প্রকৃতির অবাক খেলা, দিন বদলের সঙ্গে গাছের বাকলে ধরা দেয় রামধনুর সাত রঙ
Odd বাংলা ডেস্ক: পাহাড়ি এলাকায় বেড়াতে গেলে আকাশছোঁয়া ইউকালিপটাস গাছ চোখে পড়ে। সুগন্ধযুক্ত ইউকালিপটাসের পাতা কিন্তু কোয়ালাদের কাছে অত্যন্ত সুস্বাদু একটি খাবার। কিন্তু জানেন কি এই ইউকালিপটাসের কাণ্ড মাঝে মাঝে অত্যন্ত রঙিন হয় যে, তা 'রেইনবো' ইউকাপলিপটাস নামেও পরিচিত। বিশেষ এই ইউকালিপটাস যখন তার ছাল পরিত্যাগ করে তখন সেগুলি দেখে মনে হয় যেন অবিকল রঙ পেন্সিল কেউ তীক্ষ্ণ করে ছুলেছে।
বিশেষ ধরণের এই ইউকালিপটাস গাছ কেবলমাত্র বৃষ্টি অরণ্যেই দেখা যায়, যা মাইন্ডানাও গাম বা রেইনবো গাম নামে পরিচিত। এই বিশেষ ধরণের আঠা যা গাছের কাণ্ডেই তৈরি হয়। আর এই আঠার কারণেই গাছের ছালে তৈরি হয় এমন সব রঙ। চিরসবুজ এই গাছের বৃদ্ধিও হয় খুবই তাড়াতাড়ি। অস্ট্রেলিয়া ছাড়া এই বিশেষ ধরণের ইউকালিপটাস কেবল ফিলিপিন্স, ইন্দোনেশিয়া এবং পাপুয়া ও নিউগিনি-তে পাওয়া যায়। এক একটি রেইনবো ইউকালিপটাসের উচ্চতা ২৫০ ফুট পর্যন্ত উচ্চ হয়ে থাকে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৮ ফুট পর্যন্ত ব্যাসযুক্ত রেইনবো ইউকালিপটাস খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।উচ্চতার পাশাপাশি এর রঙিন বাকলগুলিই একে অন্যান্য গাছের থেকে আলাদা করে তোলে।
প্রথমে এই রেইনবো ইউকালিপটাসের কাণ্ডের রঙ উজ্জ্বল সবুজ রঙের হয়ে থাকে। কিন্তু ধীরে ধীরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাকলগুলি নীল, পার্পেল, কমলা, মেরুন রঙ ধারণ করে। এইভাবে বয়স যতই বাড়তে থাকে বাকলগুলি ধীরে ধীরে আলগা হতে শুরু করে এবং স্তরগুলি আলাদা হয়ে পড়ে যায়।
এই গোটা প্রক্রিয়াটি এক কথায় দেখার মতো। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন বোটানিক্যাল গার্ডেনে এই রেইনবো ইউকালিপটাস দেখতে পাওয়া যায়। হাওয়াই, টেক্সাস, লুইসিয়ানা, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার মতো জায়গায় শোভা বাড়াতে এই বৃক্ষ রোপন করা হয়, এসব জায়গার শীতল জলবায়ু এই গাছের বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই বিশেষ ধরণের গাছের বাণিজ্যিক মূল্য অনেক। এই গাছের কাঠ থেকে কাগজের মণ্ড, বিভিন্ন আসবাব, নৌকো, ক্যাবিনেট ইত্যাদি তৈরি করা হয়ে থাকে। শুধু তাই নয়, যে সাদা কাগজে লেখা হয়, সেই কাগজ তৈরি হয় রেইনবো ইউকালিপটাসের বাকল থেকে।
Post a Comment