দিনে তিনবার রং পরিবর্তন করে এই রহস্যময় মন্দিরের শিবলিঙ্গটি


Odd বাংলা ডেস্ক: মন্দির হল হিন্দুদের উপাসনার স্থান। মন্দিরকে বলা হয় দেবালয়, অর্থাৎ দেবতার গৃহ। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ ও দেবতাকে একত্রে নিয়ে আসার জন্য হিন্দু ধর্মের আদর্শ ও ধর্মবিশ্বাসের প্রতীক হিসাবে এই মন্দির গুলি গড়ে তোলা হয়েছে। হিন্দু মন্দির এমন একটি আধ্যাত্মিক স্থান যেখানে মায়ার জগত থেকে মানুষ তীর্থযাত্রী বা পূন্যার্থীর বেশে জ্ঞান ও সত্যের সন্ধানে আসেন। ভারতের এমন বহু মন্দির আছে যাকে ঘিরে রয়েছে অনেক রহস্য। যার মীমাংসা এখনও হয়নি। তেমনই রহস্যে ভরা একটি মন্দির হল রাজস্থানের অচলেশ্বর মহাদেবের মন্দির। এই মন্দিরের মাহাত্ম্য হল, এই মন্দিরে যে শিবলিঙ্গটি পূজিত হয় সেটি দিনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম রং নেয়। রাজস্থানের সিরোহী জেলার অচলগড় কেল্লার ঠিক বাইরে এই মন্দিরটি অবস্থিত। এখানে বহুকাল আগে মহাদেবের পায়ের একটি ছাপ দেখা গিয়েছিলো। সেই পায়ের ছাপকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে মন্দিরটি। আনুমানিক নয় শতকে এই মন্দিরটি তৈরি হয়। মন্দিরের সামনেই রয়েছে চার টনের একটি নন্দীর মূর্তি। এই নন্দী মন্দিরটির রক্ষাকর্তা। প্রাচীনকালে কোন একটি শাসক এই মন্দিরটি ভাঙার চেষ্টা করে। 

তখন নন্দীর মূর্তি থেকে বেড়িয়ে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি। মৌমাছির আতঙ্কে পালিয়ে যায় আক্রমনকারীরা। মন্দিরের মধ্যে রয়েছে একটি স্তুপ। স্থানীয় মানুষদের মতে সেটা হল নরকের দক্ষিণদ্বার। মন্দিরটি সংস্কার করা হয় বহুবার। একবার মন্দিরটি খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে সুড়ঙ্গ আবিষ্কৃত হয়। সুড়ঙ্গের কুলুঙ্গিতে পাওয়া যায় দেবী চামুণ্ডার মূর্তি। দেখা যায় মূর্তিটির গায়ে লেপা রয়েছে সিঁদুর। দেখে মনে হতে পারে যে এক্ষুনি সিঁদুর লাগানো হয়েছে। কিন্তু ঐ সুড়ঙ্গের মধ্যে কে পুজো করতো দেবীর? এই প্রশ্নের উত্তর আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে এই মন্দিরের সবথেকে গুরুত্বপূর্ন জিনিস হল মন্দিরে থাকা শিবলিঙ্গটি। এটির সকাল বেলা রং থাকে লাল, বিকেলে হয় জাফরান, আর রাত্রে হয়ে যায় কালো। বিজ্ঞানীদের মতে মন্দিরের গায়ে যে অজস্র স্ফটিক লাগানো রয়েছে, তাতে দিনের বিভিন্ন সময় সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়ে বিভিন্ন রং নেয় শিবলিঙ্গটি। কিন্তু ভক্তদের কাছে এই ব্যাখ্যার কোন মূল্য নেই। তারা এই ঘটনাকে ভগবানের মাহাত্ম্য বলেই মানে। হাজার হাজার মানুষ এই লীলা দর্শনের জন্য বহু দূর থেকে আসেন।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.