বৈদিক শাস্ত্রে বর্ণিত রয়েছে পৃথিবীর ধ্বংসের তারিখ? জেনে নিন


Odd বাংলা ডেস্ক: বৈদিক সময়-ভাবনা অনুসারে কাল চক্রাকারে আবর্তিত হয়। বৈদিক শাস্ত্র কালকে চারটি যুগে ভাগ করেছে- সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলি। ‘ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ’-সহ আরও কয়েকটি পুরাণ এই চার যুগ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেয়। সেই মতো, কলি যুগের পরে আবার সত্য যুগ ফিরে আসে। 

‘মহাভারত’ থেকে জানা যায়, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ ঘটেছিল দ্বাপর যুগের একেবারে উপান্তে। শ্রীকৃষ্ণের দেহত্যাগের মুহূর্ত থেকেই কলি যুগ শুরু হয় এবং ‘ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ’ অনুসারে ৫০০০ বছর তা চলবে। ‘মহাভারত’ অনুসারে, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের ৩৫ বছর পরে কলি যুগ শুরু হয়। এই ঘটনার আনুমানিক সন ৩১০২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ, যা আর্যভট্টের হিসেব তাঁর ‘সূর্য সংহিতা’-য় উল্লিখিত রয়েছে। তিনি দেখিয়েছেন, বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি— এই পাঁচটি গ্রহ কলি যুগের সূত্রপাতের কালে মেষ রাশির সঙ্গে ০ ডিগ্রি কোণে অবস্থান করছিল।

সেই হিসাব অনুসারে কলিযুগ শুরুর দিনটি হল— ৩১০২ খ্রিস্টপূর্বাব্দের ১৭ বা ১৮ই ফেব্রুয়ারি। আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দেখান, আর্যভট্টের এই হিসাবে কিছু ভুল ছিল। ৩১০২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মেষ রাশি ও পাঁচ গ্রহের অবস্থান তাঁর বর্ণনা মতো ছিল না। কিন্তু আর্যভট্টকে তাঁরা খানিকটা ভুল ব্যাখ্যা করেন বলেই মনে করেন ভারতীয় জ্যোতির্বিদরা। আর্যভট্ট তাঁর হিসেবে উল্লিখিত তারিখে এক ‘স্বর্ণযুগ’-এর অবসানের কথা বলেছিলেন। কিন্তু এই তারিখই যে কলির আরম্ভ, তা নিয়ে তাঁর কোনও স্পষ্ট নির্দেশ নেই। 

তাঁর গ্রন্থের এক জায়গায় আর্যভট্ট লিখেছেন, তিনি কলির ৩৬০০তম বর্ষে গ্রন্থটি রচনা করছেন। আনুমানিক ৫০০ খ্রিস্টাব্দে ‘সূর্যসিদ্ধান্ত’ রচিত হয়। সেই হিসেব মোতাবেকও ৩১০২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ সালটি ফিরে আসে। মনে করা হয়। আর্যভট্ট ওই সালটি অন্য কোনও সূত্র থেকে পেয়েছিলেন, যার উল্লেখ তিনি করেননি।

মন দিয়ে পড়ুন এই অংশটি
যুগচক্র সংক্রান্ত বিবিধ জটিল হিসেব পার হলে এটা বোঝা যায়, প্রতিটি যুগচক্রে ১২০০০ বছর থাকে। তাহলে এক একটি যুগ ৩০০০ বছর স্থায়ী হয়। সেই হিসেব মানলে, ১২৬৭৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে শুরু হয়েছিল সত্য যুগ। সেই সঙ্গে ‘মহাভারত’-এর হিসাবকে মেলালে কলিযুগের অন্ত হিসেবে পাওয়া যায় ২০২৫ খ্রিস্টাব্দকে। অর্থাৎ, সেই সময় আসতে আর কম-বেশি ৫ বছর দেরি রয়েছে।

সূত্র: ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ
       মহাভারত
       সূর্য সংহিতা
Blogger দ্বারা পরিচালিত.