গ্রীনজোনে যাচ্ছে এই রাজ্য, চলবে বাস-গাড়ি, খুলবে রেস্তোরাঁ-সেলুন, মিলবে অন্যান্য পরিষেবাও


ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়, Odd বাংলা: সারা দেশের কাছে নজির সৃষ্টি করেছে কেরল। কেবলমাত্র পরিকল্পনা মাফিক চলে এবং কঠোর নিয়মানুবর্তীতার মধ্যে দিয়ে গিয়ে করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে সফল হয়েছে কেরল। কেরল সরকার কোভিড-১৯ মহামারি রুখতে রাজ্যের জেলাগুলিকে চারটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে।

রেড জোনে রয়েছে কাসারগোদ, কান্নুর, কোজিকোড এবং মালাপুরাম। রেড জোনে একটি সম্পূর্ণ লকডাউন থাকবে ৩মে পর্যন্ত। এখানকার দুটি প্রবেশপথ এবং বাহিরপথ খোলা থাকবে যেখান থেকে প্রয়োজনীয় পণ্যাদি আনা-নেওয়া করা যাবে। 

অরেঞ্জ (এ) জোনের মধ্যে রয়েছে পাঠানমথিত, এর্ণাকুলাম এবং কোল্লাম। এখানে লকডাউন কার্যকর হবে আগামী ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত এবং তারপরে আংশিক শিথিলতার অনুমতি দেওয়া হবে।

অরেঞ্জ (বি) জোনটিতে রয়েছে আলাপুজা, ত্রিশুর, পালাক্কাদ, তিরুবনন্তপুরম এবং ওয়ানাড। ২০ এপ্রিল পর্যন্ত একটি লকডাউন কার্যকর হবে এবং তারপরে আংশিক শিথিলতার অনুমতি দেওয়া হবে।

আর গ্রিন জোনে রয়েছে কোট্টায়াম এবং ইদুক্কি। এখানে লকডাউন কার্যকর হবে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত তারপরে একাধিক ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে বলে খবর। তবে গ্রিন জোনে বড় সমাবেশ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম, ধর্মীয়-সামাজিক অনুষ্ঠান, সেলিব্রেশন এবং জেলার বাইরে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না। সরকারী নির্দেশনা অনুসারে ২০ জনেরও বেশি লোকের বিবাহ বা শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে অংশ নেওয়া উচিত হবে না। 

প্রতিটি জোনে যখন লকডাউনটি সরানো হবে, তখন পরিবহন ও ব্যবসা সম্পর্কিত নিয়মাবলীও প্রবিধান কার্যকর থাকবে। যেমন- 

যানবাহন- সোমবার, বুধবার, শুক্রবার: যেসব যানবাহনের নম্বরের শেষে বিজোড় সংখ্যা রয়েছে, সেইসব যানবাহন চলার ক্ষেত্রে অনুমতী দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার, বৃহস্পতিবার, শনিবার: এযেসব যানবাহনের নম্বরের শেষে জোড় সংখ্যা রয়েছে, সেইসব যানবাহন চলার ক্ষেত্রে অনুমতী দেওয়া হয়েছে।

তবে জরুরী পরিষেবাগুলির জন্য যানবাহনের এই বিধিগুলি  প্রযোজ্য নয়। মহিলাদের একা ভ্রমণ করার ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম নেই। চার চাকার গাড়িতে চালক ছাড়া ২ জন যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। ২ চাকার গাড়িতে কেবল একজন যাতায়াত করতে পারবে। 

বাস পরিষেবা- চূড়ান্ত সতর্কতা বজায় রেখে স্বল্প-দূরত্বে বাস পরিষেবাগুলি অনুমোদিত হবে। বাসগুলি জেলার মধ্যে ৫০-৬০ কিলোমিটার দূরত্বে যাতায়াত করতে পারে। যাত্রীদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। বাসে ওঠার আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।

বাসের মধ্যে কোনও যাত্রীকে দাঁড়াতে কিংবা হাঁটাচলা করতে দেওয়া হবে না। তিন-আসনের সারিগুলিতে, মাঝের আসনটি খালি রেখে দিতে হবে, আর দুটি আসনের সারিতে কেবল একজনকে বসারঅনুমতি দেওয়া হবে।

সেলুন- সেলুনগুলি শনিবার এবং রবিবার করে খোলা হবে।

হোটেল- হোটেল/রেস্তোঁরাগুলিতে ডাই-ইন পরিষেবা সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চালু থাকবে। টেক-অফ কাউন্টারগুলি রাত ৮টা পর্যন্ত চলতে পারে।

সরকারি দফতর- সরকারি দফতরগুলি শনি ও রবিবার বাদে সমস্ত দিন চলবে। সমবায় সমিতিগুলিতে কেবল ৩৩ শতাংশ কর্মচারী এবং পঞ্চায়েত ও গ্রাম কার্যালয়ে ৩৫ শতাংশ কর্মচারী দিয়ে কাজ চালাতে হবে।

কনস্ট্রাকশন সেক্টর- অভিবাসী শ্রমিকরা নির্মাণ খাতে কাজ করতে পারেন।

চিকিৎসক, নার্স- চিকিৎসক, নার্স, বিজ্ঞানী এবং প্যারামেডিক্যাল কর্মীরা রাজ্যের অভ্যন্তরে এবং বাইরে ভ্রমণ করতে পারেন। অ্যাম্বুলেন্সগুলিও রাজ্যের অভ্যন্তরে এবং বাইরে উভয়ই পরিষেবা পরিচালনা করতে পারে।

খাদ্য ও কুরিয়ার পরিষেবা- ভোজ্যতেল এবং খাদ্য উৎপাদনকারী ইউনিট এবং রাইস মিলগুলি কাজ করতে পারে। মৎস্য ও হ্যাচারিগুলিকেও অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মাছ পরিবহন ও বিক্রয়ও অনুমোদিত। ডাক, কুরিয়ার কেন্দ্রগুলি কাজ করতে পারে।

মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন কৃষিক্ষেত্র, বৃক্ষরোপণ ও স্বাস্থ্য খাতে এবং প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলির জন্য যে শিথিলতা ঘোষণা করেছেন তাও কার্যকর থাকবে।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.