মর্মান্তিক! ফোন বিক্রি করে সন্তানদের জন্য খাবার এনে দিয়ে আত্মঘাতী এক পরিযায়ী শ্রমিক


Odd বাংলা ডেস্ক: সরাসরি করোনায় প্রাণ না হারালেও তাঁর আত্মহত্যার জন্য দায়ি কিন্তু করোনাই। করোনা মোকাবিলায় জারি হওয়া লকডাউনে হরিয়ানায় স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে আটকে পড়েছিলেন মুকেশ মণ্ডল নামে ৩০ বছর বয়সী এক পরিযায়ী শ্রমিক। স্ত্রী-সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার মতো অর্থ তাঁর কাছে ছিল না। আর সেই কারণেই গত সপ্তাহে নিজের স্মার্ট ফোনটি মাত্র আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি। আর তারপর আত্মহত্যার পথই বেছে নেন ওই পরিযায়ী শ্রমিক। 

করোনার কারণে সারা দেশজুড়ে জারি হওয়া লকডাউন পরিস্থিতিতে দৈনিক আয়ের পথ বন্ধ হয়েছে দিনমজুরদের। কিন্তু দিনমজুর মুকেশ লকডাউনের আগেই নিজের কাজ হারান, এবং টুকটাক কিছু কাজ করে অর্থ উপার্জন করছিলেন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে দিনের পর দিন নিজের পরিবারের দায়িত্ব নিতে অসমর্থ হয়ে পড়ছিলেন মুকেশ। এর জন্য একপ্রকার মানসিক অবসাদের শিকার হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেন তিনি। 

নিজের ফোন বিক্রি করে মুকেশ তাঁর সন্তানদের জন্য একটি পাখা কিনেছিলেন যাতে তাঁদের গরমে কোনও কষ্ট না হয়। সেইসঙ্গে কিনেছিলেন কিছু খাদ্যসামগ্রীও। আর বাকি টাকা দিয়ে মিটিয়েছিলেন ধার-বাকি। আর এরপরই নিজের কুঁড়েঘরের ভেতরে থাকা একটি বাঁশের খুটিতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। সূত্রের খবর, সেইসময়ে তাঁর স্ত্রী ঘরে ছিলেন না। 

লকডাউনের জেরে সারা দেশে আটকে পড়া কয়েক লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে মুকেশ অন্যতম যাঁর জীবন লকডাউনের জন্য ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় বর্ধিত লকডাউনের জেরে ভারতের অর্থনীতি তো বটেই, সেইসঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং মানুষের দৈনন্দিন জীবনও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে নিজের বাড়ি থেকে দূরে ভিন রাজ্যে আটকে থাকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর, যাদের কাছে ওষুধপত্র, প্রয়োজনীয় সামগ্রী এবং খাবার কেনারও পয়সাটুকু আজ নেই।  
Blogger দ্বারা পরিচালিত.