জানেন বাংলা নববর্ষ আসলে এক মুসলমান শাসকের সৃষ্টি, জানুন ইতিহাস



Odd বাংলা ডেস্ক: “প্রতিদিন মানুষ ক্ষুদ্র, দীন, একাকী কিন্তু উৎসবের দিনে মানুষ বৃহৎ, সে সমস্ত মানুষের সঙ্গে একত্র হইয়া বৃহৎ, সেদিন সমস্ত মনুষ্যত্বের শক্তি অনুভব করিয়া মহৎ”- কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই বক্তব্যটি আজও বাঙ্গালীরা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পালন করে আসছে ১ লা বৈশাখ দিনটিকে । আচ্ছা বলুন তো এটা বাংলার কোন সাল ? কয়েকদিন আগেই তো নববর্ষের মিষ্টি খেলাম,ছবি দিলাম! মনে পড়ছে না তো ঠিক? আসলে স্থানীয় উৎসবগুলোর গল্প-ইতিহাস গুলি আমরা কেউই মনে রাখিনা এখন। 

আসুন নতুন বছর ১৪২৬ কে স্বাগত জানিয়ে একটু চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক ১লা বৈশাখের গল্পে! বাংলা পঞ্জিকার প্রথম মাস বৈশাখের ১ তারিখ তথা বঙ্গাব্দের প্রথম দিন বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাংলা নববর্ষ পালিত হয় । কিন্তু নববর্ষের এই দিনটির সূত্রপাত ঘটে আজ থেকে বহু বছর আগে মুঘল সাম্রাজ্যের সময় । সৌর পঞ্জিকা অনুসারে বাংলা বার মাস অনেককাল আগে থেকেই পালিত হতো । এই সৌর পঞ্জিকার শুরু হতো এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় হতে।এখন যেমন নববর্ষ নতুন বছরের সূচনার নিমিত্তে পালিত একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে, এক সময় এমনটি ছিল না। তখন নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ আর্তব উৎসব তথা ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে পালিত হত। তখন এর মূল তাৎপর্য ছিল কৃষিকাজ, কারণ প্রাযুক্তিক প্রয়োগের যুগ শুরু না হওয়া পর্যন্ত কৃষকদের ঋতুর উপরই নির্ভর করতে হত। 

 ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করত। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সাথে মিলত না । এতে অসময়ে কৃষকদেরকে খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করতে হত । খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা বজায় রাখার জন্য মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন । তিনি মূলত প্রাচীন বর্ষপঞ্জির পরিবর্তিত রূপ আনার আদেশ দেন । সম্রাটের আদেশ মতে তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজি সৌর সন এবং আরবি হিজরী সনের উপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম পরিবর্তন করেন । ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ই মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয় । প্রথমে এই সনের নাম ছিল ফসলি সন পরে "বঙ্গাব্দ" বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিত হয়।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.