জ্যাঁন্ত মানুষকে কবর দেওয়াই এখানে উৎসব
Odd বাংলা ডেস্ক: অদ্ভুত সব রীতিনীতি পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ যুগ যুগ ধরে মেনে চলছে যা আজও অমলিন। এই একবিংশ শতকের দ্বারপ্রান্তে দাড়িঁয়েও মানুষ সেসব রীতিনীতি এখনও অত্যন্ত সম্মানের সাথে অনুসরণ করছে। ভাবতে অবাকই লাগে এই সময়ে এসেও মানুষ কীভাবে এসব নিয়মকানুন এখনও প্রথা হিসেবে স্বীকার করে। এই রীতিনীতির বেশ কিছু খুবই বিভৎস। কিছু রয়েছে শিউরে ওঠার মতো। আসুন আজ এমনি এক ভয়াবহ, অদ্ভুত কুসংস্কারপূর্ণ প্রথার গল্প শুনবো। জীবন্ত মানুষকে কবর দেয়ার এই রীতি প্রচলিত রয়েছে কিউবার রাজধানী হাভানা থেকে ১২ মাইল দূরে সান্তিয়াগো দে লাস ভেগাস নামক গ্রামে।
‘বারিয়াল অব প্যাচেন্দো’ নামের এক বিচিত্র উৎসবের অংশ হিসেবেই এই অনুষ্ঠানটি করা হয়। এই অনুষ্ঠানের অন্যসব ধরনের প্রথার একটি অংশ হিসেবে কবর দেওয়া হয় কোন একজন জীবন্ত মানুষকে। এর পূর্বে জীবন্ত মানুষটিকে কফিন বন্দি করে রাখা হয়। তারপর ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে সেই কফিনকে শুইয়ে দেওয়া হয় কবরে। এই অনুষ্ঠানে যে কয়জন ব্যক্তি উপস্থিত থাকেন তাদের সবাই তখন থাকেন নেশায় উন্মত্ত। যদি কেউ বিষয়টি সম্পর্কে বাস্তব ধারণা না থাকলে তার আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে, কোন খাঁটি খ্রিস্টানের শেষকৃত্য অনুষ্ঠান চলছে। চার জনের কাঁধে বাহিত হয়ে এগিয়ে চলেছে একটি কফিন। কফিনের ঢাকনা বন্ধ, শুধু এক দিকের উন্মুক্ত একটি অংশ দিয়ে দেখা যাচ্ছে কফিনের ভিতরে শায়িত মানুষটির মাথা। চোখ বোজা অবস্থায় নিথর হয়ে রয়েছে সেই মাথা। কফিনের পিছন পিছন চলেছেন কিছু মানুষ। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রয়েছে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা গোছের। তারা কিছুক্ষণ পরপর বুক চাপড়ে হাহাকার করে কাঁদছেন। কেউ কেউ আবার সান্ত্বনা দেয়ার জন্য এগিয়ে আসছেন। মৃত মানুষটির শোকেই সবাই থাকে আকুল। কিন্তু আর পাঁচটি অন্তিমযাত্রার সঙ্গে এই শোভাযাত্রার কিছু ভয়াবহ পার্থক্যও রয়েছে। শোভাযাত্রার এই অংশটি সকলের কাছে কমন মনে হলেও একটু গভীরভাবে খেয়াল করলেই দেখা যাবে, কফিনের পেছনে ক্রন্দনরত বৃদ্ধাদের সহযাত্রী হিসেবে রয়েছেন আরও কিছু মানুষ, যাদের চোখে মুখে শোকের লেশমাত্রও নেই। বরং সেসব ব্যক্তি মদের বোতল হাতে নেশায় থাকে মত্ত। দল বেঁধে টলমলায়মান অবস্থায় হর্ষধ্বনি আর হাততালির মধ্য দিয়ে তারা সকলকে উজ্জীবিত করতে থাকে। একে অন্যকে প্রতিনিয়ত উৎসাহ দিতে থাকে। আর তার থেকেও ভয়াবহ তথ্য যেটি, সেটি হল এই যে, কফিনের ভিতরে যিনি শুয়ে রয়েছেন, তিনি আদৌ মৃত নন, বরং জলজ্যান্ত একটি মানুষ।
Post a Comment