৫০তম বর্ষে বিশ্ব বসুন্ধরা দিবস, সেই ইতিহাস স্মরণ করে পৃথিবী সুস্থ হয়ে ওঠার কামনায় বিশ্ববাসী
Odd বাংলা ডেস্ক: আজ ২২ এপ্রিল, বিশ্ব বসুন্ধরা দিবস অর্থাৎ 'ওয়ার্ল্ড আর্থ ডে'। সারা পৃথিবীকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখতে এবং ধরিত্রীকে প্রাণীর বাসযোগ্য রাখতে পালিত হয় আজকের দিন। আর এই উপলক্ষ্যে সারা বিশ্বে বিভিন্নভাবে পালিত হয়ে থাকে এই দিন। এবছর ৫০তম বর্ষে পদার্পণ করল বিশ্ব ধরিত্রী দিবস।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে এতদিন বিভিন্ন আন্দোলন হচ্ছিল সারা বিশ্বজুড়ে। জলবায়ু অ্যাক্টিভিস্ট গ্রেটা থুনবার্গ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে নজর কাড়তে বিভিন্ন কর্মসূচীও পালন করেছিলেন। কিন্তু তার মধ্যে সারা বিশ্বকে গ্রাস করে ফলেছে এক মারণ ভাইরাস কোভিড-১৯। এই ভাইরাসকে খোঁজা অনেকটা খড়ের গাদায় সূচ খোঁজার মতো। অদৃশ্য এই শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আজ অসফল বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশ। চারিদিকের পরিস্থিতি যখন এত সঙ্কটময় তখন বিশ্ব ধরিত্রী দিবস পালন করাটা আবশ্যিক।
আজ করোনা পরিস্থিততে একদিকে যেমন লম্বা হচ্ছে মানুষের মৃত্যুমিছিল, তেমনই অন্যদিকে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচছে ধরিত্রী মা। এখনই সময় হয়েছে মানুষের সচেতন হওয়ার, এরপরেও যদি মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে যথেচ্ছাচার বন্ধ না করে তাহলে আর রক্ষা নেই। এই ধরিত্রীকে বসবাসযোগ্য করে তুলতে প্রয়োজন কার্বন নিঃসরণ কমানো, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করা, যা সম্পর্কে মানুষকে আরও বেশি করে সচেতন হতে হবে।
৬০-এর দশকে পরিবেশ দূষণ ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল। অনিয়ন্ত্রিত শিল্পায়নের ফলে মাটি, জল, বায়ু সবেতেই দূষণ ছড়িয়ে পড়েছিল মারাত্মকভাবে। আর সেইসময়ে দূষণ প্রতিকারের জন্য কোন আইন ছিল না! এমন এক সময় ১৯৬৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে তেল উপচে পড়ে বিশাল দুর্যোগ ঘটে। এই ঘটনাটি দেখে উইসকন্সিনের সিনেটর গেলর্ড নেলসন অত্যন্ত বিচলিত হন।
এরপর ১৯৭০ সালে প্রথম পালিত হয় বিশ্ব বসুন্ধরা দিবস। বর্তমানে আর্থ ডে নেটওয়ার্ক-এর তরফে বিশ্বব্যাপী এই দিনটি পালিত হয়। ১৯০টিরও বেশি দেশে প্রতি বছর পালিত হয় এই দিনটি। ১৯৭০ সালে আজকের দিনে মার্কিন সেনেটর গেলর্ড নেলসন ধরিত্রী দিবসের প্রচলন করেন। পৃথিবীর অনেক দেশেই সরকারিভাবে এই দিনটি পালন করা হয়। এরপর ১৯৯০ সালে আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয় এই দিন এবং ১৪১টি দেশ এর আয়োজন করেছিল।
নতুন শতাব্দীর শুরুতে ২০০০ সালে ধরিত্রী দিবসে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য ব্যপক প্রচার চালানো হয়। সে বছর প্রায় ৫০০০ পরিবেশবাদী সংগঠন ১৮৪ টি দেশে কাজ করে ধরিত্রী দিবসকে সফল করার জন্য। ২০০৯ সালে কোপেনহেগেনে বিশ্বের রাষ্ট্রনেতারা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে একটি সার্বজনীন চুক্তি সই করতে ব্যর্থ হন। ফলে, পৃথিবীর ইতিহাসে ২০১০ সালের ধরিত্রী দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
২০২০ সালের বিশ্ব ধরিত্রী দিবসের থিম হল জলবায়ু কর্মকাণ্ড। যা নিঃসন্দেহে খুবই প্রাসঙ্গিক। এই পথে রয়েছে একাধিক চ্যালেঞ্জ, কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে একাধিক পথও, তবে এই সময়ের নিরিখে এই ধরিত্রী দিবসের থিমের বিষয়বস্তুটি অত্যন্ত চাপের বলেই মনে করা হচ্ছে।
Post a Comment