বাঙালি শ্বশুররা জামাইয়ের মধ্যে কোন গুণগুলি খোঁজেন?
Odd বাংলা ডেস্ক: বিভিন্ন তথ্য অনুসন্ধানের পর আমরা বুঝতে পেরেছি, যে এইসব গুণাবলীগুলো থাকলে আপনিও সহজেই জামাই হতে পারবেন। সিঙ্গেল ভদ্রলোক ভাইগণদের সাহায্যার্থে আজ আমরা সেই গুণাবলী সম্পর্কে আলোচনা করবো যাতে আপনিও সহজেই আপনার মনের মতো সঙ্গীকে খুঁজে পান। আসুন দেখে নেওয়া যাক।
শুধু নয় হাজবেন্ড সঙ্গে চায় ফ্রেন্ডও
নিজের পছন্দের জামাইয়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে শ্বশুরমশাই সবচেয়ে বেশি যে শব্দটা ব্যবহার করেন সেটা হল ‘বন্ধু’। অর্থাৎ তার জামাই যেন তার মেয়ের বন্ধুর মত হয়। এটা সামান্য ভয়ের ব্যাপার হলেও কিন্তু বাস্তবে দেশের অন্যন্য প্রান্তের বাবা-মায়ের থেকে বাঙালি বাবা-মা তাদের জামাই খোঁজার কাজে অনেক বেশি এগিয়ে আছেন। ভাবতে অবাক লাগে যে, মেয়েরা তাদের ফেসবুকের হাজার হাজার বন্ধুর থেকে নির্দিষ্ট বন্ধু অর্থাৎ স্বামীকে বেছে নেয় না কেন। তাহলে তো সব ল্যাঠা চুকে যেত।
অত্যন্ত সাধারণ, নম্র এবং মাটির মানুষ হবে জামাই
বাঙালি জামাই বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বিষয়ে আসা যাক। হাজারের বেশি প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা যায় বেশিরভাগ বাঙালির জীবনযাত্রা যতই নিন্মমানের হোক না কেন চিন্তাভাবনা অতি উচ্চমানের। কিন্তু সিম্পল বা সাধারণ মানুষ হওয়ার বিশেষ কোনো সংজ্ঞা খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাজামা-পাঞ্জাবি আর শ্রীলেদার্সের চপ্পল পরা যুবকরা এই শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হবে না ব্র্যান্ডেড পোশাক পরা বুট পরা খলহাসি সম্পন্ন কাপুরুষরা এই শ্রেণীতে উপযুক্ত তা অনুসন্ধান সাপেক্ষ।
অত্যন্ত শিক্ষিত, সামাজিক বোধ-বুদ্ধি না থাকলেও চলবে
আপনাকে পড়াশোনায় ভালো হতে হবে বস, নাহলে কিসসু হবে না, সে আপনি যতই রোজগার করেন না কেন। আইআইটি, জেইউ, শিবপুর, প্রেসি এসব জায়গা থেকে পড়াশোনা না করলে আপনার মধ্যে জামাই হওয়ার রসদ খুবই কম রয়েছে। যতই কাউকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান না কেন ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে বারবার প্রত্যাখ্যাতই হবেন। বড় হয়ে বুঝতে পারলাম ছোটোবেলায় মা কেন বলতো, “ভালো করে পড়াশোনা কর, নাহলে বউ পাবি না।”
কেয়ারটেকার
হ্যাঁ দাদা, বাঙালি হলে বিয়ের পর আপনাকে বউয়ের সেবা করতেই হবে। প্রায় সব শ্বশুরই এমনটা চায় যে, জামাই তার মেয়ের সেরকম যত্ন করবে যেরকমটা তারা করেছে তার মেয়ের। অনেক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখলাম কোথাও লেখা নেই যে, মেয়েটাও তার স্বামীর সমান যত্ন নেবে।
ভিসা ওয়ালা বিদেশী বাঙালি
আপনি যদি কোনো পাশ্চাত্যের দেশে বর্তমানে বসবাস করেন এবং অবিবাহিত হন তবে এখুনি এটা পড়া বন্ধ করে তাড়াতাড়ি ওই সমস্ত অ্যাপে নিজের প্রোফাইল খুলুন। বিদেশী ভিসা থাকা মানে জামাই হওয়ার ক্ষেত্রে আপনি অলরেডি পাশ মার্কস পেয়ে বসে আছেন। আপনি যদি আমেরিকার কোনো এঁদো গ্রামে বসে কম্পিউটারে ডেটা-এন্ট্রির কাজও করেন তাহলেও সাত খুন মাফ। এখানকার লম্বা, ফর্সা, সুশ্রী, কনভেন্টে পড়াশোনা করা, গান বাজনা জানা মেয়েরা আপনাকে বিয়ে করার জন্য মুখিয়ে আছে।
কোটিপতি
এই শ্রেণীতে শ্বশুরমশাইরা নিজেদের আদরের মেয়ের জন্য এমন পাত্র খোঁজেন যাদের বাৎসরিক আয় ২৫ লাখ থেকে ১ কোটি পর্যন্ত। ১ কোটিটা বোধহয় একটু কম হয়ে গেল, এনাদের জন্য উর্দ্ধসীমাটা অসীম বলাই ভালো। আপনি সারাক্ষণ কাজ করে কোটি টাকা কামাবেন আর শ্বশুরমশাই ঘর ঝাঁট দিতে দিতে মোবাইল ফোন ঘেঁটে আপনাকে ক্ষপ করে ধরে নেবে।
ধূমপান ও মদ্যপান করে না
কেন শ্বশুরমশাই কেন? সকলেই জানে যে আমাদের দেশে ধূমপান আর মদ্যপানের ক্ষেত্রে বাঙালিরা অনেকটাই এগিয়ে। কিন্তু বেশিরভাগ পরিবারই বিয়ের জন্য ধার্মিক পাত্র খোঁজে যে কোনোরকম নেশা করে না। তাই বিয়ে করতে হলে নেশা ত্যাগ করুন এবং আপনার ফুসফুস আর লিভার খুলে নিয়ে গিয়ে মেয়ের বাবাকে বলুন যে আপনি নেশা করেন না।
ভ্রমণকারী কাম ফটোগ্রাফার
ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে প্রোফাইল খুলতে গেলে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনার প্রোফাইল পিকচারটি যেন ঝাঁ চকচকে হয় হয় কোনোও পাহাড়ের উপর বা মেঘে ঢাকা সুন্দর হ্রদের ধারে দাঁড়িয়ে। বাঙালি মেয়েরা ঘুরতে যেতে ভীষণ ভালোবাসে তার সাথে ফটোগ্রাফি। তাই যোগ্য জামাই হতে গেলে ঘুরতে তো যেতেই হবে সাথে ভালো ফটোগ্রাফির জন্য DSLR-ও বাঞ্ছনীয়।
ঐতিহ্যবাহী তথাপি আধুনিক, সংস্কৃতিপূর্ণ তথাপি উদার মানসিকতার পরিবার
উপরের কথাগুলির মানে বুঝতে আপনার হয়তো অসুবিধা হচ্ছে। এই ধরূণ আপনি সকালে উঠে গায়ত্রী মন্ত্র পাঠ করেন আবার রাত হলে ডিস্কে যান অর্থাৎ আপনি ঐতিহ্যের সাথে আধুনিক। আর সকালে উঠে কাজে যাওয়ার আগে বাবাকে প্রণাম করে যান আবার সন্ধ্যেবেলা টিভি দেখতে বসে একসাথে সিগারেট খান। মেয়ের বাবারাই ভালো বুঝবেন তাদের এসবের কি দরকার।
সুপুরুষ
যদিও সবসময় গুরুত্বপূর্ণ নয় তবুও আপনাকে যেমনই দেখতে হোক না কেন চলে যাবে (শুধুমাত্র আপনার আইআইটি সার্টিফিকেট আর মাইনের স্লিপটা দেখালেই চলবে)। কার্তিক ঠাকুরের মত সুদর্শন হলে আপনার পাত্রী পেতে ততটা অসুবিধা হওয়ার কথা নয় তবে কার্তিক ঠাকুরের মত দেখতে ছেলেরা কেনই বা বাড়ির মতে দেখাশোনা করে বিয়ে করে সেটাই বুঝতে পারি না। হয়তো বা বাবা-মার চাপে পড়েই করতে হয় তার গার্লফ্রেন্ড তথাকথিত ‘বাজে মেয়ে’কে ছেড়ে।
সরকারি চাকুরে
এটি হচ্ছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মেয়ের বাবারা আজকাল হন্যে হয়ে মেয়ের জন্য সরকারি চাকুরে স্বামী খুঁজতে শুরু করেছেন। সে যেরকই মাইনে হোক না কেন সরকারি ছাপ থাকলেই হল। দরকার পড়লে নির্দিদ্ধায় অন্য কাস্টে বিয়ে দিতেও রাজি থাকেন অনেকে। তাই যারা সরকারি চাকরির চেষ্টা করছেন তারা আরও মন দিয়ে করে যান আর যারা সরকারি চাকরি করা সত্ত্বেও বিয়ের জন্য মেয়ে পাচ্ছেন না তারা অপেক্ষা করুন মেয়ের বাবা আপনার বাড়ির কলিং বেল বাজালো বলে।
উপরের নিবন্ধটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। নিজেদের যেকোনো মতামত কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।
Post a Comment