World Music Day: গৃহবন্দী অবস্থায় এই মিউজিকগুলি দিয়ে করুন মেডিটেশন
Odd বাংলা ডেস্ক: সংগীত পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিনোদন ছাড়াও সংগীত এখন চিকিৎসাশাস্ত্রেও ব্যবহৃত হচ্ছে। সাউন্ড থেরাপি এখন পরিচিত চিকিৎসা ব্যবস্থা। সুরের মাধ্যমে মানসিক ও শারীরিক নানা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি উপায় হচ্ছে সাউন্ড থেরাপি। এখন প্রশ্ন হলো, সংগীত কীভাবে আপনার মন ও শারীর ভালো রাখতে পারে?
ধরুন আপনার মন খুব খারাপ। বিশেষ করে করোনাভাইরাসের এই দুর্যোগের দিনে আপনাকে ঘরে স্বেচ্ছাবন্দি থাকতে হচ্ছে। চিৎকার করে কাঁদতে েইচ্ছে করছে। মাথায় নেতিবাচক চিন্তাগুলো বারবার ঘুরে-ফিরে আসছে। এমন অবস্থায় দেরি নয়, কম্পিউটারে কিংবা মুঠোফোনে নিমিষেই খুঁজে বের করুন একটি কষ্টের গান। মন দিয়ে গানটি শুনতে শুনতে কান্নার জলগুলো উড়িয়ে দিন অজানায়। দেখবেন, মনটা হালকা লাগছে।
সারাদিনের কর্মব্যস্ততায় ব্রেনের উপর অনেক চাপ গিয়েছে? কেমন যেন অস্থির লাগছে। মাথাটাও ঝিমঝিম করছে? সার্চ দিন কোন মানদালা হিলিং মিউজিক। তবে তা যেন রাগ প্রধান হয়। চোখ বন্ধ করুন। মনোযোগ দিয়ে শুনতে থাকুন আর ভাবতে থাকুন আপনি হেঁটে যাচ্ছেন কোনো গভীর বনের ভেতর দিয়ে, চারদিকে সবুজের সমারোহ, সামনেই পাহাড় বেয়ে ঝরনার জল গড়াচ্ছে। ৩০ মিনিট পর চোখ খুলে বেরিয়ে আসুন কল্পনার জগৎ থেকে। এবার দেখুন কেমন চাঙ্গা লাগছে। নিচের দুটো মিউজিক আপনাকে খুব দ্রুত অবসাদগ্রস্ততা থেকে বের করে আনবে।
আবার ধরুন ইনসোমনিয়ার সমস্যা। বিছানায় শুয়ে আছেন, ঘুম আসছে না। আপনার যে ঘুম আসছে না ভুলে যান। হেডফোন লাগিয়ে নিচের লিংকটিতে ক্লিক করুন। মিউজিক চলা অবস্থায় চোখ বন্ধ করুন। প্রাণ ভরে শ্বাস নিন। আস্তে আস্তে শ্বাস ছাড়ুন মুখ দিয়ে। এভাবে শ্বাস নিন আর ছাড়ুন। দশ বারোবার এমন করুন। ভাবুন আপনার শরীর পুরোটাই অনেক হালকা হয়ে গেছে। আপনি বাতাসে উড়ছেন। শরীরের উপর আপনার নিয়ন্ত্রণ নেই। কখন যে ঘুমিয়ে যাবেন টের পাবেন না।
অফিসে প্রচণ্ড কাজের চাপ। ডেস্কে কাজ জমে গেছে? কখন শেষ করবেন? ইত্যাদি দুশ্চিন্তা পেয়ে বসেছে? তখনই আপনি দেখবেন, আপনার কাজ আরো ধীর গতিতে চলছে। কিছুতেই কাজ এগুচ্ছে না। সবার আগে ভুলে যান, আপনার অনেক কাজ জমা পরে আছে। হেডফোন লাগিয়ে হেভি মেটাল কোনো গান ছাড়ুন। এ ক্ষেত্রে সহজেই বেছে নিতে পারেন ইনিগমা এ্যালবামের ‘দি ভয়েস অফ ইনিগমা’। এবার ডেস্কে মনোযোগ দিন। জমে থাকা কাজগুলোর মধ্যে যেটি সহজ, সেটি বের করুন। সেরে ফেলুন। এভাবে অপেক্ষাকৃত ছোট ও সহজ কাজগুলো আগে সেরে ফেলুন। দেখবেন আপনার সব কাজই শেষ।
স্বামী স্ত্রী, কিংবা ভালোবাসার মানুষের সাথে মনমালিন্য হতেই পারে। সে ক্ষেত্রে গান খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ, বেশ সময় পেরিয়ে গেছে, আপনি আপনার ভুল বুঝতে পারলেন? এবার স্ত্রী কিংবা স্বামীর মান ভাঙানোর পালা। এক্ষেত্রে বাসায় যদি সাউন্ড বক্স থাকে, তাহলে আপনার স্ত্রী কিংবা স্বামীর খুব প্রিয় একটি গান একটু উচ্চ শব্দে ছাড়ুন। আপনাকে আর কিছুই করতে হবে না, দেখবেন পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত হয়ে এসেছে। এবার সুযোগ বুঝে দুজন দুজনেক সরি বলে ফেলুন। বন্ধুর সাথে ভুল বোঝাবুঝি? কিছুতেই প্রেমিকার মান ভাঙাতে পারছেন না? তাকে রিকোয়েস্ট করুন অন্তত পক্ষে একবার আপনার সাথে কোনো রেস্টুরেন্টে বসতে। ব্যাস এবার যে রেস্টুরেন্টে বসবেন অবশ্যই খেয়াল রাখবেন সেখানে যেন সাউন্ড সিস্টেম থাকে। আজকাল সব রেস্টুরেন্টেই সাউন্ড সিস্টেম থাকে। আপনার প্রিয় মানুষটি আসার পূর্বেই রেস্টুরেন্টে হাজির হোন। পেনড্রাইভে কিংবা মোবাইলে আপনার প্রিয় মানুষটির সবচেয়ে প্রিয় গানটি লোড করে নিয়ে যান। এবার রেস্টুরেন্টের দায়িত্বপ্রাপ্তকে অনুরোধ করুন, আপনার প্রিয় মানুষটি এলে যেন সেই মিউজিকটি চালানো হয়।
দূরের জার্নি। দীর্ঘক্ষণ বাস কিংবা ট্রেনে বসে থাকতে হবে? জার্নির আগের দিন মোবাইলে ভরে নিন প্রিয় গানগুলো। তবে এক্ষেত্রে একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, গানগুলো যেন একই রকম না হয়। এমন ধরনের গান বাছাই করুন যাতে আপনার মুড সুইং করে। সাধারণত জার্নিতে খুব ঠান্ডা ধরনের গান বাজালে কিছু সময় পর আপনার বোরিং মুড চলে আসতে পারে। তাই কিছুটা মেটাল, রক মেটাল গান বাছাই করা ভালো। এক্ষেত্রে পুরোনো স্মৃতিমাখা গানের বিকল্প নেই। গাড়ি চলবে, ছোট্ট বেলার স্মৃতিময় গানে হারিয়ে যাবেন সেই দিনগুলোতে।
ছুটির দিন। আকাশ মেঘলা। পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কেটে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে, বহু বছরের পুরাতন গানগুলো শুনতে পারেন। এমনও হতে পারে, যে গানগুলো আপনার বাবা-মা কিংবা আপনার কোন প্রিয়জনের প্রিয় গান ছিলো। তাতে কিছুটা সময় পুরাতন দিনগুলোতে ডুবে গিয়ে স্মৃতিকাতর হতে পারবেন। এতে ভালোবাসা, আত্মীয়তার বন্ধন দৃঢ় হয়।
এভাবে সংগীত আপনার জীবনকে অনেকটা সহজ সাবলীল করতে পারে। বিশেষ করে এই সময় সবার ঘরে থাকা উচিত। মনের দুশ্চিন্তা কাটাতে মিউজিক থেরাপির বিকল্প খুব কমই আছে। আরেকটি কথা, গান শোনার ব্যবস্থা যদি ক্রটিপূর্ণ থাকে সেক্ষেত্রে গান আপনার চিকিৎসার পরিবর্তে বিরক্তির কারণ হতে পারে। বাসায় অবশ্যই সারাউন্ডেড স্টোরিও সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করুন। আর যদি হেডফোনে গান শোনার অভ্যাস থাকে তাহলে বাজার থেকে একটু বেশি দামে ভালো ব্র্যান্ডের হেডফোন ব্যবহার করুন। ইদানিং সস্তায় অনেক রকম হেডফোন পাওয়া যায়, সেগুলো আপনার শ্রবণশক্তির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
Post a Comment