লকডাউনের মধ্যেই জানুন ঠাকুরের মহিমার কথা
Odd বাংলা ডেস্ক: লোকনাথ ব্রহ্মচারী যিনি সকলের কাছে বাবা লোকনাথ নামে পরিচিত। তার জন্ম জন্মাষ্টমী তিথিতে। ১১৩৭ বঙ্গাব্দের ১৮ ই ভাদ্র বা ইংরাজি ১৭৩০ খ্রীষ্টাব্দের ৩১ শে আগষ্ট তৎকালীন যশোহর জেলা যা বর্তমানে ২৪ পরগনা জেলার চৌরশী চাকলা নামক গ্রামে বাবা লোকনাথের জন্ম হয়। তার বাবার নাম রামনারায়ণ এবং মায়ের নাম কমলা দেবী।
তার বাবা ছিলেন একজন ধার্মিক ব্রাহ্মণ। লোকনাথ ছিলেন তাদের চতুর্থ সন্তান। সেই সময়ে মানুষের ধ্যান ধারনা ছিল যে যদি বংশের কোন সন্তানকে সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহন করানো যায় তাহলে তার বংশ উদ্ধার হয়। সে জন্য রামনারায়ণ তাদের প্রথম সন্তান হওয়া থেকেই চেয়েছিলেন সন্ন্যাসী বানানোর জন্য।
তার স্ত্রী সেটা হতে দেন নি। কিন্তু তাদের চতুর্থ সন্তান লোকনাথের বেলায় তার মা কমলা দেবী আর আটকে রাখতে পারেন নি রামনারায়ণকে। লোকনাথের ১১ বছর বয়সে উপনয়ন কার্য শেষ হওয়ার পর তার বাবা তাকে পাশের গ্রামের জ্যোতির্ময় দেহধারী ভগবান গাঙ্গুলির হাতে তুলে দেন।
এই সময়ে লোকনাথের সঙ্গী হয় তার ছোট বেলার বন্ধু বেনীমাধব। লোকনাথের নাম দিয়েছিলেন ভগবান গাঙ্গুলি নিজেই। লোকনাথ ছোট থেকেই ঈশ্বরে বিশ্বাসী ছিলেন। তার ছোট থেকেই কোন এক জায়গায় মন টিকতো না। তিনি ছিলেন ভগবান শিবের ভক্ত।
সন্ন্যাস গ্রহনের পর তিনি নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে যোগ সাধনা করেন। গুরুর আদেশে যোগ সাধনা করে ব্রত পালন করে লোকনাথ ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করেন।
তারপর তিনি নানা দেশ ভ্রমন করেন। প্রথমে হিমালয় থেকে কাবুল আসেন। সেখানে কোরান, বেদ ইত্যাদি শাস্ত্র নিয়ে জ্ঞান লাভ করেন।
ইসলাম ধর্ম সম্বন্ধেও তিনি জ্ঞান লাভ করেন। বারদীতে জমিদার নাগ মহাশয় বাবা লোকনাথকে কিছু জমি দান করেন। সেখানে বাবা নিজের পছন্দ মত আশ্রম তৈরি করেন। সেই আশ্রমের কথা শুনে দেশ দেশান্তর থেকে ভক্তের আগমন হতে শুরু করে। আর সেখানে ভিড় জমতে শুরু করে।
তার ভক্তেরা তার কাছে যা চাইত তাই পেত। এইভাবে সেই আশ্রম তীর্থস্থানে পরিনত হয়। এক সময় ভাওয়ালের মহারাজ বাবার অনুমতি নিয়ে তার একটি ছবি তোলেন। রাজা বাবাকে বলেন যে একদিন তার এই ছবি বিক্রি করেও অনেকের সংসার চলবে। সেই কথা শুনে বাবা রাজি হয় ছবি তুলতে।
এখন সেই ছবি ঘরে ঘরে পূজিত হয়। বাবা লোকনাথের উপর সকলের অপার বিশ্বাস। তার পুজোয় অত নিয়ম পালন করার দরকার পরেনা। তিনি সব কিছুতেই সন্তুষ্ট। শুধু মনে ভক্তি রাখাই আসল কথা। বাবাকে ডাকার সময় বলুন “জয় বাবা লোকনাথ, জয় মা লোকনাথ, জয় শিব লোকনাথ”।
আর কখনো কোন বিপদে পড়লে তাকে স্মরণ করুন। বাবা লোকনাথ বলে গিয়েছিলেন- “রণে বনে জলে জঙ্গলে যেখানেই বিপদে পড়বি, আমাকে স্মরণ করবি, আমি রক্ষা করবো।”
Post a Comment