১৪ বছর ধরে বনবাসে, রামকে একটাও মশা কামড়ালো না কেন?


Odd বাংলা ডেস্ক: এ এক আজব প্রশ্ন। সত্যিই তো ১৪ বছরের বনবাসে কেন অরণ্য-ঘটিত কোনও সমস্যায় পড়তে হয়নি! মহাকাব্য ‘রামায়ণ’-এ তেমন কোনও ঘটনার উল্লেখ নেই যে, রামচন্দ্র, লক্ষ্মণ ও সীতা অরণ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। হতে পারে প্রাচীন ভারতের কাহিনি, কিন্তু বাঘ-ভালুক না থাক, ডাঁশ ডাঁশ মশা তো তখনও ছিল। কেন তাদের দ্বারা আক্রান্ত হননি শ্রীরামচন্দ্র? মজার ব্যাপার, এর উত্তরও বাল্মীকি রামায়ণে রয়েছে। মহর্ষির কবিত্বশক্তি নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠতে পারেন না। তিনি আদি কবি। তাঁর রচনায় বিশদের কোনও অভাব নেই। অরণ্যবাসের হ্যাপাগুলো তিনি ভাল করেই জানতেন। কারণ, তিনি নিজেও ছিলেন তপোবনবাসী। বাল্মীকি রামায়ণের অযোধ্যাকাণ্ডের পঞ্চবিংশতি সর্গে বনে গমনোদ্যত রামচন্দ্রকে মা কৌশল্যা এমন কিছু আশীর্বাদ করেন, যার মধ্যে কিছু আশিস ছিল ‘বন্ধন’ জাতীয়। এমন রিচুয়াল আজও ভারতীয় সমাজে অবিরল। ক্ষতিকারক শক্তি থেকে সন্তানকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে মা কিছু বন্ধন দেন। তেমন কাজই করেছিলেন মাতা কৌশল্যা।


অযোধ্যাকাণ্ডের পঞ্চবিংশতি সর্গের সপ্তদশতম শ্লোকে কৌশল্যা রামচন্দ্রকে এই বলে আশীর্বাদ করেন যে— ‘‘বানর, বৃশ্চিক, অরণ্যবাসী মশা ও মাছি, সাপ, পোকা-মাকড় ইত্যাদি আমার রামের কোনও ক্ষতি করতে পারবে না।’’ অষ্টাদশতম শ্লোকে মা কৌশল্যা এই বলে আশিস জানান— ‘‘বৃহৎ হস্তী, সিংহ, বাঘ, ভালুক ইত্যাদি নিষ্ঠুর জীব, যাদের তীক্ষ্ণ নখরাদি বিদ্যমান, যারা নরমাংস ভক্ষণ করে, তারাও আমার রামচন্দ্রের কোনও ক্ষতি করতে পারবে না।’’ রামচন্দ্র অবতার হতে পারেন। কিন্তু এই সমস্ত বিপদের হাত তেকে তাঁকে রক্ষা করেছিল এক আকুল মায়ের হৃয়। এখানেই জিতে যায় বাল্মীকির কবিত্ব। এই আন্তরিক চিত্রায়নের কারণেই ‘রামায়ণ’ অমর।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.