করোনার কারণে খদ্দের নেই, সোনাগাছি ও দৌলতদিয়া প্রায় বন্ধ
Odd বাংলা ডেস্ক: কলকাতার চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ থেকে দুর্গাচরণ মিত্র স্ট্রিট হয়ে রবীন্দ্র সরণি। রাতে শহর যখন ঘুমিয়ে পড়ে, এ রাস্তায় তখন ‘সূর্যোদয়’ হয়। সোনাগাছির সেই ভিড় জমতে শুরু করে দুপুরের শেষ থেকেই। শুক্রবারের বসন্ত-বিকেলে দৃশ্যটা একেবারে অন্য। খাঁ খাঁ করছে সোনাগাছি। যৌনকর্মী কম, খদ্দের হাতে-গোনা। তে যৌনকর্মীদের পেটে টান পড়লেও, বিশেষজ্ঞরা এই প্রবণতায় আশীর্বাদই দেখছেন। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে নিষিদ্ধ হয়েছে বড় জমায়েত। অথচ, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে দুর্গাচরণ মিত্র স্ট্রিট, অবিনাশ কবিরাজ স্ট্রিট, মসজিদ বাড়ি লেন, রবীন্দ্র সরণি, শেঠবাগান, রামবাগান মিলিয়ে দৈনিক ৩০-৪০ হাজার খদ্দের আসেন। সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ ও বাসিন্দা মিলিয়ে ১০-১২ হাজার যৌনকর্মী। এক জায়গায় বেশি লোকজন মানেই সংক্রমণের বেশি সম্ভাবনা। পরিস্থিতি সামলাতে করমর্দন করতেও বারণ করা হচ্ছে। সেখানে যৌনপেশায় সংস্পর্শ এড়ানো সম্ভবই নয়।
তাই আতঙ্কে যৌনপল্লিমুখো হওয়া কমিয়েছেন খদ্দেররা। খদ্দের কম আসায় আনাগোনা কমেছে ভ্রাম্যমাণ যৌনকর্মীদেরও।
কারণ করোনাভাইরাস।
ভাইরাসের ভয়ে একই ছবি বউবাজার, কালীঘাট, খিদিরপুর, ওয়াটগঞ্জের যৌনপল্লিতেও। যৌনকর্মীরা বলছেন, নোট বাতিলের পরও নগদের অভাবে ভিড় কমে গিয়েছিল যৌনপল্লিতে। সে বারও এমন ‘দুর্দশা’ হয়নি।
একই অবস্থা বাংলাদেশেও। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়ায় যৌনপল্লীকে আজ (শুক্রবার) থেকে ২০দিনের জন্য লকডাউন করা হয়েছে। দেশটির সবচেয়ে বড় এই যৌনপল্লীতে এই সময়ে খদ্দেররা যাতায়াত করতে পারবে না বলে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। রাজবাড়ী জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বিবিসিকে জানিয়েছেন, দৌলতদিয়ায় যৌনপল্লীকে ঘিরে পাঁচটি গেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শুধু প্রধান গেট খোলা রেখে সেখানে পুলিশের পাহারা বসানো হয়েছে। তবে তিনি উল্লেখ করেছেন, যৌনপল্লীর বাসিন্দারা জরুরি প্রয়োজনে পল্লীটির প্রধান গেট দিয়ে পুলিশের অনুমতি নিয়ে বাইরে যেতে পারবে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন মিটিয়ে তাকে ফিরতে হবে।
মি: রহমান বলেছেন, যেহেতু এই যৌনপল্লীতে দিনে অনেক খদ্দের যাতায়াত করে, সেকারণে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। আর সেজন্যই লকডাউনের এই সিদ্ধান্ত। পুলিশের হিসাব অনুযায়ী এই পল্লীতে ১৬০০জনের মতো যৌনকর্মী রয়েছেন। তাদের ছেলে মেয়ে এবং পল্লীতে ঘরের মালিক ও দালালসহ আরো ৪০০জনের মতো আছেন। পুলিশ সুপার মি: রহমান বলেছেন, এই লকডাউনে যেহেতু যৌনকর্মীদের আয় উপার্জন বন্ধ থাকবে, সেকারণে ২০দিন চলার জন্য প্রত্যেক যৌনকর্মীকে ২০কেজি করে চাল এবং তার সাথে পরিমাণমতো ডাল দেয়া হবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, যৌনপল্লীর সব ঘর মালিক বা বাড়িওয়ালাকে যৌনকর্মীদের কাছ থেকে এই ২০দিনের ভাড়া না নিতে বলা হয়েছে। রাজবাড়ী থেকে স্থানীয় একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, সেখানে পুলিশ প্রশাসনের এসব পদক্ষেপের বিষয়গুলো নিয়ে যৌন কর্মীদেেএকটি সংগঠনের পক্ষ থেকে পল্লীর ভেতরে মাইকিং করা হয়েছে।
Post a Comment