়। অত্যন্ত বায়বহুল এ প্রক্রিয়া।



হো চি মিন

হো চি মিন ছিলেন ভিয়েতনামের সবচেয়ে সম্মানিত নেতা, তিনি দেশটির স্বাধীনতা অর্জনে ভূমিকা রেখেছেন এবং রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি ১৯৬৯ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান । জনগণ তাদের প্রিয় নেতাকে হ্যানয় শহরে বিশাল এক মোসেলিয়ামে রেখে দিয়েছে। তাঁর সম্মানে রাজধানী হ্যানয়ের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে হো চি মিন সিটি।



কিম ২ সাং (kim II-sung)

উত্তর কোরিয়া উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম ২ সাং দেশটির জন্মলগ্ন ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৯৪ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কুমশুসান প্যালেসে তাঁর মরদেহ রক্ষিত আছে।

কিম জং ২ (Kim Jong Il)

উত্তর কোরিয়া ১৯৯৪ সালে তাঁর পিতা কিম ২ সাং এর মৃত্যুর পর থেকে নিজের মৃত্যু পর্যন্ত প্রায় দুই দশক উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ২০১১ সালের ১৭ ডিসেম্বর মারা যান। তাঁর দেহ ও তাঁর পিতার সাথে একই স্থানে রক্ষিত আছে।

ফারনান্দো মার্কোস

মার্কোস ১৯৬৫ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি বহিষ্কৃত অবস্থায় ১৯৮৯ সালে হাওয়াইয়ে মারা যান। সেই সময়ে তাঁর মৃতদেহ ফিলিপাইনে আনার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকার কারনে তাঁর স্ত্রী ইমেলদা (দুর্নীতি এবং ৩০০০ জোড়া জুতার মালিকানার জন্য খ্যাত) তাঁর দেহ ফ্রিজে রাখার বাবস্থা করেন। পরে ২০০১ সালে প্রেসিডেন্ট ফিদেল রামোসের শাসনামলে তাঁর দেহ ফিলিপাইনে আনা হয়। কিন্তু তাঁকে সমাহিত করা নিয়ে জনগণ আপত্তি তোলে। ইমেলদা ও পূর্ণ সামরিক মর্যাদা না দিলে তাঁর স্বামীকে দাফন করতে অস্বীকৃতি জানান। তাঁর দেহ বাটাক গ্রামে মার্কোসের পারিবারিক মোসেলিয়ামে ক্রিস্টাল কফিনে রাখা আছে।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.