সাহায্য চেয়ে নয়, সাহায্য দান করবেন বলে পুলিশ ডাকলেন অশিতীপর বৃদ্ধ, দিলেন ১০ হাজারের চেক


Odd বাংলা ডেস্ক: বাড়ির পাশে নিয়মিত টহল দিচ্ছে পুলিশের গাড়ি। একদিন আচমকাই জানলা দিয়ে পুলিশকে ডাকলেন ওই বৃদ্ধ। স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ ভেবেছিলেন বৃদ্ধের হয়তো সাহায্যের প্রয়োজন। সেইমতো তড়িঘড়ি তাঁর কাছে গিয়েছিলেন পুলিশকর্মীরা। তারপর যা ঘটল তাতে কার্যত হতবাক পুলিশকর্মীরাও। সাহায্য চেয়ে নয়, বরং সাহায্য করার জন্যই পুলিসকে ডেকেছিলেন তিনি। বাড়িতে যাওয়ার পর অশিতীপর বৃদ্ধ পুলিশের হাতে তুলে দিলেন ১০ হাজার টাকার চেক। 

সুভাষচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় নামে ৮২ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধের উদারতার কাহিনি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল। সূত্রের খবর ভদ্রলোক পেশায় একজন প্রাক্তন অধ্যাপক। দমদম এয়ারপোর্টের কাছেই বাড়ি তাঁর। জীবনধারন বলতে পেনশনের টাকা, সেখান থেকে নিজের জীবনযাপনের জন্য অর্থ বাদ দিলে বাকি টাকা জমে ব্যাঙ্কেই। নিজের সেই সঞ্চিত অর্থ থেকেই দশ হাজার টাকা করোনা ত্রাণে দান করলেন বৃদ্ধ। 

বিধানগর কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তা জানান, তাঁরা প্রথমে ভেবেছিলেন বৃদ্ধ সাহায্য চাইছেন, কিন্তু তাঁর কাছে দেখেই প্রথমে হতবাক হন পুলিশের কর্মকর্তারা। প্রথমে ভদ্রলোক তাঁদের জানান তাঁর এই মুহূর্তে কোনও জিনিসের প্রয়োজন নেই। তিনি রাজ্যের করোনা তহবিলে কিছু দান করতে চান। এমনকি তিনি অনলাইনে টাকা লেনদেন করতে পারেন না বলেই এতদিন অর্থ সাহায্য করতে পারেননি, আর সেই জন্য দুঃখ প্রকাশও করেন বৃদ্ধ। এরপরই নিজের কাঁপা কাঁপা হাতে ১০ টাকার চেক লিখে তুলে দেন পুলিশের হাতে। 


পাশাপাশি এই কঠিন মহামারির পরিস্থিতিতে তিনি নিজে কিছু করতে পারছিলেন না বলেই হতাশ ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁর পক্ষে বাইরে যাওয়াও সম্ভব ছিল না। পাশাপাশি তিনি এও জানান যে, তিনি চেয়েছিলেন আরও সাহায্য করতে, কিন্তু নিজের প্রয়োজনের খাবার আর ওষুধ খরচের জন্যই চলে যায় অধিকাংশ অর্থ। কিন্তু সর্বপরি এই কঠিন পরিস্থিতিতে একজন শুভবুদ্ধিসম্পন্ন নাগরিকের যা কর্তব্য তা যে এই বয়সে এসেও তাঁর খেয়াল রয়েছে এটা ভেবেই তাঁর দানের কাছে যেন কোটি টাকার দান মলিন হয়ে গিয়েছে। 
Blogger দ্বারা পরিচালিত.