ঋতুস্রাব চলাকালীন কেন নারীদের মন্দিরে প্রবেশ করতে নেই ?
Odd বাংলা ডেস্ক: মহিলারা ঋতুস্রাবকে বরদান এবং অভিশাপ দুটিই মনে করেন। প্রতি মাসেই মহিলাদের ঋতুস্রাব বা পিরিয়ডের সম্মুখীন হতে হয়। সবচেয়ে বিরক্তিকর বিষয় এটি প্রতি মাসে হয় এবং প্রায় এক সপ্তাহ পর্যন্ত চলে। এর জন্য যেমন পৃথিবীতে নতুন প্রান আসে তেমনই ঋতুস্রাব চলাকালীন সময়কালে মেয়েদের অনেক কষ্ট, ব্যাথা, যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়। মনে হয় পৃথিবী কেবল তাদেরকেই শাস্তি দিচ্ছে।
মেয়েদের কখনো কখনো মনে হয় নারী জীবন অভিশাপের জীবন। যদি ছেলে হয়ে জন্ম হতো তাহলে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতো। নারীদের মনে এই প্রশ্নও আসে যে তাদেরই কেন এই যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়। আর কেনই বা তাদের এই সময় মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ ? এই প্রশ্নের উত্তর পৌরাণিক কাহিনীতে নিহিত আছে। আসুন তাহলে কারণ জানি …
ইন্দ্র ব্রাহ্মন হত্যা করেছিলেন: বৃহস্পতি হলেন দেবতাদের গুরু। এক সময় বৃহস্পতি ইন্দ্রের উপর রুষ্ট হয়েছিলেন। যার ফলে অসুরেরা দেবতাদের ওপর আক্রমণ করে। তখন তিনি ভয়ে ভীত হয়ে সিংহাসন ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন এবং আশ্রয় নিয়েছিলেন ব্রহ্মদেবের কাছে।
ব্রহ্মদেব তাকে বলেছিলেন তিনি যদি কোন ব্রহ্মজ্ঞানীর সেবা করেন আর সেই ব্যাক্তি যদি তার সেবায় প্রসন্ন হন তাহলে ইন্দ্র তার সিংহাসন ফিরে পাবেন। ব্রহ্মদেবের নির্দেশ মতো ইন্দ্র এক ব্রহ্মজ্ঞানীর সেবা করা শুরু করেন। তাকে নানা রকম উপহার দেন।
সেই ব্রহ্মজ্ঞানীর মা ছিলেন এক অসুরের স্ত্রী। তাই স্বাভাবিক ভাবেই তার মনে অসুরদের জন্য এক বিশেষ স্থান ছিল। তিনি নিয়মিত অসুরের উপাসনা করতেন। কিন্তু ইন্দ্র এই সত্য জানতেন না।
যখন তিনি জানতে পারেন যে তিনি এতদিন যার সেবা করেছেন সে অসুরদের উপাসক, আর দেবতাদের প্রাপ্ত বিভিন্ন উপহার সামগ্রী তাকে তিনি দিয়েছেন, তার সব সেবা বিফলে গেছে তখন তিনি ভয়ানক ক্রুদ্ধ হয়ে সেই ব্রহ্মজ্ঞানীকে হত্যা করেন।
গুরুহত্যা যেহেতু মহাপাপ সেই পাপ লাগে ইন্দ্রের ওপর। সেই পাপ এক ভয়ানক দৈত্যের আকার নিয়ে ইন্দ্রকে তাড়া করে। ইন্দ্র ভয়ে নিজের প্রান রক্ষা করতে আশ্রয় নেয় একটি ফুলের মধ্যে। আর সেই পাপ থেকে বাঁচার জন্য বিষ্ণুদেবের উপাসনা শুরু করেন।
ইন্দ্রের দেওয়া অভিশাপ: বিষ্ণু তার উপাসনায় সন্তুষ্ট হয় আর পাপ থেকে মুক্তির উপার বলে। বিষ্ণু বলেন তার এই পাপের ভার কাউকে ভাগ করে দিতে হবে। ইন্দ্র তার পাপের ভার দেওয়ার জন্য গাছ, জল, মাটি এবং নারীকে বেছে নেন।
তিনি তাদের অভিশাপের সঙ্গে বরদানও করেন। গাছ তার পাপের সাথে এই বর পেয়েছিল যে সে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে। জল দিয়ে ধুলে সব নোংরা, গন্ধ চলে যাবে। ভূমির ওপর আসা সব ক্ষত সেরে যাবে।
আর মহিলাদের অভিশাপ দিয়েছিলেন তাদের ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে, তার সঙ্গে বর দেন যে মহিলা পুরুষের থেকে বেশি কাম, কাজ ও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারবে। সে থেকেই মেয়েদের ঋতুস্রাব শুরু হয়।
ঋতুস্রাব চলাকালীন মেয়েদের মন্দিরে প্রবেশ করতে নেই। কথিত আছে এতে গো হত্যার পাপ লাগে। তাই মেয়েদের এই বিশেষ কদিন মন্দিরে প্রবেশ করতে নেই।
Post a Comment