বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন ঠাকুর


Odd বাংলা ডেস্ক: ১৮৯২ সালের ৬ই ফাল্গুন নিজের মামার বাড়িতে জন্ম নিয়েছিলেন শ্রী ওঙ্কারনাথ ঠাকুর। বাবা প্রাণহরি চট্টোপাধ্যায় এবং মা মাল্যবতী দেবী। সদ্যোজাত শিশুর নামকরণ করা হয় প্রবোধচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ছোটবেলাতেই প্রবোধ হারিয়ে ফেলেন তার মা মাল্যবতীকে তবে তাঁর বাবা প্রাণহরি চট্টোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী গিরিবালা দেবী, ছোট্টো প্রবোধকে চোখে হারাতেন। "প্রেবো"(প্রবোধ) ছিল তাঁর চোখের মণি। গিরিবালা মায়ের ভালোবাসায় প্রবোধ বড়ো হতে থাকে।


ছোটবেলা থেকেই প্রবোধের বিয়ের প্রতি তীব্র উদাসীন মনোভাব ছিল। বিয়েতে তিনি নৈব নৈব চ। কিন্তু বিধির বিধান তো খণ্ডন করা যায় না, তখন ঠাকুরের সাধনার প্রথম স্তর চলছে, তিনি তখন রয়েছেন তাঁর গুরু দাশরথী দেবের গৃহে। সেই গ্রামের এক ছোট্টো মেয়ে এসে দাশরথী দেবকে বললেন, তাঁর এই শিষ্যটিকে খুব পছন্দ এবং বিয়ের প্রস্তাবও দিলেন। দাশরথীদেব এই প্রস্তাব শুনে প্রথমে অবাক হলেন। এই টুকু মেয়ে নিজেই নিজের বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছে। আবার একই সঙ্গে খুশি হয়ে প্রবোধকে বললে। প্রবোধ এই কথা শুনে খুব খুশি হন এবং এই বিয়েতে তিনি রাজি নন বলে জানিয়েদেন গুরুদেবকে। কিন্তু দাশরথী দেব তাঁকে বলেন যে তিনি এই বিয়ের কথা দিয়েছেন, এই বিয়ে তাঁকে করতেই হবে এটাই গুরুদেবের আদেশ। এমন অবস্থায় গুরু আদেশ না শুনলে মহাপাতক হবেন তাই তিনি পালিয়ে গেলেন বিয়ে না করার জন্যে। এদিকে বিয়ের দিন এগিয়ে এল, সমস্ত আয়োজন প্রায় শেষের পথে কিন্তু পাত্র নিখোঁজ। তাই মনের দুঃখে গুরুদেব দাশরথী দেব গেলেন পাত্রীর বাড়িতে সেই দুঃসংবাদ দিতে। সেই সংবাদ দিতে গিয়ে গুরুদেব অবাক কারণ ছোট্টো কমলা তাঁকে এসে বললেন, চিন্তা করো না যার বিয়ে সে ঠিক সেই সময়েই আসবে। কমলা আরও বললেন, "আমি যে তাঁকে সংসারে বাঁধতে আসিনি, এসেছি তাঁর সাধনার পথ অগ্রসর করতে।" এবং ঠিক সেটাই হল  বিয়ের দিন ঠাকুর নিজেই এসে উপস্থিত হলেন।

বিয়ের দিন প্রবোধ উপস্থিত এবং তিনি বিয়ে করতেও সম্মতি জানিয়েছেন। এই কথা শুনে গুরুদেব দাশরথী দেবও খুশি হলেন। তিনি প্রবোধকে প্রশ্ন করলেন এই পালিয়ে যাওয়ার কারণ কী? তখন উত্তরে প্রবোধ বললেন যে, তিনি এই বিয়ের প্রস্তাব মেনে না নিতে পেরে পালিয়ে গিয়েছিলেন এবং সাধনায় মগ্ন হন তখন তিনি আদেশ পান বিয়ে করার। তাই তিনি বিয়ের জন্য ফিরে এসেছেন । 
Blogger দ্বারা পরিচালিত.