জানেন, কেন রমজান মাসেই রোজা রাখার নিয়ম রয়েছে?
Odd বাংলা ডেস্ক: শুরু হয়ে গিয়েছে রমজান মাস। আপনাদের জন্য রইল রমজান সম্পর্কে কিছু তথ্য। প্রথমেই বলে রাখি, মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের চন্দ্রবর্ষের নবম মাস হল রমজান। প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মুসলিম ব্যক্তি এই সময় রোজা রাখেন। রমজান মাসের প্রতিটি দিন প্রাপ্ত বয়স্করা সূর্যদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত গোটা সময়টা উপবাস করে কাটান। সূর্যদয়ের আগেই তাঁরা সারা দিনের মতো খাওয়া-দাওয়া সেরে নেন। যাকে বলা হয় শেহরি এবং সূর্যাস্তের পর আবার খাদ্য গ্রহণ করেন, যাকে বলে ইফতার।
তবে রমজান যেহেতু গ্রীষ্মকালে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য শিশুদের রোজা পালন থেকে বিরত রাখা হয়। পাশাপাশি বারো বছরের কম বয়সী মেয়ে এবং পনেরো বছরের কম বয়সী ছেলেদের উপবাস রাখতে দেওয়া হয় না। সেইসঙ্গে যাঁরা সন্তানসম্ভবা, অসুস্থ, ডায়াবেটিক রোগী এবং ঋতুমতী নারী তাঁদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কিছুটা হলেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষও কেউ যদি রোজা রাখতে না পারেন, তাহলে কোনও গরীব, অসহায়, ক্ষুধার্ত মানুষকে পেট ভরে খাওয়াল সকল পাপ খন্ডন হয়। এই সময় প্রতিটি মসজিদগুলি থেকে দরিদ্র মানুষকে ইফতার বিলানো হয়ে থাকে।
ইফতার উপলক্ষ্যে রসনাতৃপ্তের জন্য বিভিন্ন স্পেশাল, সুস্বাদু খাবার-দাবার রান্না করা হয়ে থাকে। ইফতারের খাওয়া-দাওয়াটা সকলে পরিবার, পরিজন, আত্মীয় –স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে খেয়ে থাকেন।তবে এই ইফতারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দেশে নানারকমের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। এক একজন এক একরকমের খাবার দিয়ে ইফতার পালন করেন। অনেক দেশেই ইফতার উপলক্ষ্যে পার্টির আয়োজন করা হয়ে থাকে। পাশাপাশি এই ইফতারেই আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত দিয়ে খাওয়ানো হয়। এছাড়া সব দেশেই মুসলিম সমাজে রমজানে গরীব মানুষকে সাহায্য করার রীতি প্রতলিত রয়েছে।
এই রমজানে ধনী মুসলিমরা দরিদ্রদের কিছু দানসামগ্রী দিয়ে থাকেন, যা জাকাত নামে পরিচিত। প্রতিটি সঙ্গতিপূর্ণ মুসলিম ব্যক্তির অর্থ ও সম্পদের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বা পণ্য জাকাত হিসেবে দিতে হয়।
জানেন কী রমজান মাসেই কেন রোজা অনুষ্ঠিত হয়?
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম হল রোজা। পবিত্র কোরান ধর্মগ্রন্থে প্রত্যেকটি শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের জন্য রোজা রাখার নিয়ম রয়েছে। আর সেই কারণেই আল্লাহের সান্নিধ্য লাভের আশায় রোজা রাখেন মুসলিমরা। তবে রোজা যে কেবল ধর্ম পালনের মাধ্যম তা-ই নয়। রোজার মুসলিমদের আরও বেশি করে সংযমী হতে শেখায়, পাশাপাশি যাবতীয় বদঅভ্যাসের ত্যাগ করা শেখায়। সেইসঙ্গে এই সময়ে খারাপ চিন্তা করা এবং খারাপ কথা বলাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে কোরানে। ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা এই সময় কাউকে মিথ্যা কথাও বলেন না। অন্যান্য মাসের চেয়ে রমজান মাসকে পবিত্র বলে আখ্যা দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ। রমজান মাসে দিনের বেলা মুসলিমরা কেবল খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকে এমনটা নয়। পাশাপাশি ধূমপান করা থেকেও বিরত থাকেন এবং যৌন সঙ্গমও করেন না। সকল প্রকার কুকর্ম, আবেগ এবং রাগ দমন করে এই সময়টা শুদ্ধ ও পবিত্র শরীর এবং মনে সকল মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা তাঁদের যাবতীয়, পাপ, অন্যায় এবং কর্মফল মুছে ফেলার জন্য আল্লাহের কাছে আবেদন জানান।
Post a Comment