যে গ্রামের সব মানুষ অন্ধ, এমনকি পশুরাও!
Odd বাংলা ডেস্ক: বিচিত্র একটি গ্রাম টিলটেপেক, মধ্য আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে অবস্থিত এটি। গ্রামটির চারিপাশ ঘন অরণ্যে ঘেরা।
তবে খবরের শিরোনামে গ্রামটির কথা উঠে এসেছে এর প্রাকৃতিক পরিবেশ বিষয়টি নয়।
একটি সংবাদমাধ্যম বলছে, টিলটেপেক গ্রামটির সব মানুষ ও পশুই অন্ধ! তিন শতাধিক জাপোটেক নামের জাতির মানুষ বাস এই গ্রামে। জানা গেছে, তাদের প্রত্যেকেই অন্ধ।
শুধু মানুষই নয়, গ্রামের গৃহপালিত পশুগুলোও দৃষ্টিশক্তিহীন।
বিষয়টি এমন নয় যে, গ্রামের অধিবাসীরা সবাই জন্মগত অন্ধ।
এই গ্রামে জন্ম নেয়া নবজাতকেরা আর পাঁচটা নবজাতকের মতোই সুস্থ-সবল অবস্থাতেই জন্মায়। কিন্তু এক সপ্তাহ পরই দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে তারা।
বিষয়টি খবরে আসার পর বেশ ভাবিয়েছে মেক্সিকো প্রশাসন ও বিজ্ঞানীদের। এর কারণ অনুসন্ধানে নেমেছেন তারা।
এ বিষয়ে গ্রামবাসীর দাবি, লাবজুয়েলা নামে একটি গাছই তাদের এই অন্ধত্বের পেছনে দায়ী। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, অভিশপ্ত ওই লাবজুয়েলা গাছই তাদের দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেয়।
লাবজুয়েলা গাছটি নিয়ে ইতিমধ্যে গবেষণা করেছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু গ্রামবাসীদের এমন অভিযোগের সত্যতা মেলেনি বলে জানিয়েছেন তারা।
ওই গাছের সঙ্গে তাদের দৃষ্টিহীনতার কোনো সম্পর্কই নেই। তাহলে কেন এভাবে দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছেন জাপোটেকরা?
অনুসন্ধানে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে বিজ্ঞানীদের সামনে। তারা দেখেন যে ঘন অরণ্য গ্রামটিকে ঘিরে রেখেছে সেখানে বসবাস রয়েছে ‘ব্ল্যাক ফ্লাই’ নামের এক প্রজাতির বিষাক্ত মাছির।
টিলটেপেক গ্রামে মাছিটির অবাধ বিচরণ রয়েছে। এই বিষাক্ত মাছির কামড়ে জীবাণু সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলেই শিশু থেকে বুড়ো এবং পশুরাও ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে।
বিজ্ঞানীদের এমন তথ্যে নড়েচড়ে বসে মেক্সিকো সরকার। অঞ্চলটি মানুষের বসবাসের অযোগ্য জানিয়ে গ্রামবাসীদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার পদক্ষেপ নেয় মেক্সিকো প্রশাসন।
কিন্তু অদ্ভুত কারণে টিলটেপেক গ্রাম ছেড়ে কোথাও যেতে রাজি হচ্ছে না গ্রামবাসীরা।
এক মায়ার জাদুতে অন্ধত্বকেই বরণ করে নিতে রাজি তারা। তাছাড়া মাছির কামড়ে তারা অন্ধ হয়ে যাচ্ছেন বিষয়টিও মেনে নিচ্ছেন না গ্রামবাসীদের অনেকেই।
তবে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নিতে মেক্সিকো সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
Post a Comment